মঙ্গলবার , ৬ জুন ২০২৩, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৯, ১৬ যিলক্বদ ১৪৪৪ হিজরী

ইসলামী জীবন

কন্যা সন্তানই হতে পারে জান্নাতের উপলক্ষ

মুহা. হাসান মুজতাবা | প্রকাশের সময় : ৬ জানুয়ারি, ২০২২, ১১:৫৭ পিএম

সন্তান আল্লাহর বিশেষ নেয়ামত। অসংখ্য মানুষ আছে যাদের কোন সন্তান নেই। তারা শত চিকিৎসা করেও সন্তান জন্মদানে অক্ষম থাকে। তথাপিও সমাজে একশ্রেণীর মানুষ রয়েছে। যারা এই নেয়ামতের মাঝে তারতম্য করে থাকে। পুত্র সন্তানকে কন্যা সন্তানের উপর প্রাধান্য দিয়ে থাকে।

পুত্র সন্তান জন্ম নিলে পুলকিত হয়। আনন্দিত হয়। আর কন্যা সন্তান জন্ম নিলে বিষন্ন হয়ে পড়ে। অনেকক্ষেত্রে মা-কে এর জন্য শুনতে হয় কটু কথা। হতে হয় অপমানিত। অথচ পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন : ‘আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্ব আল্লাহরই, তিনি যা চান সৃষ্টি করেন, যাকে চান কণ্যা সন্তান দান করেন এবং যাকে চান পুত্র সন্তান দান করেন। (সূরা শূরা : আয়াত ৪৯)।
হয়তো মানুষ আল্লাহর এই বাণী সম্পর্কে অবগত নয়। অন্যথায় কীভাবে এমন ঈমান বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড লিপ্ত হতে পারে! এই জঘন্য ব্যাধির সূচনা হয়েছিল বহু আগে। সেই ইসলাম-পূর্ব; জাহেলি যুগে। তখন কন্যাসন্তান ছিল এতোটাই নিন্দিত যে, তাদেরকে জীবিতই রাখা হতো না। জীবন্ত পুঁতে ফেলা হতো মাটির নিচে।
তৎকালীন যুগের মানুষের উপর ক্রোদ্ধ হয়ে এবং ভর্ৎসনা করে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন : ‘যখন তাদের কাউকে কন্যা সন্তানের সুসংবাদ দেয়া হয়, তখন তারা মুখ কালো করে এবং মনে অসহ্য কষ্ট ভোগ করতে থাকে। তাকে শোনানো সুসংবাদের দুঃখে সে মানুষের কাছ থেকে মুখ লুকিয়ে থাকে। সে ভাবে, অপমান সহ্য করে তাকে (কন্যা সন্তানকে) থাকতে (বাঁচতে) দেবে, নাকি তাকে মাটির নিচে পুতে ফেলবে। শুনে রাখ, তাদের ফয়সালা খুবই নিকৃষ্ট।’ (সুরা নাহল : আয়াত ৫৮-৫৯)।
ইসলাম কন্যা সন্তানকে অবহেলার বিন্দু পরিমাণ সুযোগ দেয়নি। বরং কন্যা সন্তানের জন্য বিভিন্ন ফজিলত বর্ণনা করেছে। কন্যা সন্তান প্রতিপালনে উৎসাহ-উদ্দীপনা দিয়েছে। আয়েশা রা: থেকে বর্ণিত : তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন : ‘যে ব্যক্তিকে কন্যাসন্তান লালন-পালনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে এবং সে ধৈর্যের সঙ্গে তা সম্পাদন করেছে, সেই কন্যাসন্তান তার জন্য জাহান্নাম থেকে আড় (প্রতিবন্ধক) হবে।’ (তিরমিজি)।
অন্য এক হাদীসে ইরশাদ হয়েছে : আনাস ইবনু মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : যে ব্যক্তি দুটি মেয়ে সন্তানকে সাবালক হওয়া পর্যন্ত প্রতিপালন করে, কিয়ামাতের দিনে সে ও আমি এমন পাশাপাশি অবস্থায় থাকব, এ বলে তিনি তার হাতের আঙ্গুলগুলো মিলিয়ে দিলেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৬৫৮৯)
উপরোল্লেখিত কোরআন, হাদিসের বানীর মাধ্যমে এ কথা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, কোন ব্যক্তি যদি তার কণ্যা সন্তানদের সুন্দরভাবে লালন-পালন করে। তাদেরকে ইসলামের অনুশাসনের মাঝে রাখে। তাহলে তার জন্য জান্নাত অপেক্ষা করছে। আর যদি কণ্যা সন্তানদের অবহেলা করে। তাদের উপর বে ইনসাফি করে।
তাহলে কোরআন ও হাদিসের উপর অবজ্ঞা প্রদর্শন করা হবে। যা খুবই জঘন্য ও নিকৃষ্ট কাজ। এরজন্য তাকে অবশ্যই আল্লাহর বিচারের সম্মুখীন হতে হবে। কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে। তাই আমাদের সকলকে শুধরাতে হবে। কন্যা সন্তান ও পুত্র সন্তানের মাঝে কোন তারতম্য করা যাবে না। আল্লাহ আমাদের সবাইকে বুঝার তৌফিক দান করুন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন