শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

সেনা দিয়ে ভোটযন্ত্রের দখল নিতে চেয়েছিলেন ট্রাম্প!

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৩ জানুয়ারি, ২০২২, ৪:২৩ পিএম

ডোনাল্ড ট্রাম্প যে ২০২০-র ভোটে হেরেও জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ক্ষমতায় থাকার ছক কষেছিলেন— তা আরও এক বার সামনে এল সদ্য প্রকাশ্যে আসা এক খসড়া নির্দেশে। হোয়াইট হাউসে তিন পাতার একটি নির্দেশের খসড়া তৈরি করা হয়েছিল, যেটিতে ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য অবিলম্বে সব মেশিন, সরঞ্জাম, বৈদ্যুতিন ভাবে সংরক্ষিত তথ্য এবং নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করতে বলা হয়েছিল প্রতিরক্ষা সচিবকে। ঘটনাচক্রে ২০২০-র ১৬ ডিসেম্বরের সেই নির্দেশে শেষ পর্যন্ত ট্রাম্পের স্বাক্ষর করা হয়নি।

নির্দেশটিতে ভোট সংক্রান্ত যন্ত্র-সরঞ্জাম ও তথ্য কব্জায় নেওয়ার কথা বলা হয়েছে স্পষ্ট ভাবে। মনে করা হচ্ছে, মার্শালদের দিয়ে দেশের ৫০টি প্রদেশের ব্যালট ‘পুনর্গণনার জন্য’ বাজেয়াপ্ত করার পরিকল্পনা করছিল ট্রাম্প প্রশাসন। বিশেষ নিশানায় ছিল ব্যালট চিহ্নিত করার টাচ-স্ক্রিন মেশিনগুলিও। এখানেই শেষ নয় ভোটের যন্ত্র-নথি-তথ্য বাজেয়াপ্ত করলে অভিযোগের ঝড় ওঠা নিশ্চিত বুঝে, তার মোকাবিলায় আগেভাগেই এক জন বিশেষ আইনজীবী নিয়োগের কথাও বলা হয়েছিল ওই খসড়ায়।

ইভিএমে যে কারচুপি হয়, নানা ভাবে তা স্পষ্ট হয়ে ওঠায় বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্রের পাশাপাশি আমেরিকায় কাগজের ব্যালটও ব্যবহার হয়। কিন্তু সেই কাগজের ব্যালট গোনা থেকে শুরু করে ভোটারদের স্বাক্ষর যাচাই— বিভিন্ন পর্যায়ে বৈদ্যুতিন যন্ত্রের ব্যবহার কিন্তু চলেই আসছে। ফলে ট্রাম্প-বাহিনী এক বার সেই সব যন্ত্র কব্জা করার সুযোগ পেলে হয়তো জো বাইডেনের প্রেসিডেন্ট হওয়াই হত না। পরে ২০২১-এ ক্যাপিটল হিলে হামলায় ইন্ধন জুগিয়ে ক্ষমতার হস্তান্তর রোখার চেষ্টা করেছিলেন ট্রাম্প। যে কারণে তাকে ইমপিচড-ও হতে হয়েছে।

বিস্ফোরক খসড়া-নির্দেশটির প্রকাশ রোখার জন্য ট্রাম্প অনুগামীরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট তাদের আর্জি খারিজ করে দিয়ছে। যার ফলে ক্যাপিটল হিলে হামলার তদন্ত করেছে যারা, সেই আমেরিকান প্রতিনিধিসভার সিলেক্ট কমিটির হাতে চলে এসেছে ৭৫০টিরও বেশি রেকর্ড। তিন পাতার খসড়াটি তার অন্যতম। এটি প্রকাশ করেছে ভার্জিনিয়ার রাজনৈতিক সংবাদ পরিবেশন সংস্থা ‘পলিটিকো’।

ট্রাম্পকে ক্ষমতায় রাখার পথ কী হতে পারে, একটা পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজ়েন্টেশনে তার পথ বাতলেছিলেন হোয়াইট হাউসের তৎকালীন চিফ অব স্টাফ মার্ক মিডোজ। গত বছর তা সিলেক্ট কমিটির হাতে এসেছে। দেখা যাচ্ছে, মার্কের ছকের সঙ্গে সদ্য প্রকাশ হওয়া খসড়া নির্দেশের মিল রয়েছে।

২০২০-র ভোট বাতিলের জন্য চেষ্টা হয়েছে অন্য ভাবেও। কয়েক মাস ধরে আইনজীবী সিডনি পওয়েল, নিউ ইয়র্কের প্রাক্তন মেয়র রুডি জুলিয়ানির মতো ট্রাম্প ঘনিষ্ঠরা প্রচার করে যাচ্ছিলেন, ভোট-মেশিন হ্যাক করা হয়েছে। ভেনিজুয়েলা, কিউবা এবং সম্ভবত চীনের মাধ্যমে কমিউনিস্টরা আমেরিকার নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে অর্থ ঢেলেছে। যদিও ট্রাম্প নিযুক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল বিল ব্রার-ই ভোটে বিদেশি প্রভাব ও কারচুপির সেই সব অভিযোগ খারিজ করে দেন এবং ক্যাপিটল হিলে হামলার সূত্রে ইমপিচ করা হয় ট্রাম্পকে।

সিডনি-রুডিদের দাবি ছিল, জর্জিয়াতে ব্যবহৃত টাচ-স্ক্রিন ব্যালট মার্কিং মেশিন যারা তৈরি করেছে, সেই সংস্থাগুলিতে বিদেশি মালিকানার ভাগ ও বিদেশের প্রভাব যথেষ্ট। লাগাতার এই প্রচারের বিরুদ্ধে ‘ডোমিনিকান’ ও ‘স্মার্টম্যাটিক’ নামে দু’টি সংস্থা কয়েকশো কোটি ডলারের মানহানির মামলা ঠুকেছে সিডনি ও রুডির বিরুদ্ধে। সিলেক্ট কমিটিও তদন্ত চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে। শুক্রবার সামনে আসা খসড়া নির্দেশে ওই টাচ-স্ক্রিন যন্ত্রগুলিকেই নিশানা করার কথা রয়েছে। সূত্র: পলিটিকো।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন