শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সূচক-মূলধনে ইতিহাস

ফিরে দেখা শেয়ারবাজার-২০২১ আলোচনায় ছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা

হাসান সোহেল | প্রকাশের সময় : ২৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০০ এএম

দীর্ঘদিনের আস্থা সঙ্কটসহ করোনার আঘাত সামলে শেয়ারবাজারকে ইতিবাচক রাখা বিএসইসির নতুন কমিশনের জন্য ছিল সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তবে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় জিরো টলারেন্স নীতিতে গত এক বছরে শেয়ারবাজার ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে। দিন যত যাচ্ছে দেশের অর্থনীতিতে পুঁজিবাজারের অবদান তত বাড়ছে। দেশীয় প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানও এখন তালিকাভুক্ত হচ্ছে এখানে। দেশের সাধারণ মানুষও উন্নয়নের মালিকানায় অংশীদার হচ্ছেন। এই ধারাবাহিকতায় দীর্ঘ মন্দা ও করোনা পরিস্থিতিকে পেছনে ফেলে বছরজুড়ে বেশ আলোচনায় ছিল শেয়ারবাজারের সূচক।

২০২১ সালে ডিএসইএক্স অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন ইতিহাস গড়েছে। গত ১০ অক্টোবর সূচক বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৭ হাজার ৩৬৭ পয়েন্টে। একই চিত্র ছিল বাজার মূলধন এবং লেনদেনেও। গত ৯ সেপ্টেম্বর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছিল ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৩১৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। অতীতে কোনো সময় বাজার মূলধন এই পরিমাণ বাড়েনি। একই সঙ্গে লেনদেনে রেকর্ড গড়ে পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল ৩ হাজার ২৪৯ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। আগামীতে নতুন রেকর্ড গড়ার পূর্ব পর্যন্ত ২০২১ সাল শেয়ারবাজারে ইতিহাস হয়ে থাকবে।

দীর্ঘদিন পর শেয়ারবাজার নিয়ে যখন সবাই খুশি, বিদেশি বিনিয়োগ যখন দরজায় কড়া নাড়ছে, তখনই দৃশ্যমান সাফল্যকে বাধাগ্রস্ত করতে এবং সরকারকে বিব্রত করতে একটি গ্রæপ দেশের পুঁজিবাজারকে আবারও আগের মতো বিপর্যস্ত করতে উঠেপড়ে লাগে। উড়তে থাকা পুঁজিবাজারে সেপ্টেম্বরে ব্যাংকগুলোর পুঁজিবাজার বিনিয়োগ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক হস্তক্ষেপ শুরু করে। নির্ধারিত সীমার বেশি বিনিয়োগ করায় ৮টি ব্যাংককে জরিমানা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পাশাপাশি নির্দেশনা লঙ্ঘন করে পুঁজিবাজার বিশেষ তহবিলের অর্থ অন্য শেয়ারে বিনিয়োগ করার কারণে আরো ১২ ব্যাংককে এ সময় সতর্ক করা হয়। সব মিলিয়ে ২২টি ব্যাংকের ওপর হস্তক্ষেপ করার ঘোষণা দেয়। পাশাপাশি ব্যাংকগুলো বন্ডে যে বিনিয়োগ করেছে, সেটিও পুঁজিবাজারে বিনিয়োগসীমার মধ্যেই ধরার কথা জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে মিউচ্যুয়াল ফান্ড পরিচালনা করা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির কাছেও প্রতিদিনের লেনদেনের তথ্য চায় তারা।
এসব প্রশ্নবিদ্ধ সিদ্ধান্তে বাজারে অযাচিত বিক্রয় চাপ তৈরি হয়, নতুন বিনিয়োগও আটকে যায়। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি বড় বিনিয়োগকারীরাও হাত গুটিয়ে বসে থাকে। ফলে শুরু হয় ধসের মতো পরিস্থিতি। অবশ্য শেয়ারবাজারের অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হলেই বাংলাদেশ ব্যাংকের এই অযাচিত হস্তক্ষেপে নেতৃত্ব দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব অফসাহট সুপারভিশনের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. আমিনুর রহমান চৌধুরী। গভর্নরের আস্তাভাজন হওয়ায় একক ক্ষমতাবলে নতুন কোনো নিয়ম-নীতি প্রবর্তন করে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকে বাধাগ্রস্ত করছেন। অথচ ব্যাংকগুলোকেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না আর্থিক খাতের তদারকি সংস্থাটি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এসব অযাচিত হস্তক্ষেপে বিএসইসির সঙ্গে মতপার্থক্য দেখা দেয়। যার ফলে বছরের শেষ ভাগে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা অস্বস্তি দেখা দেয়। তবে সুশাসন ফেরায় ছন্দপতন থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে বাজার ইতিবাচকই থাকবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। বছরজুড়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নানামুখী কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের ফলে শেয়ারবাজার ইতিবাচক অবস্থানে রয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সম্ভাবনাময় এ খাতে ভবিষ্যতে আরো নতুন রেকর্ড গড়বে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। আর শেয়ারবাজারে চলমান নিম্নমুখিতার পেছনে এ মতপার্থক্য অনেকাংশেই ভ‚মিকা রেখেছে বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।

এদিকে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজার ও অর্থনীতির উন্নয়নের স্বার্থে বাংলাদেশ ব্যাংকের অযাচিত হস্তক্ষেপ রোধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এছাড়া পুঁজিবাজারের অন্যান্য স্টেকহোল্ডাররাও দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থার মধ্যে মতপার্থক্য দূর করে সমন্বয়ের বিষয়ে জোর দিয়েছেন। এমনকি পুঁজিবাজারকে প্রভাবিত করে, এমন সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির মধ্যে সমন্বয়ের দাবিতে গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঘিরে কর্মসূচি পালন করেছে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ’।

তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ ব্যাংকের নানা সিদ্ধান্ত ও দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থার মধ্যে সমন্বয় না থাকার কারণে বাজারে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ কমে গেছে। এ কারণে দরপতন হচ্ছে।

একটি শীর্ষস্থানীয় ব্রোকারেজ হাউজের প্রধান নির্বাহী নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে বলেন, আর্থিক খাতের যখন নাজুক অবস্থা তখন একমাত্র আশার আলো পুঁজিবাজার। বাংলাদেশ ব্যাংক আর্থিক খাতের উন্নয়ন ঘটাতে না পেরে নিজেদের অক্ষমতা ঢাকতে ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে পুঁজিবাজারে অযাচিত হস্তক্ষেপ করছে, যা দেশের অর্থনীতিকে আরো বিপর্যস্ত করবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

সাবেক তত্ত¡াবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম দীর্ঘদিন পর উড়তে থাকা শেয়ারবাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতেকে অস্বাভাবিক বলেছেন। এর অন্যতম কারণ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির মতপার্থক্যকে দায়ী করেছেন।

সূত্র মতে, বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগে ভাটা। অনিয়ম, দুর্নীতি আর অব্যবস্থাপনায় আর্থিক খাতের যখন নাজুক অবস্থা তখন একমাত্র আশার আলো শেয়ারবাজার। বর্তমান কমিশন, বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটিসহ (বিডা) সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বছরজুড়ে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক পরিমÐলে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারকে ব্র্যান্ডিং করতে রোড শো’র আয়োজন করে। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড, আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের সম্ভাবনা তুলে ধরছে। এসব কার্যক্রমের ফলে করোনার প্রাদুর্ভাবের মধ্যেও দেশের শেয়ারবাজারে মানুষের আস্থা ফিরেছে। বিনিয়োগ বাড়ছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনা মহামারির সময় ২০২০ সালে শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির পুনর্গঠন করা হয়েছে। নতুন কমিশন দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে বাজারের জন্য ইতিবাচক নানা পদক্ষেপ নিয়ে তা বাস্তবায়নে জোড় দিয়েছিল। যার ফলে অতীতে যেসব বিনিয়োগকারী বাজারের প্রতি আস্থা হারিয়েছিল তারা ধীরে ধীরে ফিরে এসেছে। এতে বাজারে বিনিয়োগ বাড়তে শুরু করে, যা এক বছর পর ২০২১ সালে লেনদেনে, সূচক, বাজার মূলধনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাতে সব কিছুতে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়। যদিও নানা বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের অযাচিত হস্তক্ষেপে সেটা ধরে রাখা সম্ভব হয়নি।

তবে গত এক বছরে বাজারে সূচক বেড়েছে সাড়ে ১২০০ পয়েন্ট এবং বাজার মূলধন বেড়েছে প্রায় ৮৭ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া করোনা মহামারির মধ্যেও গত আগস্টে সবচেয়ে ভালো পারফরম্যান্স করে বিশ্বসেরা খেতাব পেয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। ওই সময়ে পুঁজিবাজারে ১৫ দশমিক ৮০ শতাংশ উত্থান হয়েছে। পুনর্গঠিত বিএসইসি’র ওপর আস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে বাজার আরো নতুন ইতিহাস গড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

তাদের মতে, বর্তমান কমিশন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের শেয়ারবাজার তথা অর্থনীতি নিয়ে রোড শো করে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে, যা বাংলাদেশর জন্য ইতিবাচক। সবাই আশাবাদী বাজারে নতুন বিনিয়োগকারীদের আগমন ঘটবে। তাতে বাজার আবারও নতুন রেকর্ড গড়তে পারবে। তবে প্রত্যেক বিনিয়োগকারীদেরই সচেতনতার সঙ্গে বিনিয়োগ করার পরামর্শ দেন তারা।

বিগত কমিশনের আমলে শেয়ারবাজারের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা ছিল তলানিতে। তবে বিএসইসির নতুন চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামসহ অন্য কমিশনারদের দায়িত্ব গ্রহণের পর নিয়ন্ত্রক সংস্থার কার্যক্রমে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে।

জানা গেছে, নতুন কমিশন দায়িত্ব নেয়ার পর বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে করোনা পরিস্থিতিতে সরকার ঘোষিত লকডাউনে শেয়ারবাজার খোলা রাখার ব্যবস্থা নেয়া, সুশাসন ফেরাতে আইন সংস্কার ও অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ, সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ ও এককভাবে ন্যূনতম ২ শতাংশ শেয়ার ধারণ না থাকা কোম্পানিগুলোর ওপর কঠোরতা আরোপ, দুর্বল ও লোকসানি কোম্পানিতে স্বচ্ছতা আনতে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ পরিবর্তনেরও নির্দেশনা জারি; শেয়ারবাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় দুর্বল কোম্পানির পরিচালকদের শেয়ার ও ব্যাংক হিসাব জব্দ করা, প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড গঠন, প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) আসা কোম্পানির শেয়ার আনুপাতিক সমবণ্টন, স্বচ্ছতা নিশ্চিতে একাধিক আইপিও বাতিল, ওভার দ্য কাউন্টার মার্কেট (ওটিসি) বাতিল করে এসএমই প্ল্যাটফর্ম চালু, অল্টারনেটিভ প্ল্যাটফর্ম গঠন ও ওটিসির কোম্পানিগুলোর অবসায়নের নির্দেশনা জারি, ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার এবং সার্কিট ব্রেকার আরোপ, ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশ প্রদানের সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ, লভ্যাংশ না দেয়া ও নামমাত্র লভ্যাংশ দেয়া কোম্পানিগুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

এ ছাড়া সকল তফসিলি ব্যাংকের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ বৃদ্ধির উদ্যোগ, বুকবিল্ডিংয়ের বিডিং প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বাড়ানোর উদ্যোগ, বিনিয়োগ বাড়াতে দেশে-বিদেশে ব্রোকার হাউজের শাখা হিসেবে ডিজিটাল ব্যুথ স্থাপন, শেয়ারবাজারের ব্র্যান্ডিং ও বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন দেশে রোড শো আয়োজন, বিএসইসিসহ স্টক এক্সচেঞ্জকে ডিজিটালাইজড করার উদ্যোগ, স্টক এক্সচেঞ্জে বন্ড, সুকুক ও ট্রেজারি বন্ড চালু, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশকে (আইসিবি) শক্তিশালীকরণের উদ্যোগ, ব্রোকারেজ হাউজের সংখ্যা বাড়াতে নতুন ট্রেক ইস্যুকরণ, করোনা পরিস্থিতিতে ভার্চুয়ালি এজিএম বা ইজিএম বা পরিষদ সভা করার উদ্যোগ, বাজার মধ্যস্থতাকারীদের কাজে উৎসাহ বাড়াতে পুরস্কার প্রদানের উদ্যোগ, স্বল্প মূলধনী কোম্পানিগুলোর পরিশোধিত মূলধন বাড়ানোর উদ্যোগ, মার্কেট মেকারের অনুমোদন, পাঠ্যপুস্তকে বিনিয়োগ শিক্ষার অন্তর্ভুক্তির উদ্যোগ এবং উভয় স্টক এক্সচেঞ্জকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির উদ্যোগ নিয়েছে বিএসইসি।

এদিকে সর্বশেষ গত রোববার শেয়ারবাজারে লেনদেন চাঙ্গা করতে ঋণসুবিধায় পরিবর্তন এনেছে বিএসইসি। ঋণ সংক্রান্ত নীতির নতুন বিধানে বলা হয়েছে, তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানির শ্রেণিমান বাড়লে কিংবা উন্নতি হলে, শ্রেণি বদলের দিন থেকে কোম্পানিগুলোকে ঋণসুবিধা দেয়া হবে। তবে ‘জেড’ শ্রেণি থেকে কোনো কোম্পানির শ্রেণিমান উন্নত হলে, প্রথম সাত দিন কোম্পানিটি ঋণসুবিধা পাবে না।

শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর আবু আহমেদ বলেন, গত এক বছরের শেয়ারবাজারের উন্নয়ন, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নতুন কমিশন নানা উদ্যোগ নিয়েছে। এতে শেয়ারবাজারের ওপর বিনিয়োগকারীর আস্থা বেড়েছে। এটা ধারাবাহিক চলতে থাকলে বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। তবে কমিশনের মনিটরিং আরো জোরদার করতে হবে। যাতে কেউ বাজারের স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে বিএসইসির।

বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাজী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিএসইসির চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন দীর্ঘদিনের আস্থার সঙ্কট দূর করে শেয়ারবাজারকে ইতিবাচক ধারায় ফিরিয়ে এনেছে বিএসইসি। এতে শেয়ারবাজারের ওপর হারানো আস্থা ফিরে পেয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ড. শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, অনেক বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে পুঁজিবাজার এখন একটি শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানে রূপ নিয়েছে। এটি যে দেশের সার্বিক অর্থনীতির মূল উৎস, তা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। উদ্যোক্তারা এখানে এসে সহজে যাতে অর্থ উত্তোলন করতে পারেন সেই লক্ষ্যে সব ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা দেয়া হচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (4)
Md Akhtarujjaman ২৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:৪৫ এএম says : 0
কারণ, আমরা কাজে নয় কথায় বিশ্বাসী
Total Reply(0)
MD Jehan Sarkar ২৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:৪৬ এএম says : 0
সাক্ষরতার হার, শিশু মৃত্যুর হার,গড় আয়ু,ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা,জিডিপি,জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার,গড়/মাথাপিছু আয় সব দিকে বাংলাদেশ পাকিস্তানের চেয়ে ভালো অবস্থানে আছে। আর না থাকলেও অন্যদেশের চামচামি করব না কখনো, না খেয়ে থাকলেও স্বদেশ ই ভালো।
Total Reply(0)
Md Parves Hossain ২৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:৪৬ এএম says : 0
র্তমানে যারা আদর্শ বলে দাবি করে তারাই দুর্নীতিগ্রস্ত। দেশের অবস্থা আরও খারাপ হবে
Total Reply(0)
Md Mamun ২৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:৪৭ এএম says : 0
রাষ্ট্রের দুর্নীতি আর ঘুষ চরম পর্যায়ে এর লাগাম টেনে ধরা গেলে অনেক সুন্দর একটা দেশে পরিনত হত বাংলাদেশ।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন