শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

নান্দাইলে দুই ইউপিতে নৌকা নিয়ে ধুম্রজাল

ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৩ ডিসেম্বর, ২০২১, ৬:৩৮ পিএম

ময়মনসিংহের নান্দাইলে চণ্ডীপাশা ও রাজগাতী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনীত নৌকা প্রতীক নিয়ে ধুম্রজালের মধ্যে দুই প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছে রিটার্নিং কর্মকর্তা। এঅবস্থায় বিষয়টি নিয়ে চলছে নানা ধরনের আলোচনা ও সমালোচনা।

জানা যায়, উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের সবকটিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী দিয়েছে। কিন্তু সেই ১১টি ইউপি থেকে দুইটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী দাবি করে চারজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। জমার পর রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় যাচাই-বাছাইয়ের পর অপর দুজনের প্রার্থিতা বাতিল করেছে।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জনা যায়, গত রোববার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। সেই যাচাই বাছাই শেষে অন্য বৈধ অবৈধ প্রার্থীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেন। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও চণ্ডীপাশা ও রাজগাতী দুই ইউনিয়নের বৈধ প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশিত না হওয়ায় নেতা-কর্মীদের মাঝে উত্তেজনা তৈরি হয়। তাদের দাবি অন্যান্য ইউনিয়ন বৈধ অবৈধ ঘোষণা হলেও ওই দুই ইউনিয়ন কেনো হচ্ছে না। এঅবস্থায় রাত নয়টার দিকে বৈধ দুই প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়। ওই দুজন হলেন চণ্ডীপাশা ইউপিতে মো. ইফতেখার হোসেন ও রাজগাতী ইউপিতে আবদুর রউফ। আর যাঁদের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে, তাঁরা হলেন চণ্ডীপাশায় ইউপিতে মো. এমদাদুল হক ভূঁইয়া ও রাজগাতী ইউপিতে মো. সাহাদত হোসেন ওরফে টুটন। দীর্ঘ সময় পর এমন তালিকা প্রকাশ করায় নেতাকর্মীদের মনে সন্দেহ তৈরি হলে শুরু হয় ক্ষোভ প্রকাশ।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, নান্দাইল উপজেলা আওয়ামী লীগ দুই ভাগে বিভক্ত। একটি পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন বর্তমান সাংসদ আনোয়ারুল আবেদীন খান। আরেকটি পক্ষে একই দলের সাবেক সাংসদ মেজর জেনারেল (অব.) আবদুস সালাম। বাদ পড়া দুই প্রার্থী সালাম পক্ষের নেতা। এ পক্ষের লোকজন এ ঘটনার জন্য দলের একটি স্বার্থান্বেষী মহলকে দায়ী করেছেন। আর যাঁদের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা হয়েছে, তাঁরা বর্তমান সাংসদের পক্ষের নেতা।

তবে যে দুই প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে, তাঁদের পক্ষের লোকজনের অভিযোগ, প্রার্থিতা বাতিলের কারণ তাঁদের জানানো হয়নি। এমনকি নির্দিষ্ট সময় বিকেল পাঁচটা পর থেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে তাঁরা এ বিষয়ে কথা বলতে পারেননি।

এমন পরিস্থিতিতে সোমবার দুপুরে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ ফখরুজ্জামানের কাছে দুজনের প্রার্থিতা বাতিলের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যাঁদের মনোনীত করেছে, তাঁদের মনোনয়নপত্রই দলীয় প্রার্থী হিসেবে বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ ঘটনায় বাদ পড়া প্রার্থীরা সংক্ষুব্ধ হলে তাঁরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আপিল করতে পারেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা বলেন, ৪ ডিসেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের সভা থেকে নান্দাইল উপজেলার ১১টি ইউপির চেয়ারম্যান পদের জন্য ১১জনের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে চণ্ডীপাশা ইউপির প্রার্থী হিসেবে নান্দাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান মো. এমদাদুল হক ভূঁইয়া ও রাজগাতী ইউনিয়নের প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ নেতা মো. সাহাদত হোসেনের নাম ঘোষণা করা হয়। তাঁদের মধ্যে সাহাদত হোসেন ৮ ডিসেম্বর ও এমদাদুল হক ভূঁইয়া জামা দেওয়ার শেষ দিন ৯ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ৮ ডিসেম্বর চণ্ডীপাশা ও রাজগাতী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ তাদের প্রার্থী পরিবর্তন করে। চণ্ডীপাশা ইউনিয়নে মো. ইফতেখার হোসেন ও রাজগাতী ইউনিয়নে আবদুর রউফকে প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করে দলটি। প্রার্থী পরিবর্তনের চিঠিতে ৮ ডিসেম্বর দলের সভাপতি শেখ হাসিনা স্বাক্ষর করেন। ওই দুই প্রার্থী এর আগে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতীক চেয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। ফলে দলীয় প্রার্থী আসলে কারা, তা নিয়ে উপজেলার নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ও সমালোচনা হয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন