শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

আঞ্চলিক নিরাপত্তার স্বার্থে দেশগুলো চীন ও রাশিয়ার সাথে যুক্ত হচ্ছে

মধ্যপ্রাচ্যের পুনর্বিন্যাস ২

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০০ এএম

প্রথমত, সিরিয়া ও ইরাক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আংশিক সেনা প্রত্যাহার, আফগানিস্তান থেকে সম্পূর্ণ প্রত্যাহার, এবং ইন্দো-প্যাসিফিকের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে যুক্তরাষ্ট্রের অনাগ্রহ আঞ্চলিক আধিপত্যবাদীদের ভূ-রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মূল্য পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য করেছে। তাদের দৃষ্টিকোণ থেকে যুক্তরাষ্ট্র শুধুমাত্র তার নিরাপত্তা প্রতিশ্রুতি কমিয়েই দিচ্ছে না, এটি একটি অপ্রত্যাশিত অংশীদারও হয়ে উঠেছে।

এর স্পষ্ট উদাহরণ হ’ল, বাইডেন প্রশাসন আরব-উপসাগরীয় রাষ্টগুলো এবং ইরানের মধ্যকার সংঘর্ষে পক্ষ নিচ্ছে না, যেটি ট্রাম্প প্রশাসনের তুলনায় একটি বড় পরিবর্তন, যা ইরান-বিরোধী শিবিরকে আন্তরিকভাবে সমর্থন করেছিল। পরিবর্তে, বাইডেন প্রশাসন ইরানের সাথে ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার জন্য চাপ দিচ্ছে। এসব কারণ আঞ্চলিক শক্তিগুলোকে তাদের নিরাপত্তার স্বার্থে বিকল্প পথ বের করতে, প্রতিদ্বন্দ্বীদের সাথে সম্পর্ক সংশোধন করতে এবং চীন ও রাশিয়ার মতো অন্যান্য বহির্শক্তির সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতে বাধ্য করেছে।

এই আঞ্চলিক নিরাপত্তা কৌশল অনুসরণ করে প্রায় সব আঞ্চলিক রাষ্ট্র বেইজিং এবং মস্কোর সাথে তাদের সম্পর্ক গভীর করছে। চীন এই অঞ্চলের অর্থনীতিতে এবং রাশিয়া অঞ্চলের নিরাপত্তায় তার ভূমিকা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, চীন এবং রাশিয়ার মধ্যে একটি দুর্দান্ত শক্তি প্রতিযোগিতার সম্ভাবনা যেমন ক্রমেই বড় আকার ধারণ করছে। ফলে মস্কো এবং বেইজিংয়ের সাথে মধ্যপ্রাচ্যের রাষ্ট্রগুলোর গভীর সম্পর্ক তাদের এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনার একটি প্রধান উৎস হয়ে উঠবে।

দ্বিতীয়ত, অনেক সঙ্ঘাতপূর্ণ এলাকায় অচলাবস্থার তৈরি হয়েছে। ২০১৭ সালের উপসাগরীয় সঙ্কট কোন জয় ছাড়াই সমাপ্ত হয়েছে এবং বহু পরাজয় ঘটেছে। সিরিয়ায় বিরোধীরা হেরেছে, কিন্তু সরকার জিতেনি। একইভাবে, পূর্ব ভূমধ্যসাগরে তুরস্ক, গ্রীস এবং সাইপ্রাসের (ফ্রান্স, ইসরাইল, মিসর এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত) সাথে মিত্র দেশগুলির একটি জোটের মধ্যে উত্তেজনা সত্ত্বেও সংঘর্ষের মানচিত্রটি কোনও অর্থবহ সমাধান লাভ করেনি। সাময়িকভাবে বিরোধ স্থগিত করা ছাড়া কোনো বিষয়েই একমত হতে পারেনি কোনও পক্ষ।

একইভাবে, ত্রিপোলি নিয়ন্ত্রণের জন্য মিসর এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের সমর্থনে খলিফা হাফতারের বছরব্যাপী সামরিক অভিযান তুরস্ক এবং রাশিয়া যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার পরে সমাপ্ত হয়। সুস্পষ্ট বিজয়ের এই অনুপস্থিতি সংঘর্ষরত পক্ষগুলোর ও তাদের আন্তর্জাতিক সমর্থকদের জন্য আলোচনার এবং সমঝোতার জন্য আরও ক্ষেত্র তৈরি করেছে।

তৃতীয়ত, এই অঞ্চলটি মতাদর্শগত অবসাদের সম্মুখীন হচ্ছে, যার ফলে গত এক দশকে বিশেষ মতাদর্শিক লড়াইগুলির প্রাসঙ্গিকতা এবং তীব্রতা হ্রাস পেয়েছে। আরব বসন্ত বিদ্রোহের এক দশক পরেও কেউ বিজয় দাবি করতে পারে না। বিপরীতে, পরাজয়ের তালিকা বেশ দীর্ঘ। রাজনৈতিক ইসলামপন্থী শক্তিগুলি, যাদের রাজনৈতিক পরিবর্তনের শুরুতে সম্ভাব্য বিজয়ী হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছিল, তারাও পরে বিপর্যয় এবং ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।

২০১৩ সালের মিসরীয় অভ্যুত্থান থেকে শুরু করে সিরিয়ার বিরোধীদের ভাড়াটে সৈন্যে পরিণত হওয়ার করুণ পরিণতি পর্যন্ত এবং তিউনিসিয়ার পার্লামেন্টের বিরুদ্ধে কায়েস সাইদের সর্বশেষ অভ্যুত্থান পর্যন্ত ইসলামপন্থী দলগুলি বড় পরাজয়ের সম্মুখীন হয়েছে। সূত্র: ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট। (চলবে)

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (7)
Nil Akash ১৩ জানুয়ারি, ২০২২, ৮:২২ এএম says : 0
আগামী যুগের মাঝে চীন শুধু সুপার পাওয়ার থাকবে।
Total Reply(0)
সুশান্ত কুমার্ ১৩ জানুয়ারি, ২০২২, ৮:২৩ এএম says : 0
মারকিন শকতী নিপাত যাক।
Total Reply(0)
আলতাফ মাহমুদ ১৩ জানুয়ারি, ২০২২, ৮:২৪ এএম says : 0
জালেম শাসক থেকে আল্লাহ যেন সকল মুসলমানদের রক্ষা করেন,আমিন।
Total Reply(0)
Shaheen Hossain ১৩ জানুয়ারি, ২০২২, ৮:২৪ এএম says : 0
আস্তে আস্তে প্রতিটি দেশেই নব্য ফেরাউনের আবির্ভাব ঘটছে!! এদের কাছে ক্ষমতা যেনো পরশ পাথর।
Total Reply(0)
Md Sajjad Rana ১৩ জানুয়ারি, ২০২২, ৮:২৫ এএম says : 0
যুক্তরাষ্ট্র যখন নীতি কথা বলে আমার হাসি পায়। তাদের নীতি নৈতিকতা সভ্যতা চীন রাশিয়া কলম্বিয়া ভেনিজুয়েলা সহ সমাজতন্ত্র দেশ গুলোর জন্য মধ্যে প্রাচ্যের আবর দেশ গুলোর জন্য চেতনা একদম নুইয়ে থাকে এটা হল তাদের মুখোশ
Total Reply(0)
Md Rasel Hossain ১৩ জানুয়ারি, ২০২২, ৮:২৫ এএম says : 0
যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের সাথে তো রাশিয়া সরকারের খোঁচাখুঁচি চলেই এই ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র তারা কত কথাই তো বলব এগুলা মানুষ বুঝবে
Total Reply(0)
Juwel Mahmud ১৩ জানুয়ারি, ২০২২, ৮:২৬ এএম says : 0
অনেকেই বলে জাতিসংঘ বিশ্বকে পরিচালনা করে আমি বলি কচু করে।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন