পৌষ মাস শুরু হলো গতকাল বৃহস্পতিবার। হেমন্ত শেষে পঞ্জিকার পাতায় শীত ঋতুর প্রথম দিনে শীতের দাপট আরো বেড়েছে। দেশের সর্ব-উত্তরের জনপদ পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রার পারদ আরো নেমে গিয়ে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ঠেকেছে। এটি চলতি শীত মৌসুমে এ যাবৎ সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড। শীত আর কুয়াশায় কাবু হয়ে গেছে সমগ্র উত্তরাঞ্চল। উত্তর জনপদ ছাড়াও দেশের প্রত্যন্ত গ্রাম-জনপদে শীতবস্ত্রের অভাবে দরিদ্র মানুষেরা দুঃসহ জীবনযাপন করছে। তারা খড়কুটা পুড়িয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। শহর-নগরে ফুটপাথ থেকে মার্কেট, অভিজাত বিপণি কেন্দ্রগুলোতে শীতের কাপড় কেনাকাটার ধুম পড়ে গেছে।
উত্তরাঞ্চল ছাড়াও সিলেট অঞ্চল, ঢাকা ও ময়মনসিংহসহ মধ্যাঞ্চল, বরিশাল অঞ্চলে শীত ও কুয়াশা বিস্তৃত হচ্ছে। গতকাল শ্রীমঙ্গলে পারদ নেমেছে ১০.৯, ঢাকায়ও ১৬.৭ ডিগ্রি সে.। সমুদ্র তীরবর্তী পর্যটন শহর কক্সবাজারেও পারদ নেমে গেছে ১৭.৬, কুতুবদিয়ায় ১৩ ডিগ্রিতে। তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রিতে নামলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে গণ্য করা হয়। আগামী ৪৮ ঘণ্টা থেকে আসছে সপ্তাহজুড়ে প্রায় সারা দেশে শীতের কামড় আরো বৃদ্ধির পূর্বাভাস দেয়া রয়েছে।
গতকাল দেশের বেশিরভাগ জেলায় মধ্যরাত থেকে ভোর-সকালের তাপমাত্রা ছিল ৯ থেকে ১৪ ডিগ্রির মধ্যে। রাতের তাপমাত্রার সঙ্গে ক্রমেই দিনের পারদ হ্রাস পাচ্ছে। অধিকাংশ জেলায় দিনের তাপমাত্রা ছিল ২৫ থেকে ২৬ ডিগ্রির মধ্যে। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল সীতাকুÐে ২৯ ডিগ্রি সে.। ঢাকার তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ২৭.২ ডিগ্রি সে.। চট্টগ্রামে যথাক্রমে ২৮ এবং ১৬.৪ ডিগ্রি সে.।
আবহাওয়া বিভাগ সূত্র জানায়, উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের একটি বর্ধিতাংশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। সেই সাথে হিমালয় অঞ্চল হয়ে উত্তরের হিমেল হাওয়ার সঙ্গে শীতের তীব্রতা ক্রমেই বাড়ছে। শীতের সাথে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশায় মাঠ-ঘাট, সড়ক, শহরতলী, গ্রাম-জনপদ ঢাকা পড়ছে। কুয়াশার কারণে রাত থেকে সকাল অবধি যানবাহন চলাচল ব্যাহত এবং ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। রাতের বেলায় সড়ক-মহাসড়কে যানবাহনের গতি সীমিত রাখা হচ্ছে।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়াবিদ মো. হাফিজুর রহমান জানান, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। সকালের দিকে দেশের কোথাও কোথাও হালকা কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপবির্তিত থাকতে পারে।
পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় রাতের তাপমাত্রা আরও হ্রাস পেতে পারে। এরপরের ৫ দিনে আবহাওয়ার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের একটি বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। লঘুচাপের বর্ধিতাংশ উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন