নাটোরের সিংড়ায় আত্রাইয়ের একটি শাখা নদীর এক কিলোমিটার অংশ বেচে দিয়েছেন নেতারা। সেখানে বাঁধ দিয়ে পানি সেচা হচ্ছে মাছ ধরার জন্য। এতে চলনবিলে মাছের শূন্যতার পাশাপাশি বিলের জীববৈচিত্র নষ্ট হচ্ছে। পাশাপাশি নদীপথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যাতায়াত, বিশেষ করে কৃষকের উৎপাদিত ফসল ও জমি চাষাবাদে তেল-সার আনা-নেওয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
জানা গেছে, উপজেলার আনন্দনগর-কৃষ্ণনগর এলাকায় মাছ ধরার জন্য নদীর এক কিলোমিটার অংশ বিক্রি করা হয়েছে সাড়ে ১০ লাখ টাকায়। বিক্রির সঙ্গে জড়িত চামারী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল মালেকসহ স্থানীয় কয়েকজন নেতা-কর্মী। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য আব্দুল মালেক বলেন, এটা আত্রাই নদীর শাখা। সরকারি খাল হিসেবে পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরে এভাবেই এই খাল কেনাবেচা হয়। এলাকাবাসী জানান, সিংড়ার অধিকাংশ এলাকা চলনবিল বেষ্টিত।
মৎস্য ভান্ডার খ্যাত এই চলনবিলের সঙ্গে রয়েছে আত্রাই নদীর গভীর সম্পর্ক। বছরজুড়ে চলনবিলের লক্ষাধিক কৃষক তাদের উৎপাদিত ফসল ও তেল-সার আনা-নেওয়ায় কাজে এই নদীপথ ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু আত্রাই নদীর শাখা সিংড়া উপজেলার আনন্দনগর ও কৃষ্ণনগরে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নদীর দুই পাশে মাটির বাঁধ দিয়ে সেচে মাছ শিকারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে একদিকে চলনবিলে মাছশূন্যতা ও জীববৈচিত্র নষ্ট হতে বসেছে, অন্যদিকে কৃষকের উৎপাদিত ফসল ও জমি চাষাবাদে তেল-সার আনা-নেওয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। নদী সেচার কাজে ব্যস্ত আনন্দনগর গ্রামের রমিজুল ইসলাম ও পরোশ বলেন, তারা এই জায়গা ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ২০-২১ জন গ্রামবাসী ভাগে কিনেছেন। এই অর্থ স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল মালেক, কৃষ্ণনগর গ্রামের আব্দুস সালাম, আলমাস এবং কলম ইউনিয়নের কালিনগর গ্রামের আলম ও বদীকে দিতে হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, আনন্দনগর ঈদগাহ মাঠ এলাকায় নদীতে প্রায় দেড় মাস ধরে বাঁধ দিয়ে সেচে মাছ শিকারের প্রস্তুতি চলছে। ফলে কৃষকের চলাচলের একমাত্র নদীপথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে কৃষ্ণনগর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস সালাম বলেন, সরকারি খাল হলেও এখানে আমাদের নিজেদেরও কিছু জমি রয়েছে। আমরা যা করি সমাজের লোক নিয়েই করি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম এম সামিরুল ইসলাম বলেন, নদীতে বাঁধ দিয়ে সেচে কেউ মাছ শিকার করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন