শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

মৌসুমের প্রথম শিরোপা জিতল আবাহনী

জাহেদ খোকন | প্রকাশের সময় : ১৮ ডিসেম্বর, ২০২১, ৭:৪৭ পিএম | আপডেট : ১০:২২ পিএম, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২১

বসুন্ধরা কিংসকে কাঁদিয়ে মৌসুমের প্রথম শিরোপা জিতল ঢাকা আবাহনী লিমিটেড। শনিবার সন্ধ্যায় কমলাপুরস্থ বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে ঘরোয়া ফুটবলের মৌসুমসূচক টুর্নামেন্ট স্বাধীনতা কাপের ফাইনালে আবাহনী ৩-০ গোলে হারায় বসুন্ধরাকে। বিজয়ী দলের হয়ে ব্রাজিলের ফরোয়ার্ড ডোরিয়েলটন গোমেজ নাসিমেন্তো দু’টি ও স্থানীয় ফরোয়ার্ড রাকিব হোসেন একটি গোল করেন।
শনিবার দুর্দান্ত আবাহনীর সামনে ১৮ মিনিটেই লন্ডভন্ড কিংসরা। যদিও ম্যাচের শুরু থেকে দু’দল আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ করে খেলেছে। প্রথমার্ধে দু’দলই গোল করার একাধিক সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতায় গোলের দেখা মেলেনি। তবে বিরতির পর আবাহনীর একচেটিয়া আধিপত্যে পুরোটাই বদলে যায় ম্যাচের চিত্র। গোলশূন্য অবস্থায় দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হলে যেন অন্য এক আবাহনীকে দেখেন স্টেডিয়ামের গ্যালারি পরিপূর্ণ দর্শকরা। এই অর্ধে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল উপহার দিয়ে ম্যাচের চিত্র পাল্টে ফেলে স্বাধীনতা কাপের নতুন চ্যাম্পিয়নরা। অসাধারণ দক্ষতায় একে একে তিনটি গোল আদায় করে নিয়ে তারা ঘরে তোলে টুর্নামেন্টের চকচকে সোনালী ট্রফি। কিংসরা এবারের স্বাধীনতা কাপের ফাইনালেই শুধু নাস্তানাবুদ হয়নি, গত তিন মৌসুমের মধ্যে এই প্রথম শিরোপা হাতছাড়া করলো তারা।
ঢাকা আবাহনী লিমিটেড সর্বশেষ ১৯৯০ সালে স্বাধীনতা কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। ২০১৬ সালে টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠলেও চট্টগ্রাম আবাহনীর কাছে হেরেছিল তারা। ৩১ বছর পর ফের এই টুর্নামেন্টের ট্রফি জয়ের হাতছানি ছিল আবাহনীর সামনে। অন্যদিকে বসুন্ধরার জন্য ছিল শিরোপা ধরে রাখার মিশন। এমন সমীকরণ মাথায় নিয়েই নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে মাঠে নামে আবাহনী ও বসুন্ধরা। তাছাড়া লড়াইটি ছিল জাতীয় দলের দুই কোচের। একদিকে আবাহনীর পর্তুগীজ কোচ মারিও লেমোস। অন্যদিকে বসুন্ধরা কিংসের স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজোন। সম্প্রতি দু’জনেই জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন। অস্কার মালদ্বীপে অনুষ্ঠিত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে এবং লেমোস শ্রীলঙ্কার চারজাতি টুর্নামেন্টে কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন। স্বাধীনতা কাপে দুই বিদেশি কোচের লড়াইয়ে অস্কারকে হারালেন লেমোস।
স্বাধীনতা কাপের ফাইনালে ম্যাচের শুরু থেকে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে খেলা চললেও সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আবাহনীর আক্রমণের ধার বাড়তে থাকে। ২৫ মিনিটে আবাহনীর বড় সুযোগ নষ্ট হয়। রাফায়েল অগাস্তো দি সিলভা ফাঁকা পোস্টে বল তুলে দেন আনিসুর রহমান জিকোর হাতে। প্লেসিং করতে চেয়েও পারেননি তিনি। ৫৪ মিনিটে প্রথম গোলের দেখা পায় আবাহনী। এসময় ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রাফায়েল ডিফেন্স চেরা পাস দেন ফরোয়ার্ড রাকিব হোসেনকে। বল পেয়ে বক্সের মধ্যে ঢুকে পড়েন রাকিব। বল ধরতে এসে পড়ে যান বসুন্ধরার গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো। সুযোগ বুঝে শুয়ে পড়ে বাঁ পায়ের প্লেসিং শটে বল জালে ফেলেন রাকিব (১-০)। ম্যাচের ৬১ মিনিটে আবাহনীর কোস্টারিকার ফরোয়ার্ড ড্যানিয়েল কলিন্দ্রেস বল নিয়ে এগিয়ে গেলে বক্সের মধ্যে তাকে পেছন থেকে ফাউল করেন বসুন্ধরার রিমন হোসেন। রেফারি মো. সায়মন হাসান পেনাল্টির বাঁশি বাজালে ৬৩ মিনিটে স্পট কিকে ব্রাজিলের ফরোয়ার্ড ডোরিয়েলটন গোমেজ নাসিমেন্তো গোল করে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন (২-০)। দ্ইু গোলে পিছিয়ে পড়ে খেই হারিয়ে ফেলে বসুন্ধরা কিংস। আক্রমণের ধার বাড়ানোর বদলে উল্টো তৃতীয় গোল হজম করে তারা। ম্যাচের ৭২ মিনিটে বামপ্রান্ত থেকে রাফায়েল কর্নার করলে হেডে ডোরিয়েলটনকে বল দেন মিলাদ শেখ সোলাইমানি। ডোরিয়েলটন অসাধারণ দক্ষতায় বল রিসিভ করে চমৎকার শটে বসুন্ধরার জাল কাঁপান (৩-০)। বাকি সময় আর কোন গোল না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত তিন গোলের জয় পেয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় ঢাকা আবাহনী লিমিটেড। এ ম্যাচেই অবসর নেন জাতীয় দলের সাবেক মিডফিল্ডার ও আবাহনীর হয়ে ৯ শিরোপাজয়ী ফুটবলার প্রাণতোষ কুমার দাস।
ফাইনালে জোড়া গোল করে ম্যাচসেরার পুরস্কার পান চ্যাম্পিয়ন আবাহনীর ডোরিয়েলটন গোমেজ নাসিমেন্তো। মোট চার গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতাও তিনিই। টুর্নামেন্ট সেরা হন চ্যাম্পিয়ন দলের রাফায়েল অগাস্তো। ফেয়ার প্লে ট্রফি পায় সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব। শিরোপা জিতে আবাহনী চ্যাম্পিয়ন ট্রফির সঙ্গে পায় ৫ লাখ টাকা। রানার্সআপ বসুন্ধরা কিংসকে দেয়া হয় ট্রফি ও ৩ লাখ টাকা প্রাইজমানি। প্রধান অতিথি হিসেবে বিজয়ী ও বিজিত দলের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন