মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান দিবস আজ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০০ এএম

‘গুচ্ছ গুচ্ছ রক্তকরবীর মতো কিংবা সূর্যাস্তের/ জ্বলন্ত মেঘের মতো আসাদের শার্ট/ উড়ছে হাওয়ায় নীলিমায়’ (শামসুর রাহমান)। ২০ জানুয়ারি আসাদ শহীদ হওয়ার পর কবি এই কবিতা লেখেন। সেই ২১, ২২, ২৩ জানুয়ারি ধারাবাহিক আন্দোলনের পথ ধরে ২৪ জানুয়ারি ঘটে গণঅভ্যুত্থান।

ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান দিবস আজ। ১৯৬৯ সালের ২৪ জানুয়ারি বাঙালির স্বাধিকার আদায়সহ পাকিস্তানি স্বৈরশাসক জেনারেল আইয়ুব খানবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে মতিউর রহমান, মকবুল, রুস্তমসহ ৫ জন শহীদ হন। তাদের রক্তের সিঁড়ি বেয়ে আইয়ুববিরোধী গণআন্দোলনসহ স্বাধীনতা আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ নেয়।

জাতির মুক্তিসনদ ৬ দফা দেয়ার কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝোলাতে চেয়েছিলো শাষকগোষ্ঠী। কিন্তু সেদিন বিক্ষুব্ধ বাংলার মানুষ দ্রোহের আগুনে জ্বলে উঠে ব্যাপক গণঅভ্যুত্থান-গণবিস্ফোরণের মুখে আইয়ুব খান ক্ষমতাচ্যুত হন। কারাগার থেকে মুক্তি পান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন। পৃথক বাণীতে গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদনসহ তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন তারা।

বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান তাৎপর্যপূর্ণ মাইলফলক। ১৯৫২ ভাষা আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসন, শোষণ ও বঞ্চনা থেকে বাঙালিকে মুক্ত করতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬ সালে ঐতিহাসিক ৬ দফা ঘোষণা করেন। এতে স্বাধিকার আন্দোলনের গতি তীব্রতর হলে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা করে বঙ্গবন্ধুকে বন্দি করে। এর বিরুদ্ধে ছাত্র-কৃষক-শ্রমিক-জনতার দেশব্যাপী দুর্বার ও স্বতঃস্ফূর্ত গণআন্দোলন শুরু হয়। এক পর্যায়ে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ১৯৬৯ সালের ২৪ জানুয়ারি ঢাকায় হরতালের ডাক দেয়।

এই হরতাল চলাকালে সচিবালয়ের সামনে আবদুল গণি রোডে শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশের গুলিতে বকশীবাজার নবকুমার ইনস্টিটিউটের দশম শ্রেণির মেধাবী ছাত্র মতিউর রহমান মকবুল, রুস্তমসহ ৫ জন শহীদ হন। সেদিন মতিউরের বুক পকেটে পাওয়া গিয়েছিল একটি চিরকুট। তাতে লেখা ছিল, ‘মা, আমি মিছিলে যাচ্ছি। যদি ফিরে না আসি, তুমি মনে করো তোমার ছেলে বাংলার মানুষের জন্য জীবন দিয়ে গেছে’। ইতি- মতিউর রহমান, ১০ম শ্রেণী, পিতা আজহার উদ্দিন মল্লিক, নবকুমার ইন্সটিটিউট। ন্যাশনাল ব্যাংক কলোনি, মতিঝিল।’

এর আগে ২০ জানুয়ারি পুলিশের গুলিতে আসাদুজ্জামান আসাদ শহীদ হওয়ায় গোটা পূর্ব পাকিস্তান এমনিতেই বিক্ষোভে তেতে উঠেছিল। ২৪ জানুয়ারি মতিউরদের শহীদের মধ্য দিয়ে সামরিক শাসক আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানে ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ গণআন্দোলন দুর্বার গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়।

এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বাঙালির অবিস্মরণীয় বিজয়, একত্তরের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ, ২৫ মার্চের গণহত্যা ও ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণার পথ ধরে ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ শেষে ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হয়।

দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠন আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করেছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন