জাতীয় অ্যাথলেটিক্সের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ইভেন্ট হচ্ছে ১০০ মিটার স্প্রিন্ট। এই ইভেন্টে এবার পুরুষ ও নারী বিভাগের নতুন চমক যথাক্রমে ইমরানুর ও সুমাইয়া। সোমবার বনানীস্থ আর্মি স্টেডিয়ামে শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী শেখ কামাল জাতীয় সিনিয়র অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতার পুরুষ বিভাগে রেকর্ড পড়ে সেরা হয়ে দেশের দ্রুততম মানবের খেতাব জিতেছেন লন্ডন প্রবাসী অ্যাথলেট ইমরানুর রহমান। তিনি ২১ বছর আগের রেকর্ড ভেঙে স্বর্ণ জিতেছেন। অন্যদিকে এই ইভেন্টের নারী বিভাগে প্রথম হয়ে দ্রুততম মানবীর খেতাব পেয়েছেন বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপি) শিক্ষার্থী সুমাইয়া দেওয়ান। তিনি জাতীয় ও সামার অ্যাথলেটিক্স মিলিয়ে ১১বার দ্রুততম মানবীর খেতাব জেতা শিরিন আক্তারকে হারিয়ে সেরা হয়েছেন। চুড়ান্ত লড়াইয়ে ট্র্যাকে নামার আগে সোমবার সকালে পুরুষ বিভাগের হিটে ইমরানুর প্রথম হয়েছিলেন। এতেই আভাস মেলে বিকালে চুড়ান্ত লড়াইয়ে তিনি চারবারের দ্রুততম মানব মোহাম্মদ ইসমাইলকে টেক্কা দিতে পারবেন। সবার ধারণা সত্য প্রমাণ করে দুর্দান্ত রানিংয়ে ইমরানুর হারিয়ে দেন ইসমাইলকে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লন্ডন প্রবাসী এই অ্যাথলেট ইলেকট্রনিক টাইমিংয়ে ১০.৫০ সেকেন্ড সময় নিয়ে দৌঁড় শেষ করে রেকর্ড গড়েন। ইলেকট্রনিক টাইমিংয়ের হিসেবে এটিই বাংলাদেশের সেরা টাইমিং। এর আগে ১৯৯৯ সালে ২৫ ডিসেম্বর প্রয়াত মাহবুব আলমের গড়া ১০.৫৪ সেকেন্ড ছিল সর্বশেষ দেশের কোনো অ্যাথলেটের সেরা রেকর্ড। এছাড়া ইমরানুরের এই টাইমিং সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসের মালদ্বীপের হাসান সাঈদের কাছাকাছি। ২০১৯ সালে কাঠমান্ডুতে হাসান সাঈদ ১০.৪৯ সেকেন্ড সময় নিয়ে সোনা জিতেছিলেন। জাতীয় প্রতিযোগিতায় গত আসরের সেরা নৌবাহিনীর ইসমাইল ১০.৬৯ সেকেন্ড সময় নিয়ে এবার হয়েছেন তৃতীয়। একই সংস্থার রকিবুল হাসান ১০.৬৬ সেকেন্ড সময়ে জিতেছেন রৌপ্যপদক। দেশের দ্রুততম মানবের খেতাব জিতে দারুণ খুশি ইমরানুর রহমান। দৌঁড় শেষ করে গণমাধ্যমকে তিনি বলেন,‘নিজের পারফরম্যান্সে আমি খুশি। আত্মবিশ্বাস ছিল জিততে পারবো। ভবিষ্যতে এসএ গেমস থেকে দেশের জন্য পদক আনতে চাই। সেখানে সোনা জেতাটাই থাকবে আমার মূল লক্ষ্য।’ বাংলাদেশ অ্যাথলেটদের অনুশীলন সুবিধা অপ্রতুল। লন্ডনে জন্ম নেয়া ও বেড়ে ওঠা ২৮ বছর বয়সী ইমরানুর সেখানেই অনুশীলন চালিয়ে যেতে চান, ‘আমি অনুশীলন করবো লন্ডনে। প্রতিযোগিতার সময় দেশে আসবো।’
এদিকে নতুন দ্রুততম মানবী বিকেএসপির সুমাইয়া দেওয়ান ইলেকট্রনিক টাইমিংয়ে ১২.৩২ সেকেন্ড সময় নিয়ে দৌঁড় শেষ করে সেরা হয়েছেন। নৌবাহিনীর শিরিন আক্তার ১২.৩৬ সেকেন্ড নিয়ে দ্বিতীয় হন এবং সেনাবাহিনীর শরীফা খাতুন ১২.৫৪ সেকেন্ড সময়ে পান তৃতীয়স্থান। দ্রুততম মানবী হয়ে সুমাইয়াও বেশ খুশি। সাফল্য পেয়ে উচ্ছ্বসিত কন্ঠে গণমাধ্যমকে তিনি বলেন,‘আশা করেছিলাম এমন কিছু হবে। সাফল্য পাওয়ার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসও ছিল। চ্যাম্পিয়ন হয়ে খুব ভালো লাগছে। আমি ভবিষ্যতে দেশের জন্য আন্তর্জাতিক আসর থেকে স্বর্ণপদক জিততে চাই। সবার দোয়া নিয়ে নিয়মিত অনুশীলন করে সাফল্যের ধারায় থাকতে চাই।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন