শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ক্যাথলিক ধর্মের বিরুদ্ধে যেয়ে স্বেচ্ছামৃত্যুর অনুমতি কলম্বিয়ার আদালতের

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১০ জানুয়ারি, ২০২২, ১:১৩ পিএম

দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুসের জটিল রোগে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। কৃত্রিমভাবে শ্বাস নিতে হত তাকে, হুইলচেয়ার ছাড়া হাঁটতে-চলতে পারতেন না। বস্তুত চিকিৎসা যন্ত্র ও পরিবারের সদস্যদের সাহায্যেই বেঁচেছিলেন। এই পরিস্থিতিতে স্বেচ্ছামৃত্যু চেয়েছিলেন কলম্বিয়ার বাসিন্দা ভিক্টর এসকোবার। শেষ পর্যন্ত আদালতের অনুমতিতে আত্মীয়দের উপস্থিতিতে স্বেচ্ছামৃত্যু বরণ করলেন তিনি। ব্যক্তিগত চিকিৎসকের প্রাণাঘাতী ইঞ্জেকশনে হাসি মুখে সকলকে বিদায় জানালেন ভিক্টর।

মৃত্যুর দু’ ঘণ্টা আগেও তৃপ্ত দেখাচ্ছিল ৬০ বছর বয়সি ভিক্টরকে। এভাবে মৃত্যুবরণকে জীবনের জয় বলেছেন স্বেচ্ছায় আত্মীয়-বন্ধুদের বিদায় জানানো মানুষটা। কারণ প্রাত্যহিক কষ্টের জীবন থেকে অনন্ত মুক্তিই তো চেয়েছিলন তিনি। স্বেচ্ছামৃত্যুর আগে নিজের সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের একটি ভিডিও রেকর্ড করেন ভিক্টর। যা ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যমগুলিকে পাঠিয়ে দেন তিনি। ওই ভিডিওতে ক্যাথলিক ভিক্টরকে বলতে শোনা যায়, “একটু একটু করে সকলেরই একদিন ফেরার সময় আসবে। অতএব, আমি আজ বিদায় বলব না, বরং বলব, আবার দেখা হবে! তিলে তিলে আমরা সকলেই তো ঈশ্বরে সমাপ্ত হব একদিন।”

ভিক্টরের আইনজীবী টুইট করে জানান, কলম্বিয়া ক্যালি শহরে চিকিৎসকদের উপস্থিতিতেই স্বেচ্ছামৃত্যু বরণ করেছেন ভিক্টর এসকোবার। অন্তিম ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, আত্মীয়দের মাঝখানে হাসিমুখে ভিক্টর। তার মধ্যে কোনওরকম অস্থিরতা দেখা যায়নি। এরপরেই তাকে উপস্থিত চিকিৎসক প্রাণঘাতী ইঞ্জেকশন দেন।

গোটা বিশ্বেই স্বেচ্ছামৃত্যু নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। একজন মানুষের অবস্থা বিশেষে স্বেচ্ছামৃত্যুর অধিকার থাকা উচিত কিনা তা নিয়ে পক্ষে ও বিপক্ষে মত রয়েছে। ১৯৯৭ সালে কলম্বিয়া সরকার বহিরাগত সাহায্যে (যেমন প্রাণঘাতী ইঞ্জেকশনে) স্বেচ্ছামৃত্যুর অধিকারকে বাতিল করেছিল। যদিও ২০২১ সালে ওই দেশের উচ্চ আদালত ‘মর্যাদাপূর্ণ মৃত্যুর অধিকারে’ শিলমোহর বসায়।

তবে কারা, কেন সেই অধিকার পাবেন, তার উপরে নির্ভর করছে আদালতের অনুমতি পাবার বিষয়টি। এক্ষেত্রে ভিক্টর একটি জটিল রোগে ভুগছিলেন। বেঁচে থাকতে হলে অন্যের দাক্ষিণ্যে কৃত্রিমভাবে শ্বাসগ্রহণ করা তার উপায় ছিল না তার। ফলে আদালতে ভিক্টরের আবেদন গ্রাহ্য হয়।

উল্লেখ্য, ভিক্টর এসকোবারের স্বেচ্ছামৃত্যু আরও একদিক থেকে নজিরবিহীন। কারণ কলম্বিয়াই প্রথম দেশ, যারা একজন রোমান ক্যাথলিক খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীকে স্বেচ্ছামৃত্যুর অনুমতি দিল। সাধারণত আত্মহত্যার তীব্র বিরোধী ক্যাথলিক চার্চগুলি। বস্তুত প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের বিরুদ্ধে গেল ভিক্টরের এসকোবারের শেষইচ্ছা বা ইচ্ছেমৃত্যু। সূত্র: বিবিসি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন