কয়লাভিক্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের মুন্সীগঞ্জের ৫২২ মেগাওয়াটের প্রকল্প, ঢাকার ২৮২ মেগাওয়াটের প্রকল্প, চট্টগ্রামের ২৮২ মেগাওয়াটের প্রকল্প, মহেশখালীর এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের প্রকল্প, আশুগঞ্জের এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের প্রকল্প, গাইবান্ধার এক হাজার ২০০ মেগাওয়াটের প্রকল্প, সিঙ্গাপুর-বাংলাদেশের ৭০০ মেগাওয়াটের যৌথ প্রকল্প, সিপিজিসিএল-সুমিতমো করপোরেশনের এক হাজার ২০০ মেগাওয়াটের যৌথ প্রকল্প ও বাংলাদেশ-মালয়েশিয়ার এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের যৌথ প্রকল্প বাতিল করা হয়েছে।
পঞ্চায়েত হাবিব
রাজধানী ঢাকার আশপাশে কোনো কয়লাভিক্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নেই। ইট ভাটায় সামান্য কয়লা পোড়ানোয় যে বায়ুদূষণ ঘটে; তাতে ঢাকা মানুষের বসবাসের অনুপযোগী শহরে পরিণত হয়ে গেছে। বিশ্বের বায়ুমান যাচাইবিষয়ক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এয়ার ভিজ্যুয়াল-এর বায়ুমান সূচকে (একিউআই) গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকা শহর ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বায়ুদূষণের দ্বিতীয় অবস্থানে। প্রায়ই এই শহর পরিবেশ ও বায়ুদূষণে প্রথম হয়ে থাকে। ইট ভাটায় সামান্য কয়লা পোড়ানোয় ঢাকার এই অবস্থা হলে কয়লাভিক্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর আশপাশের বাযুদূষণ কোন পর্যায়ে? দেরিতে হলেও সরকার বায়ুদূষণ পরিবেশদূষণ কমাতে কয়লাভিক্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছে। পরিবেশ রক্ষায় ইতোমধ্যেই কয়লাভিক্তিক ১০ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কয়লাভিক্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ থেকে ধীরে ধীরে সরে এসে এলএনজি দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করার দিকে সরকার ঝুঁকছে বলে জানা গেছে।
বিশ্ব্রে বেশিরভাগ দেশে কয়লাভিক্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ থেকে সরে এসেছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে কয়লাভিক্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মানুষের প্রতিরোধের মুখে সরকার কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ থেকে সরে আসে। অতঃপর টার্গেট করে বাংলাদেশে কয়লাভিক্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের। ভারতের কারণেই বাংলাদেশের সুন্দরবনের পাশে রামপালে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলছে। এই কায়লাভিক্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ বন্ধের দাবিতে আন্দোলন করছে তেল গ্যাস ও বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি। কয়েক বছর ধরে তাদের আন্দোলন চলছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কয়লার ছাঁইয়ের মধ্যে বিষাক্ত এবং তেজস্ক্রিয় ভারি পদার্থ আছে, যা মানুষের স্বাস্থ্য, জমি এবং বাস্তুতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। একটি বিষাক্ত ভারি ধাতু যা বায়ুমন্ডল, পানি ও মাটির মধ্য দিয়ে বিভিন্নভাবে চক্রাকারে চলে। সে কারণে প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী জাপান নিজেই কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো পর্যায়ক্রমে বন্ধ করে দিচ্ছে।
জানা গেছে, মানুষের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা রক্ষা, পরিবেশের বিরূপ পরিবর্তন ও গুরুতর ক্ষতি পরিহার, মূল্যবান সম্পদ, প্রাকৃতিক এলাকা এবং বাস্তুতন্ত্রের উপাদানগুলোকে রক্ষায় এবার কয়লার পরিবর্তে এলএনজি দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মহাপরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এলএনজির সংস্থান কীভাবে হবে এবং কোথায় এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। তা এখনো ঠিক করা হয়নি। তবে দীর্ঘমেয়াদি বিদ্যুৎ উৎপাদন পরিকল্পনা (পাওয়ার সিস্টেম মাস্টার প্ল্যান) প্রণয়নে এবার প্রাথমিক জ্বালানির সংস্থানকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, সরকার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সমালোচনা নিয়ে চিন্তিত নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই বলেছিলেন বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় ১০টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিল করেছেন।
জানা গেছে, সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ সরকার গত এক যুগে ১৮টি বড় কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছিল। এগুলোর মধ্যে পরিকল্পনা ও দর প্রক্রিয়ায় থাকা কয়লাভিক্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১০ প্রকল্পে পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৫টি প্রকল্প বাতিল হচ্ছে আর ৫টি গ্যাসে (এলএনজি) রূপান্তর করা হবে। এর পেছনে জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে বাংলাদেশের সংহতির বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ বিভাগের এই প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুমোদন করেছেন। পরে তা সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দিয়েছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। বাতিল হওয়া ১০টি প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে, মুন্সীগঞ্জের ৫২২ মেগাওয়াটের প্রকল্প, ঢাকার ২৮২ মেগাওয়াটের প্রকল্প, চট্টগ্রামের ২৮২ মেগাওয়াটের প্রকল্প, মহেশখালির এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের প্রকল্প, আশুগঞ্জের এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের প্রকল্প, গাইবান্ধার এক হাজার ২০০ মেগাওয়াটের প্রকল্প, সিঙ্গাপুর-বাংলাদেশের ৭০০ মেগাওয়াটের যৌথ প্রকল্প, সিপিজিসিএল-সুমিতমো করপোরেশনের এক হাজার ২০০ মেগাওয়াটের যৌথ প্রকল্প ও বাংলাদেশ-মালয়েশিয়ার এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের যৌথ প্রকল্প।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের কয়লা এখনই তোলা হবে না। আমদানি করা কয়লা দিয়ে প্রয়োজন মেটানো হবে। একই সঙ্গে আবাসিক এলাকায় আর গ্যাস না দিয়ে শুধু শিল্পে সংযোগ দেয়া হবে। পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেইন ইনকিলাবকে বলেন, আমরা কয়লাকে আর বাড়াতে চাইছি না। আগের পরিকল্পনাগুলোতে জ্বালানির পরিকল্পনা ছিল না। আগে তো আমাকে ভাবতে হবে সামনে কী জ্বালানি আমরা ব্যবহার করব। কীভাবে সেই জ্বালানির সংস্থান হবে এবং পাশাপাশি সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা যাবে তাও আমরা এবার ভাবছি। একই কারণে তাই বদলে যেতে পারে বিদ্যুৎ উৎপাদন পরিকল্পনাও।
অন্যদিকে বড় কেন্দ্রগুলো আসতে শুরু করলে ছোট ছোট কেন্দ্রগুলোর বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে হবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে এবার বেশি গুরুত্ব দেয়া হবে। একইসঙ্গে পরিবহনের জ্বালানির ক্ষেত্রে বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ানোর কথা চিন্তা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, একইভাবে গ্যাসের ক্ষেত্রেও আমদানি করা এলএনজি কীভাবে সর্বোচ্চ ব্যবহার করা হবে তা নিশ্চিত করা হবে। পাশাপাশি বিকল্প জ্বালানির কথাও আমরা ভাবছি। যেমন, হাইড্রোজেন বা অন্য কোনো জ্বালানির কথা আমরা ভাবছি।
জানা গেছে, জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) দেশের পাওয়ার সিস্টেম মাস্টার প্ল্যান প্রণয়নে সহায়তা করে। এর আগে ২০১০ এবং ২০১৬ সালে মাস্টার প্ল্যানটিতে বিদ্যুতের চাহিদা এবং চাহিদা পূরণের বিষয়ে বেশি জোর দেয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো জায়গা থেকে প্রাথমিক জ্বালানি আসবে, সেই চিন্তা করা হয়নি। ফলে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে প্রাপ্যতা অনুযায়ী জ্বালানি ব্যবহার করা হয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের নীতি এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার সেল থেকে জানা গেছে, গত ২০১০ এবং ২০১৬ সালে বলা হয়েছিল দেশে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে, তার অর্ধেক আসবে কয়লা থেকে। এ কয়লার মধ্যে দেশের কয়লা ব্যবহার করে চাহিদার অন্তত ২৫ ভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের কারণে দেশীয় কয়লা তোলার বিষয়টি আর আলোর মুখ দেখেনি। সরকারের পক্ষ থেকে কৃষিজমি এবং পরিবেশ নষ্ট করে কয়লা তোলা হবে না বলে জানানো হয়। পরবর্তীতে সরকারের তরফ থেকে মাস্টার প্ল্যান পর্যালোচনা করে জানানো হয় কয়লার পরিবর্তে এলএনজি দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। কিন্তু এই এলএনজির সংস্থান হবে কীভাবে। কোথায় এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো ধারণা দেয়া হয়নি। ফলে কাটাছেঁড়া হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
এখন সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে নতুন যে মাস্টার প্ল্যানটি করা হচ্ছে- সেটি আগামী ২০৫০ সালকে মাথায় রেখে করা হচ্ছে। দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানি সংস্থানকে মাথায় রাখা হচ্ছে। বলা হচ্ছে বিশ্বব্যাপী বিদ্যুৎ উৎপাদনে কার্বন নিগর্মন কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সেই বিষয়টি মাথায় রেখে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে জোর দেয়া হবে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে চার ধরনের জ্বালানি ব্যবহার হবে। যার মধ্যে রয়েছে কয়লাও। দেশীয় উৎসের পাশাপাশি আমদানি করা কয়লাও ব্যবহার হবে।
তবে দেশীয় উৎস হিসেবে একমাত্র বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিকে ব্যবহার করা হবে। বড়পুকুরিয়া খনির কয়লাও ফুরিয়ে এসেছে। সেখানে একটি কেন্দ্র চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলে এখন আমদানি করা কয়লাই ব্যবহার করতে হবে। যদিও সরকার পরিবেশের কথা মাথায় রেখে দেশের নতুন নেয়া কয়লা প্রকল্পগুলো বাতিল করছে।
শুধু যে প্রকল্পগুলোর কাজ চলছে তার বাইরে আর কয়লাচালিত কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে না। বিদ্যুৎ উৎপাদনে তেলের ব্যবহারও কমিয়ে আনার চিন্তা করা হচ্ছে। অত্যধিক উৎপাদন খরচের জন্য তেল নির্ভরতা কমানো হচ্ছে। এর বাইরে প্রাকৃতিক গ্যাসের দেশীয় এবং আমদানি করা এলএনজি ব্যবহার হবে।
নতুন গ্যাস না পাওয়া গেলে ২০৩০-এর পর উল্লেখযোগ্য দেশীয় গ্যাস পাওয়া সম্ভব নয়। সে কারণে আমদানি নির্ভরতার দিকেই ঝুঁকছে দেশ। এরই মধ্যে এলএনজির নতুন সংস্থানের চেষ্টা করছে সরকার। তবে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে। সৌর, বায়ুর পাশাপাশি অ্যামোনিয়া এবং হাইড্রোজেন দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের চিন্তা করা হচ্ছে।
এরই মধ্যে দেশে হাইড্রোজেন দিয়ে গাড়ি চালানোর প্রকল্প হাতে নিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। বিশ্বের ভবিষ্যৎ জ্বালানি হিসেবে হাইড্রোজেনকেই এগিয়ে রাখা হচ্ছে। পানি থেকে হাইড্রোজেন আলাদা করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের গবেষণায় বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং মার্কিন সরকার। ট্রিলিয়ন ডলারের এ গবেষণা সফল হলে জ্বালানি সঙ্কটের সমাধান হওয়ার আশা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে দক্ষিণ করিয়া হাইড্রোজেন দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণ করেছে। যদিও এখনও এটি পরীক্ষামূলক বিষয় হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
জাপান ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে মাতারবাড়ীতে প্রথম ধাপের প্ল্যান্টটি করা হচ্ছে। প্লান্টটিতে প্রায় ৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ের মধ্যে জাপান ২৮ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা দেবে। বাকি খরচ বাংলাদেশ সরকার বহন করবে। অন্য ৭টি প্ল্যান্টের জন্য তহবিলের বিষয়টি এখনো চ‚ড়ান্ত হয়নি। তবে ৮টির প্ল্যান্টের জন্য ৫ হাজার ৫০০ একর জমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ হয়েছে।
সিআরইএর তথ্য মতে, ৮টি প্ল্যান্ট চালু হলে প্রতি বছর ১ হাজার ৬০০ কেজি পারদ এবং ৬ হাজার টন ছাঁই নির্গত হবে। সিআরইএর ২০১৯ সালের ডিসেম্বেরে প্রকাশিত এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, এই নির্গমনের ৪০ শতাংশ জমি এবং স্বাদুপানির বাস্তুতন্ত্রে এবং ৩৫ শতাংশ চট্টগ্রামের বনভ‚মিতে জমা হতে পারে। ছাঁইয়ের মধ্যে বিষাক্ত এবং তেজস্ক্রিয় ভারি পদার্থ আছে, যা মানুষের স্বাস্থ্য, জমি এবং বাস্তুতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। পারদও একটি বিষাক্ত ভারি ধাতু যা বায়ুমন্ডল, পানি ও মাটির মধ্য দিয়ে বিভিন্নভাবে চক্রাকারে চলে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল স¤প্রতি বলেছেন, মাতারবাড়ি প্ল্যান্টটি বিশ্বের ‘সবচেয়ে আধুনিক’ প্ল্যান্ট বলে জনসাধারণকে বুঝানো হয়েছে। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো, এ প্ল্যান্ট থেকে কী পরিমাণ পারদ আর পিএম ২.৫ নির্গত হবে সেটি যাচাই করা হয়নি।
ত্রুটিপূর্ণ ইআইএ সিআরইএর বিশ্লেষণ অনুসারে, মাতারবাড়ি প্ল্যান্টের ইআইএ পারদের দূষণ বিষয়ে কোনো তথ্য নেই। বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বায়ুর গুণগত মান নিরীক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পদ্ধতি অনুসরণ না করে ইআইএ সম্পন্ন করা হয়েছে। ইআইএতে কক্সবাজার এলাকার বায়ুর গুণগত মানের তথ্যও নেই। সিআরইএর প্রধান বিশ্লেষক লরি মিলিভার্তা বলেছেন, ইআইএ পরামর্শক প্রতিষ্ঠান বর্ষা ও শুষ্ক মৌসুমের মোট ২ দিন বায়ুর গুণমান পর্যবেক্ষণ করেছেন, যা একটি এলাকার বায়ুর মান নির্ধারণে পর্যাপ্ত না। তার গবেষণায় আরো বলা হয়, ইআইএ মানব স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক বলে বিবেচিত ২ দশমিক ৫ পার্টিকুলেট ম্যাটার (পিএম) নিরীক্ষণ করেনি। তিনি স্টেট অফ গ্লোবাল এয়ার রিপোর্টের (২০১৯) কথা উল্লেখ করেছেন। যেখানে স্যাটেলাইট ডেটা ব্যবহার করে কক্সবাজার এবং এর আশেপাশে গড়ে প্রতি ঘনমিটার ২ দশমিক ৫ এরমধ্যে ৬৩ মাইক্রোগ্রাম পিএম পাওয়া গেছে। বাতাসে প্রতি ঘনমিটারে ২ দশমিক ৫ এর মধ্যে পিএম এর অনুমোদিত মাত্রা হলো ১৫ মাইক্রোগ্রাম।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন