শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূলীয় যাত্রীবাহী স্টিমার সার্ভিস এখনো অনিশ্চিত

দফায় দফায় নতুন নৌযান সংগ্রহ ও পুনর্বাসনে শত কোটি টাকা ব্যায়

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ১৯ জানুয়ারি, ২০২২, ৮:১৩ এএম

গত দুই দশকে ৩টি নতুন নৌযান সংগ্রহ ও দুটির পুনর্বাসনে শত কোটি টাকা ব্যায়ের পরেও অনিশ্চয়তার আবর্তেই ঘুরপাক খাচ্ছে বরিশালের সাথে চট্টগ্রামের উপকূলীয় যাত্রীবাহী স্টিমার সার্ভিসটি। সব শেষ ২০১১ সালের মধ্যভাগে বন্ধ হয়ে যাবার পরে অনেক দেন দরবার আর খোদ নৌ পরিবহন মন্ত্রীর একাধীক ওয়াদার প্রেক্ষিতে বিআইডব্লিউটিসি সার্ভিসটি চালুর নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহন করে। সে আলোকে বিআইডব্লিউটিএ’র কনজার্ভেন্সী ও ড্রেজিং বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে গত ২ ডিসেম্বর বিআইডব্লিউটিসি এ রুট পরিক্ষামুলকভাবে একটি নৌযান পরিচালন করলেও বানিজ্যিক পরিচালনের বিষয়ে আর তেমন কোন অগ্রগতি নেই।

অথচ এ রুটের জন্যই ২০০২ সালে চীনা সাপ্লায়ার্স ক্রেডিটের আওতায় প্রায় ৩৫ কোটি টাকায় ‘এমভি বার আউলীয়া’ নামের একটি নতুন নৌযান সংগ্রহ ছাড়াও ২০ কোটি টাকা ব্যায়ে দুটি পুরনো নৌযান পূণর্বাশন করা হয়। উপরন্তু আরো প্রায় ৩৭ কোটি টাকা ব্যায়ে গত মার্চে ‘এমভি তাজউদ্দিন আহমদ’ ও ‘এমভি আইভি রহমান’ নামে দুটি নুতন নৌযান সংগ্রহে সরকার অর্থ প্রদান করে। এমনকি বিশ্ব ব্যাংকের সুপারিশে দেশের উপক’লভাগে নিরাপদ যাত্রী পরিবহনকে সরকার ‘গন দায়বদ্ধ সেবাখাত’ হিসেবে ঘোষনা করে এজন্য বিআইডব্লিউটিসি’কে প্রতি বছর নগদ ভতর্’কিও প্রদান করে আসছে।

কিন্তু গত দুই দশকে সরকারী শত কোটি টাকা ব্যায়ের পরেও ‘সচল নৌযানের অভাবে’ই ২০১১ সালে মধ্যভাগে বন্ধ হয়ে যাওয়া বরিশাল-চট্টগ্রাম উপক’লীয় নৌপথে যাত্রীবাহী স্টিমার সার্ভিস চালুর বিষয়টি অনিশ্চিত। অথচ বরিশাল-চট্টগ্রাম রুটের কথা বলেই সংস্থাটি ২০০২ সালে চীন থেকে ‘এমভি বার আউলীয়া’ সংগ্রহ ছাড়াও ‘এমভি আবদুল মতিন’ ও ‘এমভি আলাউদ্দিন আহমদ’ নামের দুটি নৌযান পূর্বাশনে সরকারী অর্থ সংগ্রহ করে। উপরন্তু গত পনের বছরে এমভি বার আউলীয়া’র ইঞ্জিন পরিবর্তন সহ দু দফার পূণর্বাশনে অরো প্রায় ১২ কোটি টাকা ব্যায় করা হয়েছে। এমনকি বরিশালÑচট্টগ্রাম উপক’লীয় রুটে যাত্রী পরিবহনের লক্ষ্যেই গত এপ্রিলে ‘এমভি তাজউদ্দিন আহমদ’ ও ‘এমভি আইভি রহমান’ নামে দুটি নুতন নৌযান সংগ্রহে সরকারী কোষাগার থেকেই অর্থ প্রদান করা হয়।

কিন্তু কবে দেশের দীর্ঘতম এ উপক’লীয় নৌপথে নিরাপদ যাত্রী পরিবহন শুরু হবে তা বলতে পারছেন না কেউ। গত ২ ডিসেম্বর এ নৌপথে পরিক্ষামূলক পরিচালনের পরে বিআইডব্লিউটিসি’র চট্টগ্রামের বানিজ্য ও মেরিন বিভাগ থেকে এ নৌপথের দুটি পয়েন্টে নাব্যতা সংকট সহ কয়েকটি সমস্যার কথা তুলে ধরে সদর দপ্তরে প্রতিবেদন দেয়া হয়। সে প্রেক্ষিতে বিআইডব্লিউটিসি’র তরফ থেকে নৌপথে যাত্রী পরিবহনের লক্ষে ভাটি মেঘনার ‘বামনীর নালা’ ও ‘সেলিম বাজার টেক’ এলাকায় ড্রেজিং করার অনুরোধ জানান হয়েছে।

তবে এ ব্যপারে বিআইডবিøউটিএ’র চট্টগ্রাম অঞ্চলের কনজার্বেন্সী ও পাইলট পরিদপ্তরের উপ-পরিচালক জানান,‘বামনীর নালা’ এলাকায় এ ধরনের নৌযান চলাচলের জন্য নাব্যতার কোন সংকট নেই। ‘সেলিম বাজার পয়েন্ট’এ নাব্যতা উন্নয়নে ইতোমধ্যে ড্রেজিং শুরু হয়েছে’ বলে জানিয়ে ‘সেখানে নৌ পথটি অত্যন্ত স্পর্ষকাতর হওয়ায় যথেষ্ঠ সতর্কতার সাথে ড্রেজিং করতে কিছুটা সময় লাগছে’ বলেও জানান তিনি। ‘তবে এরপরও আগামী একমাসের মধ্যে ড্রেজিং সম্পন্ন করার লক্ষে সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে’ বলে জানান বিআইডবিøউটিএ’র ঐ কর্মকর্ত।

এ ব্যাপারে বিআইডবিøউটিসি’র পরিচালক-বানিজ্য আশিকুজ্জামানের সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, ‘বিআইডবিøউটিএ নৌপথের ক্লিয়ারেন্স দিলে আমরা সার্ভিসটি চালুর উদোগ নেব। তবে যাত্রীবাহী সার্ভিস লাভজনক না হওয়ায় সব অভ্যন্তরীন ও উপক’লীয় রুটে নৌযান ইজারার মাধ্যমে যাত্রী সেবা নিশ্চিত করা’র কথাও জনান তিনি। কিন্তু নিজস্ব ব্যবস্থাপনা বা ইজারার মধ্যমে ঠিক কবে নাগাদ বরিশালÑচট্টগ্রাম উপক’লীয় নৌপথে যাত্রী পরিবহন শুরু হবে সে ব্যাপারে তিনি কিছু বলতে পারেন নি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন