শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

মালয়েশিয়া-বাংলাদেশ সমঝোতা অভিবাসন ব্যয় হবে সর্বনিম্ন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০০ এএম

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের জনশক্তি রফতানি সংক্রান্ত পাঁচ বছর মেয়াদী দ্বি-পাক্ষিক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। মালয়েশিয়ার নিয়োগকর্তা কর্মীদের যাতায়াতের বিমান ভাড়া বহন করবে। এতে মালয়েশিয়াগামী কর্মীদের অভিবাসন ব্যয় হবে সর্বনিম্ন। ফলে প্রতারণার সংখ্যা হ্রাসসহ দেশটির শ্রম আইন অনুযায়ী অন্যান্য সুযোগ সুবিধা লাভ করবে কর্মীরা। কর্মীদের যথাযথ আবাসনের দায়িত্ব নিয়োগকর্তাদের ওপর অর্পণ করা হয়েছে। কুয়ালালামপুর থেকে বাংলাদেশ হাইকমিশনের নির্ভরযোগ্য সূত্র এ তথ্য জানিয়েছেন।

গতকাল রোববার স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় কুয়ালালামপুরে কর্মী প্রেরণ বিষয়ে মালয়েশিয়ার সাথে বাংলাদেশের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করছেন দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রী দাতুক সেরি এম সারাভানান এবং বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি। সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের জন্য প্রবাসী মন্ত্রী ইমরান আহমদের নেতৃত্বে চার সদস্যের প্রতিনিধি দল গত শনিবার রাতেই কুয়ালালামপুরে পৌঁছেন। কলিং ভিসার দ্বি-পাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্যদিয়ে দেশটির সকল খাতে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের পথ উন্মুক্ত হলো। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, দশ সিন্ডিকেটের অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি আমদানি বন্ধ করে দেন। ব্যাপক কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পর গতকাল পুনরায় দেশটিতে জনশক্তি রফতানির পর্দা উঠলো। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রবাসী সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন, মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল দাতু মুহাম্মদ খাইর আজমান বিন মোহামেদ আনোয়ার, কুয়ালালামপুরে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই-কমিশনার গোলাম সরওয়ার, বিএমইটির ডিজি শহীদুল আলম, শ্রম কাউন্সেলর মো. জহিরুল ইসলামসহ উভয় দেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

এ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের ফলে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ, কর্মসংস্থান এবং প্রত্যাবাসনের আদর্শ কাঠামো প্রতিষ্ঠার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশের কর্মীদের কর্মসংস্থান একটি অন্যতম সহযোগিতার ক্ষেত্র এবং পারস্পরিকভাবে উপকারী বলে উভয় দেশ বিশ্বাস করে। বাংলাদেশের কর্মীরা যেমন মালয়েশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখছে, তেমনি বাংলাদেশের উন্নয়নেও অবদান রেখে যাচ্ছে যা উভয় দেশ স্বীকার করে।

এ সমঝোতা স্মারকের আওতায় বাংলাদেশি কর্মীদের মালয়েশিয়া প্রান্তের সকল খরচ নিয়োগকর্তা বহন করবেন। যেমন রিক্রুটমেন্ট এজেন্সি নিয়োগ, মালয়েশিয়ায় আনয়ন, আবাসন, কর্মে নিয়োজন এবং কর্মীর নিজ দেশে ফেরত প্রেরণের খরচ কোম্পানী বহন করবেন। নিয়োগকর্তা নিজ খরচে মালয়েশিয়ান রিক্রুটিং এজেন্ট নিযুক্ত করতে পারবেন। মালয়েশিয়ায় আসার পর বাংলাদেশি কর্মীর ইমিগ্রেশন ফি, ভিসা ফি, স্বাস্থ্য পরীক্ষার খরচ, ইনস্যুরেন্স সংক্রান্ত খরচ, করোনা পরীক্ষার খরচ, কোয়ারেন্টাইন সংক্রান্ত খরচসহ সকল ব্যয় মালয়েশিয়ার নিয়োগকর্তা বা কোম্পানী বহন করবে। নিয়োগকর্তা কর্মীর মানসম্মত আবাসন, বীমা, চিকিৎসা এবং কল্যাণ নিশ্চিত করবে। ফলে আশা করা যায়, কর্মীর অভিবাসন খরচ অনেক কমে যাবে। উভয় দেশের আইন, বিধি, প্রবিধান, জাতীয় নীতি এবং নির্দেশাবলীর আলোকে এই সমঝোতা স্মারকে কর্মীদের অধিকার ও মর্যাদাকে অধিকতর সুরক্ষিত করা হয়েছে। দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রী এম সারাভানান চুক্তির পর বলেছেন যে, নতুন চুক্তি ১৭ ফেব্রুয়ারি মেয়াদ শেষ হওয়া আগের চুক্তির পরিবর্তে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫ বছরের জন্য কার্যকর হবে।

এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, নতুন সমঝোতা স্মারকে (এমওইউ) কর্মী নিয়োগ ও সরবরাহের বিষয়ে মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশ এবং তাদের নিজ নিজ সংস্থার দায়িত্বের রূপরেখা তুলে ধরা হয়েছে। এম সারাভানান বলেন, অভিবাসী কর্মীদের এমন আবাসন প্রদান করতে হবে যা আইনের অধীনে সরকারি মান পূরণ করে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে মালয়েশিয়ার সমঝোতা স্মারক দুই দেশের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ পর্যবেক্ষণ করবে। ইতঃপূর্বে সারাভানান বলেছিলেন যে, বিমানে ভ্রমণকারী কর্মীদের কেবল কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মাধ্যমে দেশে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হবে।

সম্প্রতি এফএমটি তার খসড়া পর্যায়ে সমঝোতা স্মারকের বিশদ বিবরণ দিয়েছে, যেখানে নিয়োগকর্তারা বাংলাদেশি কর্মীদের নিয়োগের বেশিরভাগ দায়িত্ব বহন করবে। অন্যদের মধ্যে, খসড়া চুক্তিতে বলা হয়েছে যে, ঢাকা থেকে কুয়ালালামপুরে কর্মীদের ফ্লাইট খরচ এবং তাদের ফিরতি ফ্লাইট নিয়োগকর্তাদের বহন করতে হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Mohammad.Salim.Sheikh ২০ ডিসেম্বর, ২০২১, ৮:৫৮ পিএম says : 0
I want to go malaysia
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন