শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ছুটিতে সুন্দরবনে পর্যটকদের ভিড়

সুন্দরবন থেকে ডিএম রেজা | প্রকাশের সময় : ১৭ ডিসেম্বর, ২০২১, ৪:৪৮ পিএম

বিজয় দিবসের ছুটির সাথে যোগ হয়েছে সাপ্তাহিক ছুটির দিন। শীতের এই পর্যটন মৌসুমে সুযোগটির পূর্ণ সদ্ব্যাবহার করতে পিছুপা হননি ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকেরা। নগর জীবনের যান্ত্রিকতাকে পিছনে ফেলে পরিবার পরিজন নিয়ে ছুটে এসেছেন সুন্দরবনে। প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। ২৪ ঘন্টায় সুন্দরবনের ৬ টি রুপ, সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত, গাছ গাছালী, জীববৈচিত্র, সাথে রয়েছে টূর অপারেটরদের আতিথেয়তা সব মিলিয়ে চমৎকার একটি সময় পার করছেন পর্যটকেরা।

গত দুদিন ধরে সুন্দরবনের করমজল, দুবলার চর, হিরনপয়েন্ট, কোকিলমুনি, হারবারিয়া-সব স্থানেই দেখা গেছে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়। করমজল পর্যটন স্পটে পর্যটকের সংখ্যা বেশী। করমজলে রয়েছে কৃত্রিম বন্য প্রাণী প্রজনন কেন্দ্র, চিড়িয়াখানা, বনের ভিতরে দীর্ঘ কাঠের ব্রীজ ওয়াকওয়ে, সুউচ্চ ওয়াচ টাওয়ার। এই ওয়াচ টাওয়ার থেকে সুন্দরবনের বড় একটি অংশ এক নজরে দেখা যায়। ওয়াকওয়ে দিয়ে হাঁটার সময় চোখে পড়ে বানর আর হরিণের দল। বানরগুলো নির্ভয়ে চলে আসবে আপনার সামনেই। একই ভাবে হিরনপয়েন্টসহ অন্যান্য পর্যটন স্পটগুলোতেও বন্য প্রাণীর দেখা মেলে। দূর্ভাগ্য অথবা সৌভাগ্যক্রমে ডোরা কাটা রয়েল বেঙ্গল টাইগারের দেখাও মিলতে পারে। নদনদীতে দেখা মেলে ‍কুমির ও ডলফিনের। সুন্দরী গড়ান গেওয়া কেওড়া গাছের ডালে ডালে শীতে হাজার হাজার পাখির মিলন মেলা দেখে পর্যটকেরা মুগ্ধ হচ্ছেন।
সুন্দরবন ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাজহারুল ইসলাম কচি জানান, বিলাসবহুল জাহাজে সুন্দরবনে ২ রাত-৩ দিনের ট্যুর পরিচালনা করা হয়। জাহাজ ভেদে মাথাপিছু ভাড়া ৫ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। প্যাকেজ ট্যুরে কিছুটা অর্থ ছাড় দেয়া হয়। খুলনা অথবা মোংলা থেকে জাহাজে ওঠা যায়। প্রতিটি ট্যুরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বার বি কিউ পার্টির আয়োজন করা হয়। সামুদ্রিক মাছ, গোশত, বিরিয়ানি, খিচুরি, বিভিন্ন ধরণের ভর্তা, শুঁটকি মাছের নানা আইটেম, ফলমূল, চা কফি দিয়ে পর্যটকদের আপ্যায়িত করা হয়। করমজল, হাড়বাড়িয়া, কটকা, কচিখালী, দুবলার চর, কলাগাছিয়া ও হিরণ পয়েন্ট-নীলকমলে রয়েছে মনোরম পর্যটন স্পট। এ সময় সুন্দরবন ভ্রমনের বাড়তি আকর্ষণ দুবলার চরে শুঁটকি পল্লীতে শুঁটকি তৈরীর কাজ দেখার সুযোগ।

ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে এসেছেন ব্যাংক সেখ কর্মকর্তা ইউসুফ আলী। তিনি জানালেন, না এলে জানতেই পারতেন না সুন্দরবন এতো সুন্দর। জোয়ার-ভাটার দৃশ্য খুবই মনোরম। সুন্দরবনে কচ্ছপ, বানর, হরিণ, কুমির ও বিভিন্ন ধরণের পাখি দেখেছেন তিনি। তার স্কুল পড়ুয়া দুই মেয়ে সুন্দরবনে এসে খুবই আনন্দিত। একই রকম কথা জানালেন দিনাজপুর থেকে আসা আহসান হাবিব দম্পতি। তারা জানালেন, দিনাজপুরে রামসাগরসহ বিভিন্ন দেখার দর্শনীয় স্থান রয়েছে। কিন্তু সুন্দরবনের রুপই আলাদা। কৌতুকের ছলে তারা জানালেন, জাহাজে আইড়, লইট্যা, ছুরি, চাঁদা আর সামুদ্রিক নাম না জানা বিভিন্ন সুস্বাদু মাছ খেয়ে তারা ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন।

সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (পশ্চিম) ডঃ আবু নাসের মোহসিন হোসেন জানান, সুন্দরবনে পর্যটকের সংখ্যা বেড়েছে। বিশেষ করে ছুটি থাকলে পর্যটকের সংখ্যা বেড়ে যায়। পর্যটকদের নিরাপত্তা ও সুযোগ সুবিধা দিতে বনবিভাগ সচেষ্ট রয়েছে। এ মুহুর্তে সুন্দরবনে কয়েকটি পর্যটন স্পট উন্নয়নের কাজ চলছে। এগুলো সম্পন্ন হলে আরো পর্যটক বাড়বে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন