শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানায় উদাসীনতা, নেই তদারকিও

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ জানুয়ারি, ২০২২, ৬:৩৮ পিএম

করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনসহ দেশের সামগ্রিক করোনা সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। এ অবস্থায় নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। তবে তৃতীয় দিনেও গণপরিবহনে বিধিনিষেধের লেশমাত্র দেখা যায়নি। সর্বত্রই দেখা গেছে উদাসীনতা। বিধিনিষেধ মানাতে সড়কে নেই কোনো ধরনের তদারকিও। আজ শনিবার (১৫ জানুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে এ চিত্র দেখা গেছে।

বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ বাসে অফিসগামী যাত্রীদের ঠাসাঠাসি করে ওঠানো হচ্ছে। স্বাস্থ্য সুরক্ষার নীতি মানছেন না যাত্রীদের অনেকে। মাস্ক থাকলেও তা কারও হাতে, কারও পকেটে। অধিকাংশ চালক ও সহকারীর মাস্ক ঠাঁই পেয়েছে থুতনিতে। দেশে গত কিছুদিন ধরে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা হু ‍হু করে বাড়ছে। শুক্রবার শনাক্তের সংখ্যা চার হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে নতুন ধরন ওমিক্রন উদ্বেগ বাড়িয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় গত ১১ জানুয়ারি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে সরকার ১১ দফা নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে, যা ১৩ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়েছে।

নির্দেশনা অনুযায়ী, উন্মুক্ত স্থানে সব ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সমাবেশ পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখাসহ ট্রেন, বাস ও লঞ্চে সক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী পরিবহন, সব ধরনের যানের চালক ও সহকারীদের করোনার টিকা নেওয়ার সনদ সঙ্গে রাখার কথা বলা হয়েছে। তবে ভিন্ন চিত্র দেখা গেল সড়কে। দেখা যায়নি কোনো তদারকিও। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত রাজধানীর শ্যামলী, কল্যাণপুর ও কলেজ গেট এলাকায় দেখা যায়, বাসগুলো যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা করছে। অধিকাংশ পরিবহনে নেই হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা জীবাণুনাশক স্প্রের ব্যবস্থা। চালকের সহকারীরা যাত্রী টেনে টেনে বাসে তুলছেন পুরনো অভ্যাসেই।

রাজধানী থেকে সাভার, আশুলিয়া, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, মিরপুর, মোহাম্মদপুর থেকে উত্তরা, আব্দুল্লাহপুরসহ বিভিন্ন রুটে চলাচল করছে বিভিন্ন কোম্পানির বাস। এর মধ্যে আছে বসুমতি, রইছ, ওয়েলকাম পরিবহন, মিরপুর মেট্রো সার্ভিস, বৈশাখী পরিবহন, প্রজাপতি, ৭নং বাস, গাবতলী এক্সপ্রেস ৮নং বাস, লাব্বাইক, মৌমিতা, ভূঁইয়া পরিবহন, ট্রান্স সিলভা, ঠিকানা, বাহন পরিবহন, সৌদিয়া মিনি বাস, আলিফ, অগ্রদূত, এস এম লাভলী, দিশারী, নিউ ভিশন, সজন, হিমাচল, তালুকদার ও সাভার পরিবহন। অধিকাংশ বাসে দেখা যায়, চিরচেনা রূপে দরজায় দাঁড়িয়ে হেলপার যাত্রী ডাকছেন, টেনে তুলছেন। যাত্রীদের কারও মাস্ক থুতনিতে, কারও হাতে, কারও পকেটে। আবার কারও কারও মাস্কই নেই। সব সিটে যাত্রী নেওয়ার পাশাপাশি দাঁড়িয়েও যাত্রী নেওয়া হচ্ছে। যাত্রী ওঠানো এবং নামানোর ক্ষেত্রে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি।

মোহাম্মদপুর থেকে আব্দুল্লাহপুর রুটে চলাচলকারী ভূঁইয়া পরিবহনের একটি বাসের চালকের সহকারী সুজনের সঙ্গে কথা বলতে চাইতেই থুতনি থেকে মাস্ক টেনে মুখে তোলেন তিনি। তারপর বলেন, বাসে হ্যান্ড স্যানিটাইজার আছে, যাত্রীরা চাইলে দেওয়া হচ্ছে। যাত্রীদের মাস্ক পরতে বলা হচ্ছে। অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া হচ্ছে না। অনেক পরিবহনের হেলপার ক্যামেরা দেখেই মাস্ক পরেছেন। এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও তারা জবাব না দিয়ে দরজা লাগিয়ে দেন।

রইছ পরিবহনের একটি বাসের হেলপারের মুখে মাস্ক নেই। চলন্ত অবস্থাতেই জানতে চাইলে ক্ষেপে যান তিনি। বলেন, মাস্ক নেই তো আপনার সমস্যা কি? ৮নং বাসের যাত্রী আলী সোবহান বলেন, পল্টনে যাব, অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছি। বাস পাচ্ছি তো সিট পাচ্ছি না। নিয়ম মানার বিষয়টি মাথায় থাকলেও তাড়া আছে। তাই ছুটে আসা বাসে দৌড়ে উঠতে হলো। কিন্তু বাসে তো হ্যান্ড স্যানিটাইজারই নেই। স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতন বলে জানান মৌমিতা পরিবহনের একটি বাসের যাত্রী। তাহলে মুখের মাস্ক থুতনিতে কেন? এমন প্রশ্ন করতেই তিনি বলেন, আমার মাস্ক কোথায় থাকবে তাতে আপনার সমস্যা হচ্ছে কেনো?

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন