কূটনৈতিক সংবাদদাতা : পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিতের লক্ষ্যে এখনই একটি গ্রহণযোগ্য ‘নির্বাচনী পন্থা’ (ম্যাকানিজম) বের করার তাগিদ দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। আগামী সব নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হতে হবে এবং এসব নির্বাচনে জনগণের আস্থা থাকতে হবে। তবে এ বিষয়ে কোনো পরামর্শ দেবে না ইইউ। গতকাল বিকেলে হোটেল সোনারগাঁওয়ে ঢাকা সফররত ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধিদল তাদের সমাপনী সংবাদ সম্মেলনে এ তাগিদ দেন। সংবাদ সম্মেলনে তার সাথে ঢাকাস্থ ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদুন উপস্থিত ছিলেন।
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এশিয়াবিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান জ্যাঁ ল্যামবার্টের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল গত বুধবার থেকে বাংলাদেশ সফরে রয়েছে। সফরকালে তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমীন চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমানসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিনিধি ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে সফরের বিস্তারিত তুলে ধরেন প্রতিনিধি দলের প্রধান। সেখানে তিনি বলেন, বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও মানবাধিকার, শ্রমমানের অগ্রগতি, ব্লগার ও মুক্তমনা লেখকদের নিরাপত্তা, ইউরোপের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য, বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ দমন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে তারা আলোচনা করেছেন। তারা তাদের উদ্বেগের বিষয়গুলো সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনায় তুলে ধরেছেন বলে জানিয়েছেন।
ইউরোপীয় পার্লামেন্ট প্রতিনিধি দলের নেতা জ্যাঁ ল্যাম্বার্ট বলেন, বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনে সর্বাধিক রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণের পরিবেশ সরকারকেই তৈরি করতে হবে এবং এজন্য রাজনৈতিক দল ও সংশ্লিষ্ট অংশীদারদের মধ্যে আলোচনা শুরু করা দরকার।
তিনি আরো বলেন, তবে এ বিষয়গুলো এদেশের মানুষকেই ঠিক করতে হবে। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালীন সরকার কাঠামো নিয়ে সব দলের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত প্রয়োজন। এ ব্যাপারে দ্রুত আলোচনা শুরু করা গেলেই ভালো। এজন্য নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা অবশ্যই শক্তিশালী করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই মানবাধিকার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে ল্যাম্বার্ট কথা বলেন। এসময় ব্লগার হত্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এসব হত্যার সুষ্ঠু সুরাহা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। এছাড়াও কয়েকটি দৈনিক পত্রিকার সম্পাদকের ইস্যুগুলোও পর্যবেক্ষণ করছেন বলেও জানান তারা।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংবাদ মাধ্যম গণতন্ত্রের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। সাম্প্রতিক সময়ে সম্পাদকদের নিয়ে যা ঘটছে তাতে আমাদের উদ্বেগ রয়েছে। সমালোচনা সহ্য করেই সরকারকে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।
রোহিঙ্গা ইস্যু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মিয়ানমারের নতুন সরকারকেই মূল দায়িত্ব নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সমঝোতা করতে হবে এ বিষয়ে।
সংবাদ সম্মেলনের আগে তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সঙ্গে বৈঠক করেন ইপি প্রতিনিধিরা। সার্বিক অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে, ইপিজেডগুলোতে ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার ও শ্রমিক-মালিক সুসম্পর্ক নিশ্চিত করতে আবারো সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন