শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ফ্লাইট বাতিল ও বিলম্ব, বিশ্বজুড়ে বিশৃঙ্খলা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০৪ এএম

বিশ্বজুড়ে ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়ছে ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাব। কভিডের নতুন এ ধরনের সংক্রমণ মোকাবেলায় আবারো কোভিডজনিত বিধিনিষেধ কঠোর করেছে বিভিন্ন দেশ। কোয়ারেন্টিন বিধি মানতে গিয়ে কর্মী সঙ্কটে পড়েছে বৈশ্বিক এয়ারলাইনস খাত। এ অবস্থায় বিশ্বজুড়ে ইংরেজি নববর্ষের ছুটির ভ্রমণে বিশৃংখলা দেখা দিয়েছে। শনিবার বিকাল পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে প্রায় চার হাজার ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। কেবল যুক্তরাষ্ট্রেই এ সংখ্যা দুই হাজারেরও বেশি। বাতিলের পাশাপাশি ফ্লাইট বিলম্বের তালিকা আরো দীর্ঘ। এমন বিশৃংখলার কারণ হিসেবে কর্মী ঘাটতিকে দায়ী করেছে এয়ারলাইনসগুলো। এপির খবরে বলা হয়েছে, মূলত বড়দিনের ছুটির মৌসুমকে কেন্দ্র করে উড়োজাহাজ ভ্রমণে এ বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। এটি সাধারণত উড়োজাহাজ ভ্রমণের শীর্ষ সময় হিসেবে বিবেচিত হয়। কোয়ারেন্টিন জটিলতায় বড়দিনের আগের দিন থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে ফ্লাইট বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। কারণ হিসেবে প্রতিক‚ল আবহাওয়া ও ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় আরোপিত কভিডজনিত বিধিনিষেধকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। কোয়ারেন্টিন জটিলতায় পাইলট ও ক্রু সদস্যরা আটকে যাওয়ায় কর্মী ঘাটতি মোকাবেলা করতে হচ্ছে উড়োজাহাজ পরিবহন সংস্থাগুলো। গত বছরের শেষ দিনেও বিশ্বজুড়ে অসংখ্য ফ্লাইট বাতিল ও বিলম্বের মুখোমুখি হয়। ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ফ্লাইটআওয়ার অনুসারে, শুক্রবার বিশ্বজুড়ে তিন হাজারেরও বেশি ফ্লাইট বাতিলের ঘটনা ঘটে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ ও দেশটি থেকে বাইরে যাওয়া ফ্লাইট বাতিল হয়েছে দেড় হাজারেরও বেশি। এছাড়া এদিন বিশ্বজুড়ে ১১ হাজারেরও বেশি ফ্লাইট বিলম্বের মুখোমুখি হয়েছে। গতকাল বিকাল পর্যন্ত বিলম্ব হওয়া ফ্লাইটের সংখ্যা ছিল দুই হাজারের কাছাকাছি। এমন পরিস্থিতি কয়েক মাস স্থায়ী হতে পারে বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকরা। গত বছরের শেষ দিকে ভ্রমণের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় পরিষেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে মার্কিন এয়ারলাইনসগুলো। ১৬ ডিসেম্বর থেকে প্রতিদিন গড়ে ২০ লাখেরও বেশি যাত্রী মার্কিন এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি চেকপয়েন্ট পার হয়েছেন। নভেম্বরে এ সংখ্যা গড়ে প্রায় ১ লাখ ছিল। আগের বছরের ডিসেম্বর থেকেও এ সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে ফ্লাইট বাতিলের ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে সাউথওয়েস্ট ও ইউনাইটেড এয়ারলাইনস। এছাড়া ডেল্টা, আলাস্কা, স্পিরিট ও জেটবøু উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ফ্লাইট বাতিল করেছে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউনাইটেড। সংস্থাটির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ব্রায়ান কুইগলি জানিয়েছেন, সোমবার থেকে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত ফ্লাইটের জন্য অতিরিক্ত ট্রিপ নেয়া পাইলটদের সাড়ে তিন গুণ মজুরি দেয়া হবে। বিষয়টি নিয়ে এয়ারলাইনস পাইলট ইউনিয়নের সঙ্গে একটি চুক্তিও করেছে ইউনাইটেড এয়ারলাইনস। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের অবসর ভ্রমণ প্রায় প্রাক-কভিড পর্যায়ে ফিরেছে, যদিও আন্তর্জাতিক ভ্রমণ এখনো অনেক পিছিয়ে রয়েছে। এ অবস্থায় ফ্লাইট বাতিলে এয়ারলাইনসগুলোর আক্রমণাত্মক সিদ্ধান্তকেও দায়ী করেছেন বিশ্লেষকরা। এয়ারলাইনসের সাবেক একজন মুখপাত্র কার্ট এবেনহচ বলেন, চাহিদা মোকাবেলায় উড়োজাহাজ পরিবহন সংস্থাগুলো আক্রমণাত্মকভাবে ফ্লাইট যোগ করেছে। যদিও সংস্থাগুলো কর্মী বাড়াতে খুব বেশি মনোযোগ দেয়নি। ফলে কোয়ারেন্টিন জটিলতায় কিছু কর্মী আটকে যাওয়ার পর সংস্থাগুলোকে ফ্লাইট বাতিল করতে হচ্ছে। অনেক এয়ারলাইনস এখন পাইলট, ফ্লাইট অ্যাটেনড্যান্ট ও অন্যান্য কর্মী নিয়োগের চেষ্টা করছে। তবে বাতিল বা স্থগিত হওয়া এসব ফ্লাইট আর পুনরুদ্ধার করা সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বিশ্বজুড়ে হঠাৎ করে বাড়তে শুরু করে কভিডের প্রাদুর্ভাব। সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন সংস্থাগুলো কভিডজনিত কর্মী ঘাটতির কারণে পরিষেবা স্থগিত ও কমিয়ে আনছে। ৩১ ডিসেম্বর দেশটিতে দৈনিক নতুন সংক্রমণের সংখ্যা চার লাখ ছাড়িয়ে গেছে। ভাইরাসটি দেশটির ফেডারেল এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার বিভাগেও ছড়িয়ে পড়েছে। ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) জানিয়েছে, তাদের বেশির ভাগ কর্মী কভিড-১৯ পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন। এপি।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন