আর্জেন্টিনার আদালতে আজ বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার সাক্ষ্য নেওয়া হবে। সাক্ষ্য দেবেন যুক্তরাজ্যভিত্তিক রোহিঙ্গাদের সংগঠন ব্রুকের সভাপতি তুন খিন। তিনি গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘আজ বৃহস্পতিবার আর্জেন্টিনার সময় বিকেল ৩টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায়) ফেডারেল আদালতে মামলার কার্যক্রম শুরু হবে। আজ আমি একাই সাক্ষ্য দেব।’
আর্জেন্টিনার বুয়েনস এইরেসের ফেডারেল ক্রিমিনাল কোর্টের দ্বিতীয় চেম্বার আদালত গত ২৬ নভেম্বর ‘সর্বজনীন এখতিয়ার’ নীতির আওতায় মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জেনোসাইডের বিচার শুরুর সিদ্ধান্ত নেন। আজ আদালত এ বিষয়ে সাক্ষ্য নেওয়া শুরু করবেন।
ব্রুকের সভাপতি তুন খিন বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে রোহিঙ্গাদের জন্য এটি এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। আর্জেন্টিনার আদালতে রোহিঙ্গা জেনোসাইডের আনুষ্ঠানিক বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ ঘটনা ন্যায়বিচারের জন্য কেবল আমাদের সংগ্রামকেই যৌক্তিক প্রমাণ করে না, বিশ্বে এখনো ন্যায়বিচার সম্ভব- এই আশাও দেখায়।’
আদালতে কী বলবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা হওয়ার কারণে তাঁর নিজের ও পরিবারের সদস্যদের কী ধরনের নির্যাতন-নিপীড়ন সহ্য করতে হয়েছে তার বিবরণ তিনি তুলে ধরবেন। তিনি বলেন, ‘আমাকে মিয়ানমারের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে দেওয়া হয়নি। আমার অপরাধ, আমি রোহিঙ্গা। বৈষম্য, নির্যাতন-নিপীড়নের কারণে আমার মা-বাবা ১৯৭৮ সালে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে যেতে বাধ্য হন।’
তুন খিন বলেন, শুধু নিজের দুর্ভাগ্যের কথাই নয়, তাঁর চোখের সামনে দেখা নিজের সম্প্রদায়ের গণহত্যার শিকার হওয়ার তথ্যও তিনি আদালতে তুলে ধরবেন। তিনি বলেন, ২০১৭ সালে মিয়ানমার গণহত্যার শিকার রোহিঙ্গাদের ঢল নেমেছিল বাংলাদেশে। তখন তিনি কক্সবাজারে এসে কয়েক সপ্তাহ ছিলেন। সে সময় তাঁর সংগ্রহ করা তথ্য-উপাত্ত, অভিজ্ঞতার কথা তিনি আদালতে বলবেন।
তুন খিন আরো বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে আসা অনেক রোহিঙ্গার শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন অনেকে। এসব কথা আমি জানাব। এ ছাড়া আমরা জাতিসংঘ গঠিত তদন্ত কাঠামো থেকেও তথ্য-উপাত্ত আদালতে উপস্থাপন করব।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন