বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

প্রস্তুতি চলছে বইমেলার

রাহাদ উদ্দিন | প্রকাশের সময় : ১৪ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০২ এএম

সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ১১ দফা বিধিনিষেধ জারি করেছে সরকার। যা আজ থেকে বাস্তবায়ন হচ্ছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে দুই ডোজ করোনার টিকা নেওয়ার সনদ ছাড়া কেউ রেস্টুরেন্ট, শপিংমল, মেলা বা জনসমাগমে যেতে পারবে না। এমনকি গণপরিবহনেও অর্ধেক করা হবে যাত্রীসংখ্যা। এমন পরিস্থিতিতে আগামী ১ ফেব্রæয়ারি থেকে অনুষ্ঠেয় অমর একুশে গ্রন্থমেলা নিয়ে তৈরি হয়েছে দ্বিধাবিভক্তি। যদিও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ১ ফেব্রæয়ারি থেকেই গ্রন্থমেলা আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলা একাডেমি। মেলার তারিখ পরিবর্তনের সম্ভাবনা আছে কিনা, এমন প্রশ্নে গ্রন্থমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও বাংলা একাডেমির পরিচালক ড. জালাল আহমেদ জানান, আমরা আমাদের প্রস্তুতি নিচ্ছি। এখন পর্যন্ত তারিখ পেছানোর ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সরকারের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে কোনো নিষেধাজ্ঞা আসেনি। সরকারের নীতিমালার ভিত্তিতেই আমরা আমাদের কাজ এগিয়ে নেব। আমরা ইতোমধ্যে করোনা সংক্রমণের উর্ধ্বগতির বিষয় বিবেচনায় কীভাবে বইমেলা নিয়ে কাজ করা যায় তা সম্পর্কে সরকারকে অবহিত করেছি এবং সরকারের পক্ষ থেকে যদি অনুমতি পাই তাহলেই আমরা মেলা শুরু করব। আমরা সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাথে মিলে কাজ করছি। সুতরাং আমরা আশাবাদী যে আমরা আমাদের কাজ যথাসময়ে শুরু করতে পারব। স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টা কীভাবে দেখবেন, এমন প্রশ্নে জালাল আহমেদ বলেন, গত বছরের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আমরা ইতোমধ্যে বইমেলা আয়োজনের সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করে রেখেছি। কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাতে বইমেলায় ক্রেতা ও পাঠকরা আসতে পারেন, সে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে সরকারের যে নীতিমালা তা তো মানা হবেই এবং তার পাশাপাশি আমরা নিজস্ব কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
বাংলা একাডেমি মহাপরিচালক কবি নুরুল হুদা বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত ১ ফেব্রæয়ারি থেকেই গ্রন্থমেলা শুরুর কথাই ভাবছি। তবে করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকারি নির্দেশনাকে আমরা অবশ্যই স্বাগত জানাব ।
আসন্ন এ গ্রন্থমেলা উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে চলছে নানা আয়োজন। নির্মাণ করা হচ্ছে বিভিন্ন স্টল। সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য গত কয়েক বছরের মতো এবারও নির্মাণ করা হচ্ছে বাঁশের বিভিন্ন শৈল্পিক কাঠামো। গতকাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গন ঘুরে দেখা যায় বিশাল আয়তন জুড়ে মেলার অবকাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে। বাংলা একাডেমির ভেতরও চলছে দাপ্তরিক নানা কর্মব্যস্ততা। সংশ্লিষ্টরা জানান , করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় এ বছর প্রায় ১৫ লাখ বর্গফুটের বিশাল এলাকা জুড়ে মেলা হবে। প্রতিটা স্টলের সামনে বেশ বড় অংশ ফাঁকা রেখে মেলার ডিজাইন করা হয়েছে। এছাড়াও মেলা প্রাঙ্গনে প্রবেশের জন্য রমনার ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের সামনে দিয়ে নতুন করে রাখা হয়েছে একটি প্রবেশ পথ। গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় এবারো মেলার নকশা করবেন স্থপতি এনামুল করিম নির্ঝর। যদিও গতবছর মেলায় প্যাভিলিয়ন ও স্টল বিন্যাস নিয়ে প্রকাশকদের মধ্যে অসন্তোষ ছিল। তাই এবারের মেলায় এদু’টি বিষয়ে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে আয়োজক কমিটি। জানা গেছে, ভাষা শহীদদের স্মৃতিতে নিবেদিত গ্রন্থমেলায় এবারের প্রতিপাদ্য থাকবে- বঙ্গবন্ধু জন্মশতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী।
বাংলা একাডেমির জনসংযোগ ও সমন্বয় উপকমিটির তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের বইমেলায় একাডেমি প্রাঙ্গণে ১০৭টি প্রতিষ্ঠান ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৪৩৩টি প্রতিষ্ঠানকে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর বাইরে মেলায় ৩৩টি প্যাভিলিয়ন ছিল। সব মিলিয়ে গতবার মেলায় ৪৬৬টি প্রকাশনা সংস্থা অংশ নেয়।
বাংলা একাডেমি সূত্রে জানা গেছে, একাডেমির কার্যনির্বাহী পরিষদের ২ জন প্রতিনিধি, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পুলিশ, জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি এবং পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির প্রতিনিধিদের নিয়ে এবারের মেলা পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়েছে। এবারও স্টল ও প্যাভিলিয়নের সংখ্যা থাকবে ২০২১ সালের বইমেলার মতোই।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন