বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

কুষ্টিয়ায় লোহার গ্রিল থেকে প্রধান শিক্ষকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

কুষ্টিয়া থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ ডিসেম্বর, ২০২১, ৩:৩৪ পিএম

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে রেজাউল ইসলাম (৫৬) নামের এক প্রধান শিক্ষকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) ভোরে যদুবয়রা ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামের নিজ বাড়ির লোহার গ্রিল থেকে নিহতের স্বজনরা লাশ উদ্ধার করে পুলিশকে খবর দেয়।
পরে পুলিশ লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে পরিবারের কোন অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে।
নিহত ব্যক্তি যদুবয়রা ইউনিয়নের ১০০ নং কেশবপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বাগুলাট ইউনিয়নের শালঘরমধুয়া গ্রামের মৃত আনছার উদ্দিনের জৈষ্ঠ্য পুত্র ছিলেন।
নিহতের স্বজন, সহপাঠী ও এলাকাবাসী জানান, প্রধান শিক্ষক রেজাউল ইসলামের অনেক টাকা ধার দেনা ছিলো। বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্ন মানুষের কাছে তিনি তাঁর মৃত্যুর কথা বলে মাপ চাইতেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ধার -দেনা পরিশোধে ব্যর্থ হয়েই গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তিনি।
এলাকাবাসী ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, রেজাউল ইসলাম ১৯৯০ সাল থেকে কেশবপুরের নিদেনতলায় শ্বশুর বাড়ীতে ঘর জামাই থাকতেন। উপজেলার শালঘর মধুয়ায় তার নিজের বাড়ী। শ্বশুর ইউসুফ আলীর কোন পুত্র সন্তান না থাকায় তিনি শ্বশুর বাড়িতেই থাকতেন। সেখানে থেকেই চাকরী করতেন। তার স্ত্রী শেফালী আক্তার চর আগ্রাকুন্ডা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। এই দম্পতির দুই ছেলে রয়েছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তিনি নতুন বাড়ি ও বাজারে একটি মার্কেট নির্মাণ করতে গিয়ে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা ধার - দেনা করেছিলেন। দেনার টাকার জন্য স্বজনদের কাছে সহযোগীতা কামনা করতেন।হঠাৎ ভোর রাতে নিজের পাকাবাড়ির সামনের অংশের গ্রিলে রশির সাথে ঝুলতে দেখেন তাঁর স্ত্রী। এ সময় স্ত্রীর চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তাঁকে নিচে নামিয়ে ডাক্তারকে খবর দেওয়া হয়। স্থানীয় ডাক্তার এসে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে কেশবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মুনসুর আলী বলেন, ' গত বৃহস্পতিবার প্রধান শিক্ষক নিজেদের মধ্যে আড্ডার সময় ইয়ার্কির ছলে চিরবিদায়ের কথা বলছিলেন। কিন্তু সত্যিই চলে যাবেন তা ভাবতে পারিনি। তিনি আরো বলেন, আজ শোনা যাচ্ছে সে অনেক টাকা দেনা ছিল। হয়তো দেনার চাপে আত্মহত্যা করেছে।'
নিহতের স্ত্রী শেফালী আক্তার বলেন, ' কিছুই বুঝতে পারিনি। ধার দেনার কথা কিছু বলেনি। ভোরে খোঁজাখুজির একপর্যায়ে গ্রিলে ঝুলতে দেখে চিল্লাই উঠেছিলাম। আমি আর কিছু জানিনা।'
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, ' নিজ বাড়ির গ্রিলে ঝুলছিল এক প্রধান শিক্ষককের লাশ। ঝুলন্ত লাশ নিচে নামিয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ লাশের সুরতহাল করে কিন্তু কোন অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ হস্তান্তর করা হয়। তিনি আরো বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। '

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন