মেলাকে প্রাণবন্ত ও নিরাপদ করতে স্থানীয় বাসিন্দাদের সক্রিয় ভূমিকায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর সচিব ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী। গতকাল সোমবার সকালে রূপগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর সচিব ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন, এবার প্রথমবারের মতো ২৬তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা স্থায়ী প্যাভিলিয়নে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে শহরের পাশাপাশি গ্রামের ক্রেতা-দর্শনার্থী বেশি হচ্ছে। সফল হতে চলেছে এ মেলা। রূপগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মীর আব্দুল আলীমের নেতৃত্বে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা মেলার সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে সচিব ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী মেলার অস্থায়ী কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
মেলা সূত্র জানায়, সরকারি ছুটির দিন ছাড়াও দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় রয়েছে। উদ্বোধনের পর শুরুতে তেমন না জমলেও ক্রমেই বাড়তে শুরু করেছে দর্শনার্থীর সংখ্যা। এদিকে ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্যে ডিসকাউন্ট দেয়া শুরু করায় প্রাণ ফিরেছে মেলায়।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, মেলার ১০ম দিনেও দর্শনার্থীদের গাড়ির সংখ্যা বেশি থাকায় আরো বড় পরিসরে সরিয়ে নেয়া হয়েছে পার্কিংজোন। এতে শৃঙ্খলা ফিরেছে পারিপার্শ্বিক পরিবেশেও। মেলায় ঘুরতে এসে রূপগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মীর আব্দুল আলীম বলেন, বাইরের উন্নত দেশের আদলে এবার স্থায়ী প্যাভিলিয়নে জমজমাট বাণিজ্য মেলার আসর বসেছে। খোলামেলা ও সুন্দর পরিবেশে মেলা হওয়ায় তুলনামূলক দর্শনার্থী বেড়েছে।
এদিকে মেলার পূর্ব ও পশ্চিম পাশে বিভিন্ন পণ্যের স্টলগুলোতেও সমানতালে ভিড় দেখা যায়। কেনাকাটা আগের তুলনায় বেড়েছে বলে দাবি করেন ব্যবসায়ীরা। তবে ঢাকা বাইপাস সড়কের ৪ লেনে উন্নীতকরণ কাজ চলমান থাকায় ধুলোবালিতে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন মেলায় আগত দর্শনার্থীরা। এমনটাই জানালেন মেলায় ঘুরতে আসা অপর দর্শনার্থী মাহিরা তাসফি প্রভা।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি মনিরুজ্জামান ভুঁইয়া বলেন, রূপগঞ্জের এ মেলা জমাতে আগত দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা দিতে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী, শিক্ষক সমাজ সক্রিয় সহযোগিতা করে আসছেন। রূপগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছালাউদ্দিন ভুঁইয়া বলেন, আমাদের এলাকায় এ মেলা অনুষ্ঠিত হওয়ায় সহযোগিতামূলক অংশগ্রহণ করেছি। স্থানীয় বাসিন্দাদের সব রকম সহযোগিতা থাকায় দর্শনার্থীরা নিরাপদ পরিবেশ পাচ্ছেন।
এসব বিষয়ে রূপগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদ বলেন, মেলার নিরাপত্তায় নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের পাশাপাশি ডিমএমপিসহ পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সদস্য নিয়োজিত রয়েছেন। সিসি ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণ করে দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
এছাড়া দেশে গত কয়েকদিনে করোনা সংক্রমণের হার কিছুটা বাড়লেও মেলায় মাস্ক ব্যবহারে তেমন সচেতনতা দেখা যায়নি। মাস্ক না পড়ার এ বিষয়টি ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। মাসব্যাপী মেলায় এবার দেশীয় বস্ত্র, মেশিনারিজ, কসমেটিকস, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিকস, ফার্নিচার, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহস্থালী সামগ্রী, চামড়া ও জুতাসহ চামড়াজাত পণ্য, স্পোর্টস গুডস, স্যানিটারিওয়্যার, খেলনা, স্টেশনারি, ক্রোকারিজ, প্লাস্টিক, মেলামাইন পলিমার, হারবাল ও টয়লেট্রিজ, ইমিটেশন জুয়েলারি, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, হস্তশিল্পজাত পণ্য, হোম ডেকর ইত্যাদি পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রি করা হচ্ছে।
বাণিজ্যমেলা প্রতিদিন সকাল ১০টায় শুরু হয়ে খোলা থাকছে রাত ৯টা পর্যন্ত। তবে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা খোলা থাকবে। মেলার প্রবেশমূল্য প্রাপ্তবয়স্কদের ৪০ টাকা ও শিশুদের ২০ টাকা। এছাড়া কুড়িল বিশ্বরোড ফ্লাইওভার থেকে মেলা প্রাঙ্গণে যাতায়াতের জন্য ৩৫টি বিআরটিসির বাস চলাচল করছে। যাতে ভাড়া জনপ্রতি ৩০ টাকা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন