সবুজ অঞ্চলে থাকা মহানগরী সহ বরিশাল বিভাগের ৬ জেলাতেই প্রতিদিন করোনা সংক্রমন লাফিয়ে বাড়ছে। পুরো ডিসেম্বরের তুলনায় চলতি মাসের গত দুই সপ্তাহেই করেনা শনাক্তের সংখ্যা প্রায় ৪ গুন। এমনকি নভেম্বর-ডিসেম্বরের চেয়েও বেশী। যদিও মধ্য অক্টোবরের পরে গত ৩ মাসে এ অঞ্চলে করোনা পজিটিভ শনাক্ত কোন মানুষের মৃত্যু হয়নি, কিন্তু চলতি মাসের শুরু থেকেই সংক্রমন উদ্বেগজনক পর্যায়ে বাড়লেও নুন্যতম কোন স্বাস্থ বিধি কেউ মআনছেন না। এমনকি এব ষয়েঢ পুলিশ, প্রশাসন সহ স্থানীঅয় সরনকার প্রতিষ্ঠানগুলোরও কোন হেলদোল নেই। মাস্ক ব্যাবহারের বিষয়টি বেশীরভাগ মানুষই আমলে নিচ্ছেন না। উঠতি ও তরুন বয়সীরা মাস্ক পরিধান অসমাœনজনক বলেও মনে করছে।
এমনকি নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহে বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় যেখানে ২৯ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়, সেখানে পারবর্তি ৭ দিনে সংখ্যাটা ৬৪ জন সহ গত ১৪ দিনে মোট আক্রান্ত ৯৩ জন। অথচ গোটা ডিসেম্বর মাসে দক্ষিণাঞ্চলে করোনা সংক্রমন সংখ্যাটা ছিল ২২। আর গত নভেম্বরের ৩০ দিনে এ অঞ্চলে ৬৬ জনের দেহে করোনা সংক্রমন শনাক্ত হয়েছিল। নভেম্বর ও ডিসেম্বরে কোন মৃত্যু ছিল না। অক্টোবরে ৬ জেলায় মোট আক্রান্ত ২১৭ জনের মধ্যে প্রথম ১৫ দিনে দুজনের মৃত্যু হয়েছিল।
গত জুলাই মাসে করোনার মহা সংকটকাল অতিক্রমকালে দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় ১৫ হাজার আক্রান্তের মধ্যে মৃত্যু হয় প্রায় দেড়শ নারী-পুরুষের। এরমধ্যে বরিশাল মহানগরীতেই আক্রান্তের সংখ্যা ছিল প্রায় সাড়ে ৩ হাজার। মৃত্যু হয়েছিল ১২ জনের।
গত মে মাসে দক্ষিণাঞ্চলে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৩৮০। মৃত্যু হয়েছিল ২৫ জনের। তবে গত আগষ্টের মধ্যভাগ থেকেই দক্ষিনাঞ্চলে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করলেও গোটা মাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল প্রায় সাড়ে ৯ হাজার। মৃত্যু হয় ১৬৭ জনের। সেপ্টেম্বরে পরিস্থিতির নতুন মোড় নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ১৯৫ জনে হ্রাস পায়। তবে মৃত্যু হয়েছিল ২৩ জনের।
এদিকে চলতি মাসের প্রথম ১৪ দিনে বরিশাল অঞ্চলে ৯৩ জন করোনা পজিটিভ রোগী শনাক্ত হলেও গত ৪ দিনেই সংখ্যাটা ছিল ৫৫ জন। নতুন এ শনাক্তের মধ্যেও মহানগরী সহ বরিশাল জেলাই শীর্ষে রয়েছে। এ নিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় এ পর্যন্ত মোট করোনা পজিটিভ শনাক্তের সংখ্যা দাড়িয়েছে ৪৫ হাজার ৪৪৬ জনে। মৃত্যু হয়েছে ৬৭৯ জনের। আর আক্রান্ত ও মৃতের এ সংখ্যার মধ্যেও এখনো শীর্ষে বরিশাল মহানগরী। গোটা বিভাগের মাত্র ৬% জনসংখ্যার এ নগরনীতে এপর্যন্ত সরকারীভাবে করোনা শনাক্তের সংখ্যা প্রায় ১১ হাজার। মারা গেছেন ১০২ জন। আর মহানগনরী সহ বরিশাল জেলায় আক্রান্ত ১৮ হাজার ৩৫৫ জনের মধ্যে মারা গেছেন ২৩০ জন। পটুয়াখালীতে আক্রান্তের সংখ্যাটা ৬ হাজার ২৪১। মৃত্যু হয়েছে ১০৯ জনের। ভোলাতেও আক্রান্ত ৬ হাজার ৮৬৮ জনের মধ্যে মারা গেছেন ৯১ জন। পিরোজপুরে মোট আক্রান্ত ৫ হাজার ৩০৫ জনের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৮৩ জনের। বরগুনাতে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৯৬২। মৃত্যু হয়েছে ৯২ জনের। আর ঝালকাঠীতে ৪ হাজার ৬৬০ জন আক্রান্তের মধ্যে ৬৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আর সর্বশেষ হিসেবে এ অঞ্চলে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৪৪ হাজার ৬১৮ জন। সুস্থতার হার ৯৮.১৮% হলেও শনাক্তের গড় হার এখনো ১৯.৭১%। আর গত ৩ মাসে করোনা সংক্রমনে কোন মৃত্যু না হলেও এখনো গড় মৃত্যু হার ১.৪৯%।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন