বগুড়ার বালিয়াদিঘী ইউপির কালাইহাটা ভোটকেন্দ্রে আওয়ামীলীগ সমর্থক ও পুলিশ বিজিবির সংঘর্ষে বিজিবির গুলিতে নিহত ইউপি নির্বাচনে মহিলা মেম্বার প্রার্থী কুলসুম আক্তার (৫৫), খোরশেদ হোসেন (৬০),আলমগীর হোসেন (৪৫) ও আব্দুর রশীদ (৫৫) এর বৃহষ্পতিবার বিকেল ৩ টার দিকে বগুড়ার শজিমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ময়না তদন্ত সম্পন্ন করে স্বজনদের হাতে সোপর্দ করেছে ।
পরে সন্ধ্যায় এক শোকস্তব্ধ পরিবেশে নিহতদের জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে। ঘটনাস্থলের বিবরণ দিয়ে সদ্য নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান ইউনুস আলী ফকির জানান কালাইহাটা গ্রামে এখনও চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী অহেতুক উত্তেজনা সৃষ্টি ও গুলিবর্ষণের জন্য ওই দিনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসিফ আহম্মেদকে দায়ী করেছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের উগ্র ও হটকারি আচরনেই এই নৃশংস হত্যাকান্ড ঘটেছে ।
বুধবারের ঘটনার বিবরণ দিয়ে কালাইহাটা গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বিগত সময়ে পরপর তিনবার ভোটে দাঁড়িয়েও পাস করতে পারেননি আওয়ামীলীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ইউনুস আলী ফকির।
ফলে এবার কালাইহাটা ভোট কেন্দ্রের এবার একজোট হয়ে নৌকার প্রার্থীকে একচেটিয়া ভোট দিয়ে বিজয়ী করার সিদ্ধান্ত নেয়। মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহন শেষ হয় । ভোট গণনার সময় ভোটকেন্দ্রের বাইরে শতশত নারী পুরুষ ভোটার উৎসুক হয়ে ভীড় জমায় । ৫ টার দিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশ ও বিজিবি সমবিহারে ভোট কেন্দ্রে এসে জনতার ভীড় ক্লিয়ার করার নির্দেশনা দেন। নির্দেশনা পেয়ে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা লাঠিচার্জ করে ভিড় সরাবার চেষ্টা করলে আওয়ামীলীগ সমর্থক সহ গ্রামবাসীরা উত্তেজিত হয়ে ওঠে।
এসময় গুজব ছড়িয়ে পড়ে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের নির্দেশে ব্যালট বাক্স উপজেলায় নিয়ে গিয়ে গণনা করা হবে। এই গুজবে উপস্থিত নৌকা সমর্থক জনতা উত্তেজিত হয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও বিজিবিকে বহনকারী গাড়ী ভাংচুর করে। বাধ্য হয়ে প্রিজাইডিং অফিসারের কক্ষে আশ্রয় নেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশ ও বিজিবি সদস্য সহ নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা। এদিকে উত্তেজিত জনতার ইষ্টক বৃষ্টি বাড়তে থাকলে বিজিবিকে গুলি করার নির্দেশ দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। গুলিতে মারা যান ১ নারী সহ ৪ জন। বৃহষ্পতিবার আরও ১ জনের মৃত্যু হলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫ জন।
বৃহষ্পতিবার সারাদিনই গ্রামের বিক্ষুব্ধ মানুষেরা কালাইহাটা বাজার ও ভোট কেন্দ্রের আশে পাশে অবস্থান করে গুলি বর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন। গাবতলী থানার ওসি জিয়া লতিফুল ইসলাম এই রিপোর্ট লেখাতক কোন মামলা হয়নি বলে জানিয়েছেন ।
বগুড়ার জেলা প্রশাসক মোঃ জিয়াউল হক বলেছেন, ব্যালট বাক্স ও ভোট সংশ্লিষ্ট সামগ্রী এবং কর্মকর্তাদের জানমাল রক্ষার স্বার্থেই নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের নির্দেশে সেখানে গুলি চলেছে ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন