দেশে কোনো বিচার বহিভূর্ত হত্যাকান্ড ঘটেনি। র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে ‘বিচারবহিভর্‚ত হত্যায়’ সম্পৃক্ততার যে অভিযোগ উঠেছে সেটি সঠিক নয়। এ মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেছেন, এ ধরণের অভিযোগ কল্পনাপ্রসূত।
গতকাল রোববার বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে বিচারকদের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, যারা আইনের শাসনে বিশ্বাস করে, যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, তাদের একটা কর্তব্য থাকে। সেটা হচ্ছে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তার বক্তব্য শোনা। আমার কাছে যতটুকু তথ্য আছে, যাদের বিরুদ্ধে এই নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে, তাদের কথা শোনা হয়েছে বলে আমার জানা নেই। আমি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, যেসব দোষে র্যাব বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে দোষী করা হয়েছে তা কিন্তু ঠিক নয় এবং কল্পনাপ্রসূত। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে গত ১০ ডিসেম্বর র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এবং সংস্থাটির সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দেয়। তাদের বিরুদ্ধে ‘গুরুতর মানবাধিকার লংঘনমূলক কাজে জড়িত থাকার’ অভিযোগ আনা হয়। এ নিষেধাজ্ঞার ফলে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যেতে পারবেন না। তারা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। একই সঙ্গে এই সাত কর্মকর্তার বিদেশে সম্পদ থাকলে সেগুলো বাজেয়াপ্ত হতে পারে।
বুদ্ধিজীবী হত্যাকারী পলাতকদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, দু’দিন আগে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয়েছে। সেখানে আমি দুজনকে (পালিয়ে যুক্তরাজ্যে অবস্থান নেয়া) দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য দাবি করেছি। তিনি (হাইকমিশনার) আমাকে বলেছেন, আমরা যেন ফর্ম্যালি (আনুষ্ঠানিক) এই দাবি করি। আমি তাদের ফিরিয়ে দেয়ার জন্য আনুষ্ঠানিক দাবি জানাব।
বিএনপি’র চেয়ারপারর্সন খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার আবেদন করেছেন, সেই আবেদনের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একটু অপেক্ষা করুন, দেখবেন।
এর আগে মামলা জট কমানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে আনিসুল হক বলেন, মানুষ বিচারের জন্য হাহাকার করছে। যখন তারা আদালতে বিচার পাবেন না, তখন কিন্তু বিচারের জন্য রাস্তায় নামবেন। আমরা কেউই এমন অবস্থা চাই না। মন্ত্রী মামলা নিষ্পত্তির হার বাড়াতে দুপুরে একঘণ্টা বিরতি দিয়ে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সময়কে যথাযথ কাজে লাগানোর তাগিদ দেন।
২৬তম বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে ৩০ জন জেলা ও দায়রা জজ এবং মহানগর দায়রা জজ প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব গোলাম সারোয়ার ও প্রশিক্ষণ কোর্সের পরিচালক গোলাম কিবরিয়া।
আইনমন্ত্রী পরে বিকেলে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের অর্জন, উপকৃত সকল জনগণ’ শর্ষিক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আনিসুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধুর উদ্যোগগুলোই ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের মূল প্রেরণা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন