শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ব্যয় বাড়ছে ২৬২ কোটি

ঢাকা-আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০০ এএম

রাজধানী ও আশপাশের এলাকা যানজট নিরসনে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। সফলভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকার সঙ্গে ৩০টি জেলার সহজ সংযোগ স্থাপিত হবে। উত্তরবঙ্গের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থাও হবে যানজটমুক্ত। পাশাপাশি যানজটমুক্ত হবে আবদুল্লাহপুর-আশুলিয়া-বাইপাইল-চন্দ্রা এলাকা।

প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হিসেবে বলা হয়েছে, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শুরু করে আবদুল্লাহপুর-আশুলিয়া বাইপাইল হয়ে নবীনগর মোড় এবং ইপিজেড হয়ে চন্দ্রা মোড় পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করে যানজট নিরসন করা। তবে এ প্রকল্পের ব্যয় আরও ২৬২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বাড়ছে। পাশাপাশি প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়ও বাড়ছে চার বছর। ইতোমধ্যেই প্রকল্পের ব্যয় ও সময় বাড়ানোর প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। সেতু কর্তৃপক্ষের এই প্রস্তাবনা যাচাই-বাছাই করে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উপস্থাপন করা হবে।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নানা খাতের কাজ বাড়ছে। ফলে প্রকল্পটি সংশোধন করা হবে। প্রকল্পের আওতায় র‌্যাম্প নির্মাণের পরিমাণ অপরিবর্তিত রেখে এ খাতে ৫২ কোটি টাকা ব্যয় বাড়তে পারে। দুই লেনবিশিষ্ট নবীনগর ফ্লাইওভারেও ব্যয় বাড়বে। অ্যাট-গ্রেড রোড পুনঃনির্মাণ (২ লেন + ২ লেন সার্ভিস সড়কসহ) বাবদ এখাতে ৪১ কোটি ৯৩ লাখ ৬৮ হাজার টাকা ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। দুই লেন ব্রিজ নির্মাণের পরিমাণ অপরিবর্তিত রেখে এ খাতে প্রস্তাব করা হয়েছে ১৯ কোটি ৭৩ লাখ ৫৬ হাজার টাকা ব্যয় বাড়ানোর।

এছাড়া ওভারপাস, ফ্লাইওভার, ইউটিলিটির জন্য ড্রেনেজ এবং ডাক্ট নির্মাণ, টোল প্লাজা ও কাস্টমস ডিউটিস কন্সট্রাকশন খরচের পরিমাণ অপরিবর্তিত রেখে এ খাতে মোট ৬৪ কোটি ৫৭ লাখ ৩২ হাজার টাকা ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। ২০১৭ সালের সালের অক্টোবরে অনুমোদিত মূল প্রকল্পের ব্যয় ধরা ছিল ১৬ হাজার ৯০১ কোটি ৩২ লাখ টাকা। যার মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি অর্থ ঋণ দেয়ার কথা বলেছিল চীন। যার অঙ্ক ছিল ১০ হাজার ৯৪৯ কোটি টাকা। ২৬২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা খরচ বাড়ানোর ফলে এখন প্রকল্পের মোট ব্যয় দাঁড়াচ্ছে ১৭ হাজার ১৬৩ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। তবে এক্ষেত্রে চীনের ঋণ আর বাড়ছে না।

প্রকল্পটি অনুমোদনের প্রায় চার বছর পর গত ২৮ অক্টোবর সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সঙ্গে চীনের ওই ঋণচুক্তি সই হয়েছে। চুক্তির আওতায় শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশকে নয় হাজার ৬৬৯ কোটি টাকা ঋণ দিতে রাজি হয় চীনা এক্সিম ব্যাংক। দেশটির পলিসি প্রিফারেন্সিয়াল বায়ার্স ক্রেডিটের (পিবিসি) আওতায় এ ঋণ দেয়ার সিদ্ধান্ত জানায় ব্যাংকটি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঘাটতি ঋণ এক হাজার ২৮০ কোটি টাকাসহ বেড়ে যাওয়া ব্যয় ২৬২ কোটি টাকাও সরকারি কোষাগার থেকে মেটানো হবে। প্রথমে সরকারি অংশে প্রকল্পে অর্থায়ন পাঁচ হাজার ৯৫১ কোটি টাকা থাকলেও এখন তা বেড়ে দাঁড়াচ্ছে সাত হাজার ৪৯৪ কোটি টাকা। ফলে সবমিলিয়ে এক হাজার ৫৪২ কোটি টাকা বাড়তি ব্যয় করবে সরকার। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২২ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পের কাজ শতভাগ সম্পন্ন হওয়ার সময় নির্ধারণ ছিল। মেয়াদ চার বছর বাড়িয়ে এখন ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।

চলতি (২০২১-২০২২) অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে চলমান প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত আছে প্রকল্পটি। এর আওতায় ৩২২ কোটি ৭২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া আছে। অনুমোদিত মূল প্রকল্পে কন্টিনজেন্সি প্রাইস ছিল মোট প্রকল্প ব্যয়ের ৪ শতাংশ, সংশোধিত প্রকল্পে এ খাতে ৮ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। ভাতা, সম্মানী , আউটসোর্সিং কর্মী, পেট্রল, লুব্রিকেন্ট, স্টেশনারি, যানবাহন মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণসহ অন্যান্য খাতে ব্যয় বৃদ্ধিরও প্রস্তাব করা হয়েছে।

সেতু বিভাগের যুগ্ম-সচিব (উন্নয়ন) ওমর মো. ইমরুল মহসিন বলেন, চীন প্রথমে যে পরিমাণ ঋণ দিতে চেয়েছিল তা দেয়নি (এক হাজার ২৮০ কোটি কম দিয়েছে)। চীন শুধু টানেলে ১০০ শতাংশ ঋণ দিয়েছে। প্রকল্প ঋণ কমার কারণে জিওবি খাত থেকে টাকা বাড়বে। এজন্য প্রকল্পের ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) সংশোধন করতে হবে। ইতোমধ্যেই প্রকল্পের সংশোধন প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছি। প্রকল্পের ব্যয়ের সঙ্গে সময়ও বাড়বে। তিনি আরও বলেন, প্রকল্পের কাজ ঠিকমতো চলছে। অনেক আগে শুরু হয়েছে প্রাথমিক কাজ।###

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
Wahid Zaman ২৩ জানুয়ারি, ২০২২, ২:১৩ এএম says : 0
শতভাগ সচ্চতার জন্য একমাত্র সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়া হোক।নির্ধারিত সময়ের আগেই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।
Total Reply(0)
Juwel Nath ২৩ জানুয়ারি, ২০২২, ২:১৪ এএম says : 0
আমাদের মতো জনবহুল দেশে চারলেনের এক্সপ্রেস ওয়ে করা ভবিষ্যতে কোন কাজে আসবে না। প্রতি বছর যে হারে ঢাকার জনসংখ্যা ও গাড়ি বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে আগামি আট দশ বছরে এই এক্সপ্রেসওয়ে জানজটে পরিণত হবে। আমাদের মতো দেশের জন্য আট লাইনের প্রশস্ত এক্সপ্রেস ওয়ে প্রয়োজন। যাতে চল্লিশ পঞ্চাশ বছর পর্যন্ত টেকসই হতে পারে। চারলেনের করে কোন লাভ হবে না।
Total Reply(0)
Ahmed Nazir ২৩ জানুয়ারি, ২০২২, ২:১৪ এএম says : 0
গাজীপুর রোডের মতো অবস্থা হবে, চলমান রাস্তাকে ধর্ষিত করে তার উপর দিয়ে আরেকটি রাস্তার কাজ।
Total Reply(0)
Md Asadul Alam ২৩ জানুয়ারি, ২০২২, ২:১৪ এএম says : 0
আমাদের মত গরিব দের জন্য ও টুল বিহীন রাস্তা রাখবেন দয়া করে।দেশ তো সবারি বাবার নাকি?
Total Reply(0)
Ab Rayhan ২৩ জানুয়ারি, ২০২২, ২:১৫ এএম says : 0
শুধু উন্নয়ন আর উন্নয়ন, এদিক দিয়ে চাল ডাল নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আকাশচুম্বী, সেদিকে কোন খেয়াল নাই কারো
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন