শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

চাঙা শেয়ারবাজার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০২ এএম

নতুন বছরের প্রথম কার্যদিবসের মতো দ্বিতীয় কার্যদিবসেও প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্যসূচক বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। এতে ১৩ কার্যদিবস পর আবারও ডিএসইতে হাজার কোটি টাকার ওপরে লেনদেনের দেখা মিললো।

মূল্যসূচক ও লেনদেন বাড়ার পাশাপাশি দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। এমনকি পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দিনের দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে। এরপরও লেনদেনের একপর্যায়ে এ প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার বিক্রেতার সংকট দেখা দেয়।
গতকাল ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে ডিএসইতে লেনদেন শুরু হতেই প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স প্রায় ৩০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। আর লেনদেনের ৫০ মিনিটের মাথায় ডিএসইর প্রধান সূচকটি প্রায় ৭০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। তবে শেষ আধা ঘণ্টার লেনদেনে বিক্রির চাপ বড় মূলধনের কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমে যায়। ফলে আটকে যায় সূচকের বড় উত্থান। অবশ্য এরপরও সূচক ঊর্ধ্বমুখী থেকেই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২৯ পয়েন্ট বেড়ে ছয় হাজার ৮৮২ পয়েন্টে উঠে এসেছে। আগের দিন সূচকটি বাড়ে ৯৬ পয়েন্ট। এর ফলে নতুন বছরের প্রথম দুই কার্যদিবসে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বাড়ল ১২৫ পয়েন্ট।
প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি অপর দুই সূচকও বেড়েছে। এর মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ ৬ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৪৫১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ১৫ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৫৭৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৩১৪ কোটি ১৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৮৯৪ কোটি ১৭ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৫১৯ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। লেনদেন শুধু আগের কার্যদিবসের তুলনায় বাড়েনি, ডিএসইতে ১৮ কার্যদিবসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে। আর ১৩ কার্যদিবস পর হাজার কোটি টাকার ওপরে লেনদেনের দেখা মিলেছে।
টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ১৮১ কোটি ৭৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ৭২ কোটি ৯৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৬৯ কোটি ৫০ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফরচুন সুজ।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে-পাওয়ার গ্রীড, পেনিনসুলা চিটাগাং, ডেল্টা লাইফ ইনস্যুরেন্স, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস, আইএফআইসি ব্যাংক, সাইফ পাওয়ার টেক এবং জিনেক্স ইনফোসিস।
ডিএসইতে ২১৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩২টির। আর ২৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এর মধ্যে ৫১ প্রতিষ্ঠানের দাম বেড়েছে ৩ শতাংশের ওপরে। যার পাঁচটির শেয়ার দিনের দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে। এমনকি এক পর্যায়ে এই পাঁচ কোম্পানির শেয়ারের বিক্রেতাও উধাও হয়ে যায়। এর মধ্যে রয়েছে ই-জেনারেশন, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স, লাভেলো আইসক্রিম, রিং সাইন টেক্সটাইল এবং আরএন স্পিনিং। এর মধ্যে আরএন স্পিনিং এবং লাভেলো আইসক্রিম আগের দিনও দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়লেও বিপরীত চিত্র দেখা যাচ্ছে সোনালী পেপারের ক্ষেত্রে। লেনদেন শুরুর কয়েক মিনিটের মাথায় কোম্পানিটির শেয়ার দিনের সর্বনিম্ন সীমায় চলে যায়। সেই সঙ্গে শূন্য হয়ে যায় ক্রেতার ঘর। দিনের লেনদেনের শেষ পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ারের ক্রেতার ঘর শূন্যই থাকে। আগের দিনও এক পর্যায়ে কোম্পানিটির শেয়ারের ক্রেতা শূন্য হয়ে পড়েছিল। এতে দু’দিনে কোম্পানিটির শেয়ার দাম কমেছে ১২৬ টাকা ৫০ পয়সা।
অবশ্য এই পতনের আগে প্রায় ছয় মাস কোম্পানিটির শেয়ার দাম অনেকটা টানা বেড়েছিল। গত বছরের ২৭ জুন কোম্পানিটির শেয়ার দাম ছিল ১৯৭ টাকা ৪০ পয়সা। এখান থেকে বাড়তে বাড়তে ৩০ ডিসেম্বর ৯৫৭ টাকা ৭০ টাকা পয়সা উঠে যায়। অর্থাৎ ছয় মাসের কম সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বাড়ে ৩৮৫ শতাংশ।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১০২ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২৮ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩০৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৯০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৯২টির এবং ২৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন