মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

মেসিকে ছাপিয়ে ‘দ্য বেস্ট’ লেভা

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৯ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০১ এএম

একদিকে, গোল যেন ছেলেখেলা, তার পিঠে চড়ে পাওয়া রেকর্ড নিত্য সঙ্গী- এই নিয়েই গত দুই মৌসুম ধরে অসাধারণ ছন্দে রয়েছেন বায়ার্ন মিউনিখ ফরোয়ার্ড রবের্ত লেভান্দোভস্কি। আর বার্সেলোনায় গত মৌসুমটা দারুণ কেটেছিল লিওনেল মেসির। রেকর্ডের মালায় তিনিও শেষ করেছেন কাতালান অধ্যায়। পাশাপাশি জাতীয় দলের হয়ে দীর্ঘ ২৮ বছর পর আর্জেন্টিনাকে পাইয়েছেন কোপা আমেরিকার শ্রেষ্ঠত্বের স্বাদ। তাই কে পাচ্ছেন এবারের ফিফা দ্য বেস্ট অ্যাওয়ার্ড এ নিয়ে দ্বিধা ছিল অনেকই। শেষ পর্যন্ত আর্জেন্টাইন তারকাকে পেছনে ফেলে টানা দ্বিতীয়বারের মতো এ পুরষ্কার জিতে নিলেন পোলিশ স্ট্রাইকার।
গতপরশু রাতে সুইজারল্যান্ডের জুরিখে ফিফার ‘দ্য বেস্ট ফিফা ফুটবল অ্যাওয়ার্ডস’ অনুষ্ঠানে ২০২১ সালের ‘দ্য বেস্ট ফিফা ম্যানস প্লেয়ার’ পুরস্কারটি জিতে নিয়েছেন লেভান্দোভস্কি। সব জাতীয় দলের কোচ, অধিনায়ক এবং প্রতি দেশের সাংবাদিক ও ফুটবলপ্রেমীদের ভোটে বেছে নেওয়া হয় বর্ষসেরা ফুটবলারকে। তবে মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে এবারও জাঁকজমকপ‚র্ণ কোনো অনুষ্ঠান হয়নি। ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো ঘোষণা করেন বর্ষসেরা ফুটবলারের নাম।
বুন্দেসলিগায় গত মৌসুমটা দারুণ কাটিয়েছেন লেভান্দোভস্কি। মাত্র ২৯ ম্যাচে করেছেন ৪১ গোল করে কিংবদন্তি জার্ড মুলারের ৪০ গোলের রেকর্ড ভেঙে অনন্য উচ্চতায় উঠেছেন এ পোলিশ তারকা। জিতেছেন ইউরোপিয়ান গোল্ডেন শু। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের হয়ে অবশ্য আশানুরূপ ফলাফল করতে পারেননি লেভা। জাতীয় দলের হয়েও পারফরম্যান্স সে অর্থে ভালো ছিল না। কিন্তু তা বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। বায়ার্নের হয়ে অসাধারণ পারফরম্যান্সই টানা দ্বিতীয় বারের ফিফার বর্ষসেরা পুরষ্কার মিলে তার।
অন্যদিকে, ক্লাবের হয়ে গত মৌসুমে বড় কোনো ট্রফি জিততে পারেননি মেসি। জিতেছেন কেবল কোপা দেল রে। যদিও ধুঁকতে থাকা ক্লাবটিকে কক্ষপথে রেখেছিলেন তিনিই। লা লিগার সর্বোচ্চ গোলদাতাও হয়েছেন। গত মৌসুমে মোট গোল করেছেন ৪৭টি। তবে জাতীয় দলে ছিলেন বেশ উজ্জ্বল। ঘুচিয়েছেন আন্তর্জাতিক শিরোপার আক্ষেপ। আর্জেন্টিনার জার্সিতে কোপা আমেরিকার শিরোপা জয়। ১৯৯৩ সালের পর দেশকে মর্যাদার কোনো শিরোপা এনে দেওয়ার ম‚ল কারিগরই আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। কোপা আমেরিকার সর্বোচ্চ গোলদাতা ও সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন তিনি।
সালাহর সেরা তিনে জায়গা পাওয়াটা শুরু থেকেই কিছুটা অবাক করার ছিল। জাতীয় দল কিংবা ক্লাব, গত মৌসুমে কোথাও কোনো শিরোপা জিততে পারেননি তিনি। তবে ২০২০-২১ প্রিমিয়ার লিগে তৃতীয় হওয়া লিভারপুলের সেরা গোলদাতা ছিলেন তিনি; ২২ গোল করার পাশাপাশি সতীর্থদের দিয়ে করান পাঁচটি। লিগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিলেন তিনি।
ব্যালন ডি’অর জয়ের লড়াইয়েও মেসির প্রতিদ্ব›দ্বী ছিলেন লেভানদোভস্কি; কিন্তু ৩৩ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড হয়েছিলেন দ্বিতীয়। ফিফা বর্ষসেরার পুরস্কার জিতে সে দুঃখ ভোলার উপলক্ষ পেলেন তিনি, ‘সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। এই ট্রফি জিততে পেরে খুবই সম্মানিত এবং গর্ব অনুভব করছি। আমি জানি, এই ট্রফি আমাদের সতীর্থ এবং কোচদেরও; জয়ের জন্য আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করেছি। চারপাশে থাকা এই মানুষদের নিয়ে কাজ করাটা বিশেষ কিছু।’
নারী ফুটবলে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতেছেন বার্সেলোনার হয়ে গতবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও লা লিগা জয়ী স্প্যানিশ মিডফিল্ডার অ্যালেক্সিয়া পুতেলাস। সেরা হওয়ার লড়াইয়ে তিনি পেছনে ফেলেন ক্লাব সতীর্থ ও স্বদেশি জেনিফার এরমোসো এবং চেলসির হয়ে সুপার লিগ ও লিগ কাপ জয়ী অস্ট্রেলিয়ান ফরোয়ার্ড সামান্তা কারকে।
ধুঁকতে থাকা চেলসির দায়িত্ব নিয়েই দলটির মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন টমাস টুখেল। তাদেরকে জিতিয়েছিলেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা। অসাধারণ এই সাফল্যের পর এবার পেলেন স্বীকৃতি। পেপ গুয়ার্দিওলা ও রবের্তো মানচিনিকে হারিয়ে ফিফার বর্ষসেরা কোচ নির্বাচিত হয়েছেন এই জার্মান।
গত মার্চে প্রিমিয়ার লিগে আর্সেনালের বিপক্ষে অবিশ্বাস্য ভঙ্গিমায় করা এক গোলের সুবাদে ফিফার পুসকাস অ্যাওয়ার্ড জিতেছেন টটেনহ্যাম হটস্পারের এরিক লামেলা। ২০২০ সালের বর্ষসেরা গোলের পুরস্কারও জিতেছিলেন টটেনহ্যামেরই একজন- দক্ষিণ কোরিয়ার ফরোয়ার্ড সন হিউং-মিন। আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডারের নৈপুণ্যে পুরস্কারটি লন্ডনের ক্লাবটিতেই রইল।
ইংল্যান্ডের স্বপ্ন চ‚র্ণ করে ইতালির ইউরো জয়ের নায়ক জানলুইজি দোন্নারুম্মা ও জার্মানির গোলরক্ষক মানুয়েল নয়ারকে পেছনে ফেলে ফিফার বর্ষসেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার জিতেছেন এদুয়াঁ মঁদি।
ফিফপ্রো মেন্স একাদশ
গোলরক্ষক : জানলুইজি দোন্নারুম্মা (এসি মিলান/পিএসজি/ইতালি)। ডিফেন্ডার : ডেভিড আলাবা (বায়ার্ন মিউনিখ/রিয়াল মাদ্রিদ/অস্ট্রিয়া), রুবেন দিয়াস (ম্যানচেস্টার সিটি/পর্তুগাল), লিওনার্দো বোনুচ্চি (জুভেন্টাস/ইতালি)। মিডফিল্ডার : জর্জিনিও (চেলসি/ইতালি), এনগোলো কঁতে (চেলসি/ফ্রান্স), কেভিন ডি ব্রæইন (ম্যানচেস্টার সিটি/বেলজিয়াম)। ফরোয়ার্ড : ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো (জুভেন্টাস/ম্যানইউ/পর্তুগাল), আর্লিং হলান্ড (বরুশিয়া ডর্টমুন্ড/নরওয়ে), রবের্ত লেভানদোভস্কি (বায়ার্ন মিউনিখ/পোল্যান্ড) ও লিওনেল মেসি (বার্সেলোনা/পিএসজি/আর্জেন্টিনা)।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন