বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

টিকা বিড়ম্বনায় দেশে আসতে পারছেন না অনেক নাবিক

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৯ জানুয়ারি, ২০২২, ৫:৩৩ পিএম

মহামারি করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের সংক্রমন রোধে বর্তমানে সরকারের ১১ দফা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর রয়েছে। এছাড়া সরকারের আগের নির্দেশনা অনুযায়ী, কোভিড-১৯ টিকা সনদ ছাড়া বাইরের কোনো দেশ থেকে কেউ বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারেন না। এসব কারণে বিশ্বব্যাপি ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা নাবিকরা বিরাট বিড়ম্বনায় পড়েছেন।
অনেক বাংলাদেশি নাবিকই জাহাজে অবস্থান করার কারণে এখনও টিকা গ্রহণ করতে পারেননি। জাহাজে নাবিকদের অবস্থানকাল ক্ষেত্রবিশেষে ৪ থেকে ৯ মাস লেগে যায়। বিভিন্ন দেশের বন্দরে করোনা প্রতিরোধে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। এ কারণেও অনেকে সময়মত জাহাজ থেকে ফিরতে পারেননি। এছাড়া বাংলাদেশে মেরিনারদের করোনার টিকা প্রদান তুলনামূলক দেরিতে শুরু হয়েছিল। এসব কারণে দেশের অধিকাংশ মেরিনার করোনা টিকা নিতে পারেননি।
যারা টিকা নিয়ে যেতে পারেননি তাদের অনেকের জাহাজ থেকে সাইন অফ (জাহাজ থেকে নামা) করে দেশে আসার সময় হয়েছে এখন। কিন্তু বর্তমান নিয়মের কারণে তারা দেশে আসতে পারছেন না। এতে তাদের কন্ট্রাক্টের চেয়েও অতিরিক্ত দিন জাহাজে অবস্থান করার আশংকা তৈরি হয়েছে। এছাড়া সাইন অফ করতে সমস্যা সৃষ্টি হলে আন্তর্জাতিক শিপিং কোম্পানিগুলো বাংলাদেশি নাবিকদের চাকুরি প্রদানে আগ্রহ হারাবে।
এ প্রসঙ্গে দেশের নামকরা মেরিন ম্যানিং এসেন্সি হক এন্ড সন্স এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ক্যাপ্টেন গোলাম মহিউদ্দিন কাদরি বলেন, ‘অনেক সীফেয়ারার যারা বর্তমানে জাহাজে আছেন, যাদের ভ্যাক্সিন দেওয়া নেই তারা কীভাবে বাড়ি ফিরবে? এ ব্যাপারে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। সীফেয়ারারের জন্যে ভ্যাক্সিন ছাড়া বাংলাদেশে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত রাখা জরুরি।’
বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরি বলেন, ‘টিকাসনদ ছাড়া দেশে প্রবেশ করার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞার কারণে বাংলাদেশি নাবিকদের মধ্যে বিশেষ করে বর্তমানে যারা জাহাজে কর্মরত আছেন তাদের মাঝে চরম হতাশা বিরাজ করছে। সরকারকে বাংলাদেশি নাবিকদের এ নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত রাখার জন্য দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার আহ্বান জানাচ্ছি। এছাড়াও নাবিকদের খুব দ্রুত বুস্টার ডোজের আওতায় নিয়ে আসা জরুরি।’
ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশি নাবিকদের সাইন অফ সহজীকরণে এ নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত না রাখলে নাবিক পরিবর্তন জটিল হয়ে পড়বে। যা বাংলাদেশি নাবিকদের আন্তর্জাতিক চাকুরির বাজারে বিরুপ প্রভাব ফেলবে। দেশ বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা হারাবে।’
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশি নাবিকেরা বছরে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার উপার্জন করে থাকেন।
এদিকে, বাংলাদেশি মেরিনারদের বেশিরভাগকেই সিঙ্গাপুর থেকে সাইন অফ করতে হয়। সিঙ্গাপুর মেরিটাইম কর্তৃপক্ষের সার্কুলার অনুসারে সিঙ্গাপুরে কোনো মেরিনারকে সাইন অফ করতে হলে আগের বন্দরে করোনার পিসিআর পরীক্ষা করতে হয়। কিন্তু অনেক বন্দরে তা সম্ভব হয় না। আবার সিঙ্গাপুরে সাইন অফ করে দেশে আসার জন্যও পুনরায় পিসিআর পরীক্ষা করতে হচ্ছে। ফলে সামগ্রিক প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল হয়ে পড়েছে।
এ কারণে বিদেশি শিপিং কোম্পানিগুলোর সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশি মেরিনার নিয়োগে আগ্রহ কমছে বলেও জানা গেছে। এর সাথে টিকা জটিলতা বেশি হলে সমস্যা আরও বাড়তে পারে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন