বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বন্ধুকে নিয়ে আদালতে দায় স্বীকার স্বামীর

চিত্রনায়িকা শিমু c

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০২ এএম

চিত্রনায়িকা রাইমা ইসলাম শিমু হত্যা মামলায় তার স্বামী খন্দকার শাখাওয়াত আলীম নোবেল ও স্বামীর বাল্যবন্ধু এস এম ওয়াই আব্দুল্লাহ ফরহাদ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গতকাল শুক্রবার সংশ্লিষ্ট আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আনোয়ারুল কবীর বাবুল এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আসামিদের রিমাণ্ড চলাকালেই গত বৃহস্পতিবার ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। এ সময় আসামিরা স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আসামি খন্দকার শাখাওয়াত আলীম নোবেল বিচারিক সাইফুল ইসলামের আদালতে এবং আসামি আব্দুল্লাহ ফরহাদ সিনিয়র বিচারিক হাকিম মিশকাত শুকরানার আদালতে জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এরপর তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। এর আগে, গত মঙ্গলবার ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাবেয়া বেগমের আদালত এ আসামিদের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে, শিমু হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হুমায়ূন কবির বলেন, শিমু হত্যার আসামি স্বামী শাখাওয়াত আলীম নোবেল ও তার বাল্যবন্ধু এস এম ওয়াই আব্দুল্লাহ ফরহাদ বৃহস্পতিবার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দি থেকে জানা যায়, নোবেলের বাল্যবন্ধু ফরহাদ প্রায়ই কলাবাগান এলাকায় তার বাসায় আসা-যাওয়া করত। এ সূত্র ধরে গত ১৬ জানুয়ারি আনুমানিক সকাল ১০টায় ফরহাদ তাদের বাসায় আসেন। এ সময় নোবেল তার স্ত্রী শিমুকে চা বানাতে বলেন। চা দিতে দেরি হওয়ায় নোবেল রান্না ঘরে ঢুকে দেখেন তার স্ত্রী শিমু মোবাইল ফোন দেখছে। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে নোবেল তার বন্ধুকে ডেকে নেন।
নোবেল ও তার বন্ধু ফরহাদ শিমুর গলাটিপে ধরলে ঘটনাস্থলেই শিমু মারা যান। পরে ফরহাদ একটি বস্তায় শিমুর লাশ ভরে সেটি সুতা দিয়ে সেলাই করেন। পরে বাড়ির দারোয়ানকে নাস্তা আনার কথা বলে বাইরে পাঠিয়ে শিমুর বস্তাবন্দি লাশটি তারা গাড়ির পেছনে রাখেন। নোবেল ও ফরহাদ লাশটি নিয়ে রাজধানীর মিরপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় গুম করার জন্য সুযোগ খুঁজতে থাকেন। সুযোগ না পেয়ে লাশটি নিয়ে সন্ধ্যায় তারা আবার বাসায় ফিরে আসেন। ওই দিন রাতেই আবার লাশটি নিয়ে তারা বছিলা সেতু দিয়ে কেরানীগঞ্জের হযরতপুর এলাকায় যান। এ সময় সুযোগ বুঝে তারা আলীপুর ব্রিজের অদূরে একটি রাস্তার পাশে বস্তাবন্দি অবস্থায় শিমুর লাশটি ফেলে পালিয়ে যান।
এএসপি হুমায়ূন কবির বলেন, ১৭ জানুয়ারি সকালে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ অজ্ঞাত হিসেবে শিমুর লাশ উদ্ধার করে। পরে ঢাকা জেলা পিবিআইয়ের সহায়তায় অভিনেত্রী শিমুর লাশ শনাক্ত করে পুলিশ। শিমুর লাশ বহনকারী গাড়িতে থাকা একটি সুতার বান্ডেল উদ্ধার করে পুলিশ। শিমুর লাশ রাখা বস্তার সেলাইয়ের সঙ্গে ওই সুতার মিল পাওয়ায় পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে নোবেল ও তার বন্ধুকে ১৭ জানুয়ারি রাতে আটক করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তথ্য না দিলেও তিন দিনের রিমাণ্ড শেষে আদালতে তোলার পর তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
সংবাদ সম্মেলন উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কেরানীগঞ্জ সার্কেল সাহাবুদ্দীন কবীর, কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ওসি আবু ছালাম মিয়া, ওসি তদন্ত মো. রোমজানুল হক ও ওসি অপারেশন মো. আশকুর রহমান প্রমুখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
Rinku Chowdhury ২২ জানুয়ারি, ২০২২, ১:৪০ এএম says : 0
সন্দেহ নর্দমার পানির মতোই যেদিকে যায় সর্বনাশ করে ছাড়ে।সন্দেহ করে খুন করে কি লাভ হলো! নিজের যা ভালো কাজ সব নষ্ট হলো।আর ফাঁশি অবধারিত। বাচ্চাদের কথা বাবারা কখনোই চিন্তা করেন না। কি হবে বাচ্চাদের।যতোই আপনজন থাকুক মায়ের মতো কেউ নয়।ধিক্কার এই সমাজের কিছু পুরুষদের।যাঁরা ভাবেন সন্দেহ করে নিজে ভালো থাকবেন এটাই চরম ভুল
Total Reply(0)
MD Rahat Bin Kamal ২২ জানুয়ারি, ২০২২, ১:৪১ এএম says : 0
আস্তে আস্তে পরকীয়া সব ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, আসল দূষি তো সেই যে ছেলেটি বিবাহিত মেয়ের মন কেড়ে নিতে চাইছে ।
Total Reply(0)
Manha Rahmah ২২ জানুয়ারি, ২০২২, ১:৪১ এএম says : 0
ফাঁসি হোক। যত অন্যায় করুক কাওকে জানে মেরে ফেলার অধিকার কারো নাই। একটা ভালো পুরুষ কখনোই তার বউ কে মেরে ফেলতে পারে না।
Total Reply(0)
Shahidur Rahman Rubal ২২ জানুয়ারি, ২০২২, ১:৪২ এএম says : 0
স্বামীর হাতে স্ত্রী খুনের মূল ঘটনায় পরকীয়া থাকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়
Total Reply(0)
মুন আকাশ ২২ জানুয়ারি, ২০২২, ১:৪২ এএম says : 0
এই খুন নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই হয়েছে। শিমুর ভাইকে রিমান্ডে দিলে সব সত্য বেরিয়ে আসবে। তার স্বামী করে থাকলে আরও আগেই করতে পারতো।
Total Reply(0)
Hridoy Ayina ২২ জানুয়ারি, ২০২২, ১:৪২ এএম says : 0
আহ কত আফসুস যদি ইসলামের পথে চলতো তাহলে আজকে এ ধরনের মৃত্যুর শিকার হতে হতো না
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন