বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বিনোদন প্রতিদিন

বিয়ে বিচ্ছেদের কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ দিলেন শবনম ফারিয়া

বিনোদন রিপোর্ট: | প্রকাশের সময় : ২১ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০৩ এএম

অভিনেত্রী শবনম ফারিয়ার বিয়ে বিচ্ছেদের বছরখানেক পর সাবেক স্বামী হারুনুর রশীদ অপুর নির্যাতনের কথা প্রকাশ করেছেন ফারিয়া নিজে। গত কয়েক দিন ধরে এ নিয়ে মিডিয়ায় নানা আলোচনা হচ্ছে। ফারিয়া অভিযোগ করে ফেসবুকে অপুর বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। অপুও তার বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। বিয়ে বিচ্ছেদের বিস্তারিত কারণ উল্লেখ করে গত ১৯ ডিসেম্বর ফারিয়া সর্বশেষ একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সেখানে শবনম ফারিয়া লিখেছেন, এতদিন পর এই বিষয়টা নিয়ে কথা বলা আমার জন্য বিব্রতকর। কিন্তু এত সংবাদকর্মী ভাইদের কল, কয়দিন ফোন বন্ধ করে রাখব? তাই অনিচ্ছা সত্ত্বেও কিছু কথা বলতে হচ্ছে। ফারিয়া লিখেন, প্রথমত আমি একটা পোস্ট শেয়ার করেছিলাম যেখানে আমি কিছুটা আবেগের বশে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছিলাম। শেয়ার করাটা সমস্যা না, সমস্যা হলো আমার পর্দার বাইরের জীবন এত সাধারণ কিংবা আমার পরিবার এবং চারপাশের মানুষ আমাকে এতোই সাধারণভাবে ট্রিট করে যে, আমি হয়তো বুঝি না, আমিও সম্ভবত তারকা তালিকায় পড়ি এবং আমার একটা কথা নিয়ে আলোচনা হয়! সম্ভবত সেজন্যই প্রায়ই কিছুটা ব্যক্তিগত কথা লিখে ফেলি। তিনি লিখেন, আমি আমার সেই পোস্টে কোনোভাবেই কোনো ব্যক্তিকে নিয়ে অভিযোগ করিনি। স¤পূর্ণ অভিযোগ ছিল আমাদের সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির দিকে! ডিভোর্স জিনিসটা এত নোংরাভাবে না দেখলে হয়তো অনেকগুলো মেয়ের এভাবে জীবন দিতে হতো না! আমার পয়েন্ট ছিল, যেদিন হাতের আঙ্গুল ভাঙে সেদিনই আমি বুঝতে পেরেছিলাম এই বিয়ে অলরেডি টক্সিক হয়ে গেছে! কিন্তু আমরা আমাদের জীবনের প্রায় আড়াই বছর একটা মরা গাছে পানি দিয়ে গেছি শুধু মানুষ কি বলবে এটা ভেবে! দ্বিতীয়ত, আমি বিবাহ বিচ্ছেদের পরে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি আমার জীবনে যিনি ছিলেন তাকে সম্মান দেখাতে। যদিও ওনার প্রতি আমার অভিযোগ, রাগ-ক্ষোভ কোনোটিরই অভাব নেই। আমি শিওর ওনারও একই অনূভুতি! আমার বিশ্বাস তবুও উনিও সর্বোচ্চ সম্মান দেখাতেই চেষ্টা করেছেন! আঙ্গুল ভাঙার বিষয়টা অবশ্যই সত্যি, এমন না যে বিষয়টা ও ইচ্ছে করেই করেছে! রাগারাগির একপর্যায় হাতাহাতি হয়, তারপর আমার আঙ্গুল ভেঙে যায়। তাহলে এখন উনি অস্বীকার কেন করছেন? হঠাৎ এমন পাবলিক প্রতিক্রিয়া হলে আপনি কী করবেন? আপনিও ডিনাই করবেন! তৃতীয়ত, নিউজে আমার নামের সাথে যার নাম বারবার আসছে তিনি বিষয়টা অস্বীকার করছেন, আর এত বছর পর যেহেতু কথা উঠছে তখন বিষয়টা প্রমাণ করা যথেষ্ট কষ্টসাধ্য। কিন্তু হাসপাতালের সিসি ক্যামেরা ফুটেজ কিংবা বিল কার কার্ড থেকে পরিশোধ হয়েছে, সেগুলো বের করার সুযোগ এখনও আছে। যেহেতু সেই ব্যক্তির মা কল করলে আমি তাকে এখনও মা ছাড়া অন্য কিছু ডাকতে পারি না, তাই মা এবং আমার নিজের সম্মান রক্ষার্থে বিষয়টা এখানেই শেষ করতে চাই! পুরনো বিষয় ঘেঁটে কিচ্ছু পাব না আমরা দুজন। এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করার ইচ্ছা থাকলে বিচ্ছেদের সময়ই আমি এত প্রেম না দেখিয়ে এসবই বলতাম। হয়তো তখন আমি যেসব সমালোচনা হজম করেছি, তা করতে হতো না। লাভটা আমারই হতো। চতুর্থত, কোথায় যেন সংবাদ দেখলাম এতদিন পর জানা গেল কী কারণে বিচ্ছেদ হয়েছে আমাদের, এই ঘটনাই নাকি কারণ। বুঝলাম, এখনও সবার খুব জানার আগ্রহ আমাদের বিচ্ছেদের কারণ কী! আমাদের আসলে সে অর্থে কখনও সংসারই করা হয়নি। কারণ, আমাদের নিজেদের কখনও কোনো বাসা ছিল না! ওদের তিন বেডের বাসায় ওর মা, ওরা চার ভাই, ভাবি, ভাতিজি এবং দুইজন বুয়া থাকত! সেখানে আমার থাকার জন্য যে ঘর বরাদ্দ ছিল সেটার সাথে এটাচড কোনো ওয়াশরুম ছিল না। ওর মার বেডরুমের সাতজনের সাথে ওয়াশরুম শেয়ার করতে হতো। তাই আমি খুব বেশিদিন সেই বাসায় থাকিনি। আমরা তিন বোন, এত ছেলেদের ঘরে এডজাস্ট করতে সমস্যা হতো। তাছাড়া আমার শুটিংয়ের জন্য অনেক কস্টিউম/প্রপ্স অনেক কিছু থাকে। আলাদা একটা কস্টিউম রুম লাগে! তাছাড়া আমার মায়ের বাসা আর তাদের বাসা কাছাকাছি হওয়ায় এবং দুজনেরই বাবা না থাকায় আমরা দুজন দুজনের মার সাথে থাকতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতাম! এর ফলে স্বাভাবিক ম্যারিড কাপলের মধ্যে যেসব ইন্টিমেসি থাকে, তা আমাদের মধ্যে ছিল না! মূলত এই কারণেই আমরা আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্তে আসি। অবশ্যই এর বাইরে আরও হাজারটা কারণতো আছেই! সেগুলোও পাবলিক প্ল্যাটফর্মে লিখে আর আলোচনা চাই না। পঞ্চমত, এতদিন পরে এ কথা উঠল কেন? উত্তর, আমার দোষ! আমি অতি আবেগি হয়ে ঘরের কথা পরকে জানিয়েছি। এভাবে একটা পাবলিক প্ল্যাটফর্মে লেখার আগে এটার ফলাফলা আমার ভাবার দরকার ছিল! কিন্তু একটা বিষয় না বললেই নয়, অনেকের মন্তব্য আমার সেই বিচারপতির মতো লাগছে, যিনি বলেছিলেন রেপ হওয়ার তিনদিন পর কেন কেইস করেছে? আরও আগে করা উচিত ছিল। তবে এ বিষয়টা নিয়ে তখনও আমি আমার ব্যক্তিগত ফেসবুকে লিখেছিলাম যেখানে আমাদের দুই পরিবারের সদস্যরাই ছিল। কিন্তু পাবলিক প্রোফাইলে এসব লিখলে কি হয় তা তো এবার দেখলামই! জোর করে একজনকে ভিলেন বানাতে হবেই! অথচ এখান থেকে শিক্ষণীয় হতে পারতো, আমাদের মতো যেন কেউ জীবনের মূল্যবান সময় এভাবে নষ্ট না করে। এবার আশা করি, সবাই সবার সব প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন। যেহেতু শুরুটা আমাকে দিয়ে শেষটাও আমি টানতে চাই। সবার দোয়া চাই। আমাদের প্রতি একটু সহনশীল হোন। আমরা দুইজনই আমাদের জীবনে অনেকখানি এগিয়ে নিয়েছি। দুজনই নতুন করে জীবন শুরু করার মানসিকতার মধ্যে যাচ্ছি! আমার কোন বিষয়ে দয়া করে ওই ভদ্রলোককে টানবেন না! শুনেছি উনি এখন ভালো আছেন। শান্তিমতো ঘুমাচ্ছেন। ওনাকে শান্তিমতো ঘুমাতে দেন। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ফেসবুকের মাধ্যমে হারুন অর রশিদ অপুর সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় শবনম ফারিয়ার। এরপর ফেসবুকে কথা বলতে বলতে তাদের দুজনের মধ্যে বন্ধুত্বের বন্ধন মজবুত হয়। তিন বছর বন্ধুতের পর একপর্যায়ে ভালোবাসা এবং তা বিয়েতে গড়ায়। ২০১৯ সালের ১ ফেব্রুয়ারি পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। প্রায় দুই বছরের বৈবাহিক জীবনের অবসান ঘটিয়ে বিচ্ছেদের পথে হাঁটেন তারা। বিচ্ছেদের পর থেকে একাই রয়েছেন শবনম ফারিয়া।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
আলোর পথের যাত্রী ২১ ডিসেম্বর, ২০২১, ৬:২৩ এএম says : 0
সহ্য করতে না পেরে ডিভোর্স দিলে সমাজ ই বলে শুধু তোর সাথেই এমন হয় অমুক তমুক কারো সমস্যা নাই। আসলে যে সহ্য করে সেই জানে কি যন্ত্রণা আল্লাহ যেন এই ভাগ্য কাউকে না দেয়। কিছু মেয়েরা ভাবে সন্তান হলে হয়ত এই নির্যাতন কমবে কিন্তু তারা আরও বড় ভুল করে যার যে স্বভাব তা কোনদিন ই যায়না। শেষে অই মেয়ের জীবন যায় এই অমানুষিক নির্যাতনে।
Total Reply(0)
Shakhawat Hossain Jony ২১ ডিসেম্বর, ২০২১, ৬:২৪ এএম says : 0
মিডিয়ার অভিনেত্রীদের জীবন এমনি হয়, কখোনো জোয়ার কখোনো ভাটা, যতদিন যৌবন থাকে,ততদিন জোয়ার ও চাহিদা থাকে।সেটা শারীরীক ও বাহ্যিক ভালবাসা। যৌবন শেষে জীবনের কালো অন্ধকার নেমে আসে, না থাকে ভালবাসা, না থাকে চাহিদা ও জনপ্রিয়তা।আর জীবন হয় যন্ত্রনার, বিষীষিকাময়, ও আত্মঘাতী!
Total Reply(0)
Joynob Kona ২১ ডিসেম্বর, ২০২১, ৬:২৪ এএম says : 0
নির্যাতন সহ্য করে নারী থাকতে পারলেই নারী ভালো হয়। আর যদি সহ্য করে থাকতে না পেরে ঘর ভেঙে দেয়।তখনই খারাপ হয়ে যায় নারী।নারীকেই নারীরা বিভিন্ন দোষারোপ করতে থাকে। এসব বিষয়ে সমালোচনা করার জন্য একজন নারী অন্য জন নারীর পিছে লাগে ।
Total Reply(0)
Syeda Rezoana Aktar ২১ ডিসেম্বর, ২০২১, ৬:২৫ এএম says : 0
একদম ঠিক জোর করে বিয়ে টিকিয়ে রাখার চেয়ে বেচে থাকা অনেক বেশি জরুরি। নিজের জীবনের চেয়ে দামি আর কিছুই নেই। যে আমার আমিকে ভালোবাসে না তার জন্য নিজের অস্তিত্ব বিলিন করার কোন মানে নেই
Total Reply(0)
Atoara Khatun Pollen ২১ ডিসেম্বর, ২০২১, ৬:২৫ এএম says : 0
স্বামীর না‌মে পু‌লিশ কে কেন কিছু জানান নাই এইটা মাথায় ঢুক‌ছে না।আপা আপ‌নি তো গ্রা‌মের অ‌শিক্ষিত মা বাপ মরা মামার বা‌ড়ি‌তে বড় হওয়া অসহায় মে‌য়ে না।মুখ বু‌জে সব নির্যাতন সহ‌্য ক‌রে‌ছেন।একটু অবাক হলাম।
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন