শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

মুসলিম বিশ্নের প্রধান শত্রু কে? -২

খালেদ সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী | প্রকাশের সময় : ২২ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০৪ এএম

ইসলামি বিশেষজ্ঞরা আধুনিকতার নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় মুসলিম দেশগুলোকে যেসব পরামর্শ দিয়েছেন সে ব্যাপারে তার রাষ্ট্রযন্ত্রের কি ভ‚মিকা রয়েছে প্রকাশিত খবরে তার উল্লেখ নেই। আন্তর্জাতিক প্রচার মাধ্যমগুলোতে মাঝেমধ্যে দুর্নীতি ও চরিত্র হনন তথা নৈতিক অবক্ষয়ের নানা ঘটনা প্রকাশ পেয়ে থাকে। এসব অপরাধ দমনে রাষ্ট্রযন্ত্রে কি ব্যবস্থা রয়েছে তা জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পাকিস্তানসহ মুসলিম দেশগুলোর রাষ্ট্রীয় প্রচার মাধ্যমে খ্যাতনামা উলামা-মাশায়েখ ইসলামের নৈতিকতা শিক্ষার ওপর কোরআন হাদীসের শিক্ষাগুলো তুলে ধরে থাকেন বলে জানা যায় এবং রাসূল (সা.), সাহাবায়ে কেরাম এবং মাশায়েখ বজুর্গানে দ্বীনের জীবন চরিতও বয়ান করে থাকেন, এরপরও কি দুর্নীতি, অপরাধ ইত্যাদি থামানো যাচ্ছে?

সূফিয়ায়ে কেরামের বিশেষ পরিভাষাগুলোর মধ্যে ‘সিদকে মা’কাল’ অর্থাৎ সত্যবাদিতা একটি। সত্যেক সাধক মাশায়েখ-উলামার জীবন চরিত পাঠ করে তাদের অনুসরণের মাধ্যমে নৈতিক এ চারিত্রিক গুণাবলি অর্জন করা সম্ভব। মুসলিম সন্তানদের এ শিক্ষা থেকে দূরে রাখার ফলে তাদের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা জন্ম নিচ্ছে সেজন্য মাতা-পিতা, অভিভাবক তথা সমাজই দায়ী। এরা বড় হয়ে যখন কর্মজীবনে প্রবেশ করে তখন দূর্নীতিকে তারা অপরাধ বলেও মনে করে না। দুর্নীতির কেতাবি লেখন তাদের কাছে অর্থহীন নীতি। বিলাসিতাপ্রবণ লোকেরা অর্থলোভে মত্ত হয়ে নানা অপকর্ম ও অন্যায় কাজ করতে দ্বিধা করে না। বিলাস প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হওয়ার জন্য অনেকে সহজলভ্য দূর্নীতির সাথে জড়িয়ে পড়ে।

সূফিয়ায়ে কেরামের আরেকটি কথা মনে পড়ে। তা হচ্ছে ‘আকলে হালাল’ অর্থাৎ হালাল বা বৈধ খাদ্য। হারাম উর্পাজন-কামাই ও খাদ্য সর্ম্পকে কোরআন ও হাদীসে বিশদ বিবরণ রয়েছে। নাহক-অন্যায়ভাবে লাভ করা বস্তু যেমন হারাম, একই পদ্ধতিতে অর্জন করা খাদ্য খাওয়াটাও হারাম। কোরাআনে হারামকৃত বস্তুগুলোর মধ্যে শরাব (মদ) ও শূকরের মাংস অন্যতম। মুসলমানদের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, হারাম খাদ্য বস্তু গ্রহণকারীর এবাদত আল্লাহর নিকট কবুল হয় না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে চল্লিশ দিনের কথা হাদীসে বর্ণিত হয়েছে।

আল্লাহর আদিষ্ট ও নিষিদ্ধ বিষয়গুলো মানা-না মানার সাথে আল্লাহর সন্তুষ্টি-অসন্তুষ্টি জড়িত। অর্থাৎ সাওয়াব (পূণ্য) ও আজাব (শাস্তি)। মদ ও শূকরের মাংস নিষিদ্ধ হওয়ার মধ্যে শারীরিক ক্ষতিকর দিকও রয়েছে। এগুলোর দ্বারা নানা মারাত্মক রোগ এমনকি মারাত্মক সংক্রামক (ছোঁয়াচে) রোগেরও সৃষ্টি হতে পারে। তার অনুক‚লে বিভিন্ন হাদীসও রয়েছে। খোদার সন্তুষ্টির আকারে কল্যাণ সওয়াব এবং অসন্তুষ্টি রূপে শাস্তি আজাব পরকালে ভোগ করতে হবে। দুনিয়াতেও ভোগ করতে হতে পারে।

এ খোদায়ী পরীক্ষা দুনিয়াতেও হতে পারে। ভয়-ভীতি, অভাব-অনটন, দুর্ভিক্ষ, সয়-সম্পত্তি, ফল-ফলানি এবং জান-মালের ক্ষয়-ক্ষতির মাধ্যমে, যার বর্ণনা রয়েছে সূরা বাকারায়। এসব পরীক্ষায় ধৈর্য্য ধারণের সওয়াবের কথাও বলা হয়েছে। চলমান প্রাণঘাতি বৈশি^ক করোনাভাইরাস, কোরআনে বর্ণিত উক্ত পাঁচটি খোদায়ী আজাবের একটি। বিভিন্ন উন্নত দেশ গবেষণা-সাধনায় সর্বশক্তি নিয়োগ করেও করোনা মহামরি থামাতে পারেনি।

ইতোমধ্যে বিশে^র নানা দেশে হানা দিয়েছে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ‘ওমিক্রন’ এর প্রকোপ। আমেরিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ও ভারতে করোনা যখন তীব্রতর, তখনই নতুনভাবে ওমিক্রনের হানা বিশ^বাসীকে শংকিত করে তুলেছে। সঙ্গে বিশে^র নানাদেশে এ প্রাকৃতিক বিপর্যয়-দুর্যোগ, দাবানল, ভ‚মিকম্প, পঙ্গপাল প্রভৃতি খোদায়ী গজব বিশ^বাসী প্রত্যক্ষ করেছে এবং করছে।

মুসলিম বিশে^র প্রধান শত্রæ কোনো পাপ বিশেষ নয়, বরং যারা পাপাচারের উদ্যোক্তা, জন্মদাতা, উৎসাহদাতা তারাই প্রকৃতপক্ষে প্রধান শত্রæ। বিভিন্ন পাপ ও গর্হিত কাজকে সুশোভিত, মনোমুগ্ধকর, আর্কষণীয় এবং অভিনবরূপে উপস্থাপন করা হয়, যা মানুষকে প্রলুব্ধ, বিভ্রান্ত ও বিপথগামী করে তুলছে। তাদের স্বরূপ মোটেই গোপন নয়। তারা প্রকাশ্যে- গোপনে সকল দেশেই বিচরণ করছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
Saidul Islam ২১ জানুয়ারি, ২০২২, ৭:০৭ এএম says : 0
আমেরিকা
Total Reply(0)
মোহাম্মদ রমিজ ২১ জানুয়ারি, ২০২২, ৭:১০ এএম says : 0
আমরা মুসলমান। কে বা কারা আমাদের শত্রু তা আমরা জানিনা। আমরা তা জানার জন্য চেষ্টাও করিনা। আমাদের মাতা-পিতারাও আমাদেরকে শিখান না কে বা কারা আমাদের শত্রু। অথচ ইয়াহুদী নাছারা, কাফির, মুশরিক, বেদ্বীন, বদদ্বীনেরা তাদের সন্তানদেরকে জন্মের পরেই শিক্ষা দেয় তোমাদের প্রধান শত্রু হচ্ছে মুসলমানেরা। তাদের ব্যাপারে তোমরা সচেতন থাকবে। তাদের বিরোধিতায় সদা মশগুল থাকবে। তাদের মতের সাথে কখনো মত মিলাবে না। তাদের রসম রেওয়াজ কখনো পালন করবে না। তাদের ছিরত ছুরত গ্রহণ করবেনা। (নাঊযুবিল্লাহ)
Total Reply(0)
তরিকুল ২১ জানুয়ারি, ২০২২, ৭:১০ এএম says : 0
প্রত্যেক মুসলমানের উচিত ছিল তাদের সন্তান জন্ম নেয়ার পর তাদের শত্রুর পরিচয় বলে দেয়া।
Total Reply(0)
বাহার বিন মুহিব ২১ জানুয়ারি, ২০২২, ৭:১০ এএম says : 0
পৃথিবীর প্রায় ৩শ কোটি মুসলমানদের প্রতি আমার উদাত্ত আহ্বান- আপনারা আজকেই আপনাদের সন্তানদেরকে বলে দিবেন, জানিয়ে দিবেন মুসলমানদের শত্রু কে বা কারা।
Total Reply(0)
জাকের হোসেন জাফর ২১ জানুয়ারি, ২০২২, ৭:১১ এএম says : 0
মুসলমানদের সর্বপ্রথম শত্রু হচ্ছে ইবলিস। মহান আল্লাহ পাক সূরা বাক্বারা-এর ২০৮ নম্বর আয়াত শরীফ-এ ইরশাদ করেন, “হে ঈমানদারগণ তোমরা ইসলাম-এর মধ্যে পরিপূর্ণভাবে দাখিল হও। আর তোমরা শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয় শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।”
Total Reply(0)
সত্য উন্মোচন ২১ জানুয়ারি, ২০২২, ৭:১১ এএম says : 0
আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সকলকে আমাদের শত্রুদেরকে চিনা ও জানার তাওফীক দান করুন। আমীন।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন