মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সম্পাদকীয়

গণতন্ত্রকে দাবিয়ে রাখা যায় না

কামরুল হাসান দর্পণ | প্রকাশের সময় : ২১ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০৫ এএম

বিগত কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল জাতীয় সরকার গঠনের দাবি জানিয়ে আসছে। বিভিন্ন সভা-সমাবেশে তারা এ সরকার গঠনের প্রয়োজনীয়তার কথা বলছে। তাদের যুক্তি, দেশে ‘গণতন্ত্র’ নেই। তাই গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে তারা এ দাবী তুলছেন। বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি জাতীয় সরকারের দাবী না করে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকার গঠনের দাবী করছে। দলটি সরকারকে পদত্যাগ করে এ সরকার গঠনের দাবী জানাচ্ছে। জাতীয় সরকার বা নির্দলীয় সরকারের দাবী, যেটাই হোক না কেন, ক্ষমতাসীন দল ও জোটের বাইরে থাকা দলগুলোর এ দাবীর সাথে সাজুয্য রয়েছে। তাদের দাবীর মূল অর্থ হচ্ছে, আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে নিরপেক্ষ বা জাতীয় সরকার প্রয়োজন। এর মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্রের সংকট উত্তরণ ঘটানো যাবে। তারা মনে করছে, ক্ষমতাসীন দল গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে ব্যর্থ হয়েছে, সুষ্ঠু নির্বাচন বলতে যা বুঝায় তা শেষ করে দিয়েছে, একনায়কতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার উদ্ভব ঘটিয়েছে। সাধারণ মানুষের মধ্যেও কমবেশি এমন ধারণা রয়েছে। তাদের অনেকে গণতন্ত্র অত না বুঝলেও এটা বুঝতে পারে যে, তাদের ভোটাধিকার খর্ব হয়েছে। নিজের ইচ্ছামতো প্রতিনিধি নির্বাচন করার ক্ষেত্রে তারা বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংস্থাও মনে করছে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র সংকুচিত এবং সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ নিশ্চিত করা যায়নি। এর একটি বড় প্রমাণ হচ্ছে, গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র যে গণতন্ত্র সম্মেলন করে তাতে বাংলাদেশের আমন্ত্রণ না পাওয়া। বিশ্বের শতাধিক দেশ এ সম্মেলনে আমন্ত্রণ পেয়েছে। বাইডেন প্রশাসনের পররাষ্ট্র নীতির অন্যতম প্রধান প্রতিশ্রুতি হচ্ছে, বিশ্বে গণতন্ত্রকে জোরদার করা এবং গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার অধীন দেশগুলোর গণতন্ত্রের প্রতি নজরদারি এবং তার উন্নয়নে সহায়তা করা। পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্মেলনে বাংলাদেশের আমন্ত্রণ না পাওয়ার বিষয়টি ‘কম গণতান্ত্রিক দেশগুলোকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে’ বলে একপ্রকার উড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এর কিছুদিন পরই যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে সামনে রেখে র‌্যাব ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন বর্তমান ও সাবেক ৭ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এ নিষেধাজ্ঞা দিয়ে দেশটি বুঝিয়ে দিয়েছে, আমাদের দেশে মানবাধিকার ও গণতন্ত্র অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় রয়েছে। বিরোধীদলগুলোর অভিযোগের সাথে এ নিষেধাজ্ঞার কারণের মিল রয়েছে। তবে জাতীয় সরকার বা নিরপেক্ষ-নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে এবং বিরোধী দলের কোনোটি যদি বিজয়ী হয়, তাহলে তারা কীভাবে মানবাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে, তার স্পষ্ট কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। আবার বর্তমান ক্ষমতাসীন দল যদি পুনরায় নির্বাচিত হয়, তাহলে তারা কি করবে, এটাও পরিষ্কার নয়। বলার অপেক্ষা রাখে না, শুধু বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর কাছেই নয়, সাধারণ মানুষের কাছেও একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন খুবই কাক্সিক্ষত। এর মাধ্যমে যারাই নির্বাচিত হোক না কেন, তাদের সবাই গ্রহণ করবে।

দুই.
দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর অন্যতম প্রধান ত্রুটি হচ্ছে, তারা ক্ষমতায় যাওয়ার আগে গণতন্ত্র, সুশাসন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা থেকে অর্থনৈতিক ও মানুষের জীবনমানের উন্নয়নে সুন্দর সুন্দর প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে। ক্ষমতায় যাওয়ার পর এসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে খুব কমই উদ্যোগী হয়। তখন ক্ষমতায় টিকে থাকাই তাদের কাছে মুখ্য লক্ষ্য হয়ে উঠে। এজন্য শুরুতেই বিরোধীদলগুলোর ওপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করে। তারা যাতে ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতায় থাকার চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে না পারে, এজন্য দমন-পীড়ন, দোষারোপ ও কুৎসা রটাতে বেশি সময় ব্যয় করে। তাদের আচরণে এমন ভাব ফুটে উঠে যে, তারা যেভাবে খুশি সেভাবে দেশ চালাবে। এই মনোভাবের কারণে বিরোধীদলগুলোর পক্ষ থেকে সরকারকে স্বৈরাচার, কর্তৃত্ববাদী কিংবা একনায়কতান্ত্রিক বলে আখ্যায়িত করা হয়। এ অভিযোগের যে ভিত্তি থাকে না, তা নয়। অন্যদিকে, ক্ষমতাসীনরা মনে করে, দেশ চালাতে গেলে গণতন্ত্রকে সীমিত করতে হবে। বেশি গণতন্ত্র দিলে দেশ চালাতে অসুবিধা। গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করার ক্ষেত্রে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর অন্তর্নিহিত এই মনোভাব যে বড় বাধা হয়ে আছে, তাতে সন্দেহ নেই। বর্তমান সরকারের শাসন ব্যবস্থাকে বিভিন্ন সময়ে কর্তৃত্ববাদী ও একনায়কতান্ত্রিক বলে দেশ ও বিদেশ থেকে বলা হয়েছে এবং হচ্ছে। সরকারকেও এর জোরালো প্রতিবাদ করতে দেখা যায়নি। বরং সরকার কম গণতন্ত্র বেশি উন্নয়নের তত্ত্ব অবলম্বন করে চলেছে। এর ফলে বিশ্ব ডেমোক্রেসি সূচকে বাংলাদেশের ঠাঁই হয়েছে, হাইব্রিড গণতন্ত্রের তালিকায়। এর অর্থ হচ্ছে, সরকার জনগণের তোয়াক্কা না করে তার খুশি মতো দেশ পরিচালনা করছে। সরকার স্বীকার করুক, না করুক, রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে এমন ধারণা বদ্ধমূল। তারা মনে করছেন, সরকারের মধ্যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে পাশ কাটিয়ে উন্নয়নের ধোঁয়া তুলে দীর্ঘকাল ক্ষমতায় থাকার অভিপ্রায় রয়েছে। ক্ষমতা থেকে যাতে নেমে যেতে না হয়, এজন্য ভিন্নমত যতই থাকুক, তা আমলে নিতে চাচ্ছে না। অথচ মুখে মুখে গণতন্ত্র ও জনগণের কথা কথা বলছে। সবকিছুতেই জনগণ শব্দটি লাগিয়ে বলছে, জনগণ তাদের রায় দিয়েছে। তার এ কথায় জনগণ বিশ্বাস করল কি করল না, তাতে কিছু যায় আসে না। এ ধরনের মনোভাবই রাজনৈতিক স্বৈরতন্ত্রের উদ্ভব ঘটায়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বর্তমানে দেশে এক ধরনের রাজনৈতিক স্বৈরতন্ত্র স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সর্বত্রই ক্ষমতাসীন দলের আধিপত্য। এটা অনেকটা সপ্তম শতকের ‘মাৎস্যন্যায়ে’র মতো। বড় মাছ যেমন ছোট মাছকে গ্রাস করে তেমনি ক্ষমতাবানরা সাধারণ মানুষকে নিষ্পেষিত করত এবং সম্পদ দখল করে নিত। এখন গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার প্রচলন হলেও ‘মাৎস্যন্যায়’র সেই অপসংস্কৃতি ভিন্নরূপে রয়ে গেছে। জোর যার মুল্লুক তার, এমন এক পরিস্থিতি চলছে। এখানে দুর্বলের স্থান নেই। অথচ গণতন্ত্রের মূল কথা হচ্ছে, সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা। তাদেরকে অধিকার সম্পর্কে স্বতন্ত্র ও সাহসী করে তোলা। এ কাজটি যথাযথভাবে কোনো রাজনৈতিক দলই করেনি বা করছে না। বর্তমান শাসন ব্যবস্থায় এই অধিকার সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে। মানুষের কথা বলার ওপর লাগাম টেনে ধরা হয়েছে। সংবাদপত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করা হয়েছে। নিবর্তনমূলক আইনের খড়গ সামনে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এতে সংবাদ মাধ্যমে চলছে এক ধরনের ‘সেল্ফ সেন্সরশিপ’।

যেকোনো রাজনৈতিক দলের ক্ষমতায় যাওয়ার লক্ষ্য থাকা স্বাভাবিক। অস্বাভাবিক হচ্ছে, জনগণের নাম ব্যবহার করে ক্ষমতায় গিয়ে জনগণের অধিকারের বিষয়টি ভুলে যাওয়া। অনেক সময় জনগণের সাথে তাকে বিরূপ আচরণ করতে দেখা যায়। জনগণের কাছ থেকে ভোট নেয়ার সময় তার আচরণ থাকে একরকম, ক্ষমতায় গিয়ে হয়ে যায় তার বিপরীত। আমাদের দেশের মানুষ প্রায় সব ধরনের শাসন ব্যবস্থার মধ্য দিয়েই এগিয়েছে। সামন্তযুগীয় শাসন থেকে শুরু করে স্বৈরশাসন, সামরিক শাসন এবং মাঝে মাঝে অপূর্ণাঙ্গ গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা। তবে জনগণের বহু কাক্সিক্ষত যে গণতন্ত্র তার স্বাদ তারা খুব কমই পেয়েছে। এ নিয়ে তারা কম আন্দোলন-সংগ্রাম করেনি। দেখা যায়, যাদের নেতৃত্বে গণতন্ত্রায়ন ও গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলন হয়েছে, তারাই ক্ষমতায় গিয়ে অগণতান্ত্রিক আচরণ করেছে। গণতন্ত্রের একটি উপাদান হলো নির্বাচন। যে নির্বাচনে জনগণ প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে তাদের শাসন কাজ পরিচালনার জন্য পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচিত করবে। দুঃখের বিষয়, এখন এ অবস্থাটা নামমাত্র হয়ে গেছে। আমরা দেখব, ভোট ব্যবস্থায় জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ হয়নি বললেই চলে। বিনা ভোটে নির্বাচনের অভিযোগ রয়েছে। এতে সরকার কিছু মনে করছে না। তার মনোভাব এমন, যেমনই হোক, নির্বাচন তো হয়েছে! এ ধরনের শাসন ব্যবস্থাকে ডেমোক্রেসি বলে না। একে বলা হয়, ‘ডেমার্কি’ বা নির্বাচনবিহীন গণতন্ত্র। পক্ষান্তরে পরিপূর্ণ ডেমার্কি সিস্টেমটাও মেনে চলা হতো, তাহলেও খুব খারাপ হতো না। কারণ হচ্ছে, এ ব্যবস্থায় লটারির মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচন করা হয়। যাদের নির্বাচিত করা হয়, তারা জনগণের মতামত এবং স্বার্থকে অধিক গুরুত্ব যেমন দিয়ে থাকে, তেমনি সিস্টেমের কারণে নিয়মতান্ত্রিক ও পক্ষপাতহীন হয়ে থাকে। দুঃখের বিষয়, আমরা এই ডেমার্কি শাসন ব্যবস্থার কিয়দংশও দেখছি না। বরং এখানে জনগণের প্রতি একধরনের দায়হীন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

তিন.
বৈশ্বিক গণতন্ত্র সূচক অনুযায়ী, হাইব্রিড গণতান্ত্রিক দেশ সেগুলোকেই বলা হয়, যেগুলোর স্কোর ১০-এর মধ্যে ৪ থেকে ৫.৯০। নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ, সরকারের কার্যকারিতা, রাজনৈতিক অংশগ্রহণ, রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও নাগরিক স্বাধীনতা শ্রেণীতে বাংলাদেশের স্কোর এর মধ্যে থাকায় হাইব্রিড তালিকায় পড়েছে। পরিসংখ্যান তুলে না ধরলেও বাংলাদেশের একজন সাধারণ মানুষও জানে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের পরিস্থিতি কি এবং কি অবস্থায় রয়েছে। এটা জানা বা বোঝার জন্য বিদেশি প্রতিষ্ঠানের জরিপ বা প্রতিবেদন প্রকাশের প্রয়োজন নেই। এখন ভিন্নমত পোষণের জায়গা এতটাই সংকুচিত যে, একজন সচেতন ও সৃজনশীল মানুষ পর্যন্ত কথা বলতে সাহস পান না। টেলিভিশন টক শোগুলোর দিকে যদি তাকানো যায়, তবে সেখানে দেখা যায় সরকারপন্থী স্তাবকদেরই জয়জয়কার। নামকাওয়াস্তে বিরোধীদলের দুয়েকজন নেতাকে রাখা হয়, সেটি জায়েজ করার জন্য। সেখানেও উপস্থাপকসহ সরকারপন্থীদের আধিক্যে তাদের কোনঠাসা হয়ে পড়তে দেখা যায়। অন্যদিকে, যারা সত্যিকার অর্থে নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে সরকারের ত্রুটি-বিচ্যুতি নিয়ে সমালোচনা করতেন, তাদেরকে টক শোগুলোতে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রাখা হচ্ছে। অর্থাৎ সরকারের বিপক্ষে যায়, এমন সমালোচনা অলিখিতভাবে নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়েছে। এগুলো ওপেন সিক্রেট হলেও মুখ ফুটে কেউ কিছু বলতে পারছে না। বলতে গেলেই নানা বাধা-বিপত্তি এমনকি হামলারও শিকার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। গণতান্ত্রিক পন্থায় সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ যে কেউ করতে পারে। গ্রহণ করা না করা সরকারের এখতিয়ার। সরকার যদি গণতান্ত্রিক মনোভাব সম্পন্ন হতো, তাহলে ভিন্নমত গ্রহণ করত এবং যুক্তি দিয়ে তা খণ্ডন করত। সরকারের মধ্যে এ ধরনের মনোভাবের অভাব রয়েছে। ঘুরিয়ে বললে, ভিন্নমতের প্রতি সরকারের এক ধরনের অসহিষ্ণুতা রয়েছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, বাংলাদেশের মানুষ অনেক ক্ষেত্রে সচেতন না হলেও, তাদের রাজনৈতিক সচেতনতা বেশ টনটনে। রাজনীতির ভাল-মন্দ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করা তাদের সহজাত প্রবৃত্তি। এর কারণ হচ্ছে, বৃটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক নানা ইস্যুতে সুদীর্ঘকাল ধরে তারা গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে। শত প্রতিকূলতার মধ্যেও তারা তা প্রতিষ্ঠায় ঝাপিয়ে পড়েছে। এই সময়ে গণতান্ত্রিক অধিকার এবং সরকারের নানা নীতির সমালোচনার সুযোগ সংকুচিত করা হলেও, ভেতরে ভেতরে তাদের প্রতিক্রিয়া ঠিকই হচ্ছে। তারা ভাল করেই জানে, গণতান্ত্রিক অধিকার কখনো দমিয়ে রাখা যায় না। এক সময় না এক সময় দমিত অবস্থার অবসান এবং গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। গণতন্ত্রকে দাবিয়ে আইয়ুব খানের দীর্ঘ এক দশকের স্বৈরশাসনের ঐতিহাসিক পতন সম্পর্কে ইতিহাস পাঠকমাত্রেই অবহিত। সেই শাসন ব্যবস্থার অবসান দেশের মানুষ আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে ঘটিয়েছে। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ব্যবস্থাকে দেশের মানুষ স্বৈরতান্ত্রিক আখ্যায়িত করেই সংগ্রাম করেছে এবং সফল হয়েছে। সেই শাসন ব্যবস্থা থেকে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় ফিরতে সব রাজনৈতিক দলের ঐক্যমতের ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন এবং গণতান্ত্রিক ধারার নবযাত্রার সূচনা হয়েছিল। এখন হয়ত অন্যকোনো প্রক্রিয়ায় হতে পারে। সেটা জাতীয় সরকার, নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকার বা অন্যকোনো প্রক্রিয়ায় হোক, মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হতে হবে।
darpan.journalist@gmail.com

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন