শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

দু’দশকে অন্যতম শক্তিশালী মুদ্রা হিসেবে দাঁড়িয়েছে ইউরো

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৪ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০৪ এএম

একক ইউরোপীয় মুদ্রা হিসেবে গত শনিবার ২০ বছর (দু’দশক) পূরণ করল ইউরো। প্রাথমিক দ্বিধা, মূল্য নিয়ে উদ্বেগ এবং ঋণ সংকটের মধ্যেই ইউরোপসহ বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী মুদ্রা হিসেবে দাঁড়িয়েছে ইউরো। খবর দ্য গার্ডিয়ান। ২০০২ সালের ১ জানুয়ারি ১২টি দেশে চালু হয়েছিল ইউরো ব্যাংক নোট ও মুদ্রা। বর্তমানে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ২৭টি দেশের মধ্যে ১৯টিতেই ইউরো ব্যবহৃত হচ্ছে। এ মুহূর্তে আয়ারল্যান্ড, জার্মানি থেকেে স্লোভাকিয়া পর্যন্ত ৩৪ কোটি মানুষ এ মুদ্রা ব্যবহার করছে। শিগগিরই হয়তো এ তালিকায় যুক্ত হবে বুলগেরিয়া, ক্রোয়েশিয়া ও রোমানিয়া। তখন আরো বাড়বে ইউরো ব্যবহারকারীর সংখ্যা। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক আরো গভীর ও বাণিজ্য সহজ করতে এবং পুরো ইউরোপের জন্য মার্কিন ডলারের মতো শক্তিশালী মুদ্রা চালু করার লক্ষ্য থেকেই ১৯৭০ সালে ইউরোর ধারণা প্রথম তৈরি হয়। ইউরো ব্যবহারের কারণে নভেল করোনাভাইরাসজনিত মহামারী সৃষ্ট অর্থনৈতিক বিপর্যয় কাটানো গিয়েছে বলে মনে করছেন ইইউভুক্ত দেশগুলোর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডার লিয়েন বলেন, ইউরোপের শক্তির সত্যিকারের প্রতীক হলো ইউরো। আবার ইউরোকে বিশ্বব্যাপী স্থিতিশীলতা ও সংহতির উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন ল্যাগার্ড। এক ব্লগ পোস্টে তিনি লিখেছেন, ইউরোপ ও ইউরো এখন স্পষ্টতই একে অন্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। ইউরোপের তরুণ নাগরিকরা ভাবতেই পারবে না যে কখনো ইউরো পৃথিবীতে ছিল না। ইউরো নিয়ে শুরুতে সাধারণ মানুষের মনে নানা শঙ্কা ছিল, নানা প্রশ্ন ছিল। নিজের দেশের মুদ্রা নতুন মুদ্রায় রূপান্তরের ফলে পণ্যের দাম বেড়ে যাবে কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তা ছিল তাদের। অবশ্য ক্যাফেতে বসে কফি পানের দাম কিছুটা বেড়েছিল। অন্যদিকে দামি পণ্যের দাম কিছু কিছু ক্ষেত্রে বরং কমতেই দেখা গেছে। বিভিন্ন দেশের সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, ইউরো ব্যবহারের কারণে মূল্যস্ফীতিতে স্থিতিশীলতা এসেছে। ফলে ইউরো চালু হলে সব পণ্যের দাম বেড়ে যাবে, এমন দাবি ধোঁপে টেকেনি। ইউরো চালুর জন্য সে সময় নেয়া হয়েছিল ব্যাপক প্রস্তুতি। বিরাট এ কর্মযজ্ঞে মুদ্রার জন্য নকশা চূড়ান্ত করা হয়। লাল, নীল ও কমলা রঙের এসব নোটে এমন ছবি ব্যবহার করা হয়েছে, যেন সেটি দিয়ে বিশেষ কোনো দেশকে বোঝা না যায়। সাধারণ গথিক, রোমানীয় ও রেনেসাঁর সময়ের স্থাপত্যশৈলীর ছবি ফুটে উঠেছে ইউরোর ওপর। কিন্তু কোনো ছবিই কোনো নির্দিষ্ট দেশকে প্রতিনিধিত্ব করে না। সফলভাবে ২০ বছর পার করার পর এখন ইউরোর চেহারায় কিছুটা পরিবর্তন আনার কথা ভাবছে ইউরোপীয় কমিশন। পাশাপাশি ডিজিটাল ইউরো প্রণয়নের কথাও ভাবা হচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সাথে মিলে এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে চায় কমিশন। মার্কিন ডলারের সাথে টেক্কা দিতে ইউরো সৃষ্টি হলেও এখনো ডলারকে পেছনে ফেলতে পারেনি সেটি। এখনো বিশ্বজুড়ে ডলারেরই রাজত্ব। তবে এর পরই নিজের অবস্থান পাকা করেছে ইউরো। বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যবহূত মুদ্রা হিসেবে রয়েছে ইউরো। এক দশক আগে গ্রিসে অর্থনৈতিক মন্দা শুরু হলে অনেকটা অস্তিত্বের সংকটে পড়ে ইউরো। যে সংকট বিশ্বের অনেক দেশেই ছড়িয়ে পড়ে। সে সময় অনেকটা খাদের কিনার থেকে বেঁচে ফিরেছে ইউরো। সে সংকট থেকে শিক্ষা নিয়েই মহামারীতে অন্য অনেক দেশের চেয়ে ভালো অবস্থায় ছিল ইউরো ব্যবহারকারী দেশগুলো—এমনটিই মনে করছেন ইউরো ব্যবহারকারী দেশের অর্থমন্ত্রীরা। তাছাড়া মহামারীতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেয়া প্রণোদনা ও সমর্থনও অনেক কাজে লেগেছে বলে মনে করেন তারা। গার্ডিয়ান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন