রাজশাহীর সীমান্তবর্তী এলাকায় গরু-মহিষের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক। বাচ্চা জন্ম নেবার সাথে সাথেই এ নিবন্ধন করতে হবে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানে কাছে এ নিবন্ধন করতে হয়। এমনকি নিজের কাছেও রাখতে হয় এ সংক্রান্ত তথ্য। বিজিবি সূত্র জানায়, গরু-মহিষের নিবন্ধনের নিয়মটি অনেক পুরনো একটি বিষয়। মূলত সীমান্তবর্তী এলাকায় গরু-মহিষের অবৈধ চোরাচালান রোধে এ পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয়। যা বাধ্যতামূলক। এতে একটি সীমান্তবর্তী এলাকা বা ইউনিয়নের ভেতর পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে গরু-মহিষের হিসাব রাখা যায়।
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার আষাড়িয়াদহ ইউনিয়ন পরিষদের সূত্রে জানা যায়, এ ইউনিয়নে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার বাড়ি আছে। প্রতিটি বাড়িতেই কমপক্ষে দুটি ও গড়ে পাঁচ থেকে সাতটি করে গরু-মহিষ পশু আছে। সে হিসেবে পুরো ইউনিয়নে প্রায় ২২ থেকে ২৩ হাজার গরু-মহিষ আছে। এসব পশুর হিসাব আছে আষাড়িয়াদহ বিজিবির দুটি ক্যাম্পেও। একটি ডিএমসি বিওপি ক্যাম্প ও আরেকটি সাহেব নগর বিওপি ক্যাম্প। সাহেব নগর বিওপি ক্যাম্পের সহকারী ক্যাম্প কমান্ডার জানান, সীমান্তবর্তী এলাকায় গরু-মহিষের চোরাচালান হয় অনেক। এ কারণে গরু-মহিষের সঠিক হিসেব রাখার জন্য রেজিস্ট্রার খাতায় পুরো ইউনিয়নের সংখ্যাটি সংরক্ষণ করা হয়। একটি আমাদের ক্যাম্পে থাকে, আরেকটি থাকে ইউনিয়ন পরিষদে ও আরও একটি খাতা থাকে পশু মালিকের কাছে। কেউ গরু-মহিষ ক্রয় অথবা বিক্রয় করলে এ হিসেব রাখা হয়। এমনকি কারও বাসায় নতুন কোন গরুর জন্ম নিলেও সেটি বিজিবি ক্যাম্প ও ইউনিয়ন পরিষদের রেজিস্ট্রার খাতায় সংযোজন করতে হয়।
তিনি আরও বলেন, কেউ বাইরের গরু-মহিষ কিনে আনলে সেটিও বিজিবি এবং ইউনিয়ন পরিষদে অর্ন্তভুক্ত করা লাগবে। আবার কেউ তার গরু বিক্রি করতে চাইলে সেটিও জানাতে হবে। এ ক্ষেত্রে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একটি ছাড়পত্র দেওয়া হয়। সেটি আমাদের কাছে নিয়ে আসলে আমরা ওই ছাড়পত্রের পরিপ্রেক্ষিতে গরু-মহিষের সংখ্যাটি বাদ দিয়ে দেই। কেনার ক্ষেত্রেও একই ঘটনা।
চরমাঝারদিয়াড় এলাকার বাসিন্দা রাশেদ বলেন, এখানে গরু পালতে হলে বিজিবির কাছে থাকা নিবন্ধন বা রেজিস্ট্রার খাতায় তোলা লাগে। এর জন্য কোনো টাকা লাগে না। তবে নিবন্ধন না করলে সেটি অবৈধ গরু হিসেবে বিবেচিত হয়। তাই বাছুর জন্ম নিলে সেটিকেও নিবন্ধন করিয়ে নেই।
একই এলাকার বাসিন্দা হামিদা বেগম পালছেন একটি গরু। তার গরুর বাচ্চা হবে আর কিছুদিন পর। সেটিও বিজিবি ক্যাম্পের তালিকাভুক্তির মধ্যে আনতে হবে। তুলতে হবে ইউনিয়ন পরিষদের খাতায়ও। নিজের কাছেও থাকে একটি খাতা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন