শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

নতুন বছরে ফ্রান্সে পারিবারিক সহিংসতার বলি তিন নারী

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ জানুয়ারি, ২০২২, ৩:৩৪ পিএম

বছরের শুরুতেই ফ্রান্সে পারিবারিক সহিংসতার শিকার তিন নারী। নারীবাদী সংগঠনগুলির দাবি, নরীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা থামাতে সরকার কিছুই করছে না।

গতবছর ফ্রান্সে পারিবারিক সহিংসতার কারণে মারা গেছেন ১১৩ জন নারী। ফলে ক্ষোভ ছিলই। তার উপর নতুন বছরের প্রথম দিনে তিনজন নারী পারিবারিক সহিংসতার কারণে মারা যাওয়ায় সেই ক্ষোভ চরমে উঠেছে। ফ্রান্সে সরকারের বিরুদ্ধে, প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভ আরো বেড়েছে। নারীসুরক্ষা নিয়ে আন্দোলনরত সংগঠনগুলি রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী পার্লামেন্টে জানিয়েছেন, ২০১৩ সালে একশর বেশি নারী পারিবারিক সহিংসতার কারণে মারা গেছেন। নতুন বছরের শুরুর দিনেই তিনজন নারীকে ভয়ংকরভাবে মারা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, সরকার এবং ফ্রান্সের মানুষ এর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। গত বছর ১১৩ জন নারীকে তাদের পুরুষ সঙ্গী বা সাবেক সঙ্গীর হাতে প্রাণ হারাতে হয়েছে।

দক্ষিণ ফ্রান্সের শহর নিস-এ ৪৫ বছর বয়সি এক নারীর দেহ একটি গাড়ির ডিকি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তার স্বামী স্বীকার করেছে যে, সে তার স্ত্রীকে দমবন্ধ করে হত্যা করেছে। একই দিনে ফ্রান্সের আরেকটি শহরে ৫৬ বছর বয়সি এক নারীকে তার পুরুষ সঙ্গী ছুরি মেরে হত্যা করে। দুজনের মধ্যে ঝগড়া হয়েছিল। তারপরেই বছর পঞ্চাশের পুরুষ সঙ্গীটি এই কাজ করে বলে স্বীকার করেছে। তৃতীয় ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম ফ্রান্সে। সেখানে ২৭ বছর বয়সি এক নারী সৈনিককে তার পুরুষ সঙ্গী হত্যা করেছে। ছেলেটিও সৈনিক। নারীর দেহে একাধিকবার ছুরি মারা হয়।

নারীদের অধিকার নিয়ে আন্দোলন করা সংগঠন নাউস টু (অল অফ আস) প্রশ্ন করেছে, ফ্রান্সে নারীদের হত্যা করা হচ্ছে, অথচ, প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ একটা কথাও বলছেন না কেন? নারীদের হত্যা নিয়ে প্রবল হইচই শুরু হওয়ার পর সমানাধিকার বিষয়ক জুনিয়ার মন্ত্রী বলেছেন, অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। সরকার এখন পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত।

কিন্তু নাউস টু-র দাবি, চিন্তাভাবনার সময় চলে গেছে। এখন ব্যবস্থা নেয়ার সময় এসেছে। সরকারের প্রতিক্রিয়া যথেষ্ট নয়। ২৪ ঘণ্টায় তিনজন নারী মারা গেলেন। আর তার পরের দিন সরকার শুধুমাত্র একটা বৈঠক করলো। এটা যথেষ্ট প্রতিক্রিয়া হতে পারে না। যারা মারা গিয়েছেন, তাদের মধ্যে দুই তৃতীয়াংশ নারী পুলিশের কাছে আগে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তাও কিছু হয়নি।

প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, সরকার পারিবারিক সহিংসতা থামাতে একাধিক ব্যবস্থা নিয়েছে। ২৪ ঘণ্টার হটলাইন চালু করা হয়েছে। ৯০ হাজার পুলিশ কর্মীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। কীভাবে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে, তা পুলিশ কর্মীদের শেখানো হচ্ছে।

কিন্তু অধিকাররক্ষা কর্মীদের মতে, এই প্রশিক্ষণ খুবই প্রাথমিক স্তরের। সব পুলিশ কর্মী প্রশিক্ষণ পাচ্ছেন না। ফলে পরিস্থিতির বদল হচ্ছে না। আগামী ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসে প্রতিটি স্কুলে সমানাধিকার সপ্তাহ পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সূত্র: এএফপি, এপি, রয়টার্স।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন