মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানের তারল্য সঙ্কট মোকাবেলায় নিঃশব্দে কাজ করছে। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেন মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে জাতিসংঘের মাধ্যমে ২০ কোটি ডলার বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে স্থানান্তর করেছে।
অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি)-এর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বিশেষ অধিবেশনের একদিন পর ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা বৃহত্তর মূল্যবোধে আফগানিস্তানে নগদ অর্থ সরবরাহে নীরবে কাজ করেছি।’ ওই বিশেষ বৈঠকে আফগান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৯৫০ কোটি ডলারের সম্পদ মুক্ত করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বন জানানো হয়েছে। আফগানিস্তানের সম্পদের বিষয়ে আদালতের কার্যক্রমের বরাত দিয়ে কর্মকর্তা অবশ্য বলেছিলেন যে, ‘কোন জাদু বোতাম’ নেই যা তহবিল প্রকাশ করবে। ‘জনসাধারণের বর্ণনা বাস্তবতার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়,’ তিনি জোর দিয়ে বলেছিলেন। ওই কর্মকর্তা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, আফগানিস্তানে নগদ প্রবাহ বৃদ্ধির ফলে দেশটিতে নগদ অর্থের তীব্র ঘাটতি মোকাবেলায় আরও বেশি তারল্য রাখার অনুমতি দেয়া হবে। একইভাবে, আফগানিস্তানে আরও ব্যক্তিগত রেমিটেন্স পাঠানোর অনুমতি দেয়া হবে।
গত রোববার ওআইসি কাউন্সিল অফ ফরেন মিনিস্টারের (সিএফএম) বিশেষ বৈঠকের রুদ্ধদ্বার অধিবেশনের সাথে পরিচিত সূত্রগুলো বলেছে, আফগানিস্তানের জন্য মার্কিন বিশেষ প্রতিনিধি অংশগ্রহণকারীদের বলেছেন যে, ওয়াশিংটন আফগানিস্তানের তারল্য সমস্যা সমাধানে অংশীদারদের সাথে কাজ করছে। আগস্টে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞার কারণে আফগানিস্তানের অর্থনীতি নগদ সঙ্কটের সম্মুখীন হয়েছে। তারপর থেকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৯৫০ কোটি ডলারের সম্পদ আটকে রেখেছে, যা তালেবান সরকারের জন্য সমস্যা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
ওআইসি আফগানিস্তানে সম্পদে প্রবেশের অনুমতি দেয়ার পক্ষে ছিল এবং পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশির মতে, মার্কিন রাষ্ট্রদূত ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, তারা আফগানিস্তানের বিদেশী সম্পদের বিষয়ে তাদের অবস্থানে পরিবর্তন আনতে পারে। কুরেশি বলেছেন যে, টমাস ওয়েস্ট স্পষ্ট করেছেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মানবিক সহায়তার সাথে কোনও শর্ত সংযুক্ত করতে চায় না। টমাস আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সাথে এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বৈঠক করেছেন এবং তাকে তালেবান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে করা প্রতিশ্রæতি পূরণের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন বলে ধারণা করা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশেষত মহিলাদের অধিকার, তাদের শিক্ষা এবং তাদের কাজের অধিকার নিয়ে উদ্বিগ্ন।
এদিকে, টমাস ওয়েস্ট সোমবার সেনাপ্রধান (সিওএএস) জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়ার সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। আইএসপিআর জানায়, বৈঠকে পারস্পরিক স্বার্থের বিষয়, আফগানিস্তানের বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার সুযোগ নিয়ে আলোচনা হয়। সিওএএস বলেছিলেন যে, বিশ্ব এবং অঞ্চল একটি অস্থিতিশীল আফগানিস্তান ধারণ করতে পারে না। তিনি একটি আসন্ন মানবিক বিপর্যয় এড়াতে বিশ্বব্যাপী ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছিল। জেনারেল বাজওয়া ওআইসি’র অধিবেশনে অংশগ্রহণের জন্য টমাস ওয়েস্টকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। সূত্র : ট্রিবিউন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন