বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

কাঁদতেও পারেন না!

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৬ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০১ এএম

রোজ সকালে ঘুম ভাঙার পর পানির বোতলের দিকে হাত বাড়ান অনেকেই। সাত সকালে গলা শুকোলে ইনিও পানি খেতে বাধ্য হন। তবে সেই পানি জিভ ছুঁয়ে গলায় নামলে মনে হয় পানি নয় বিষপান করছেন। ইনি অন্য কোনও বিশ্বের মানুষ নয়, তবে তার দুনিয়াটা অনেক আলাদা। তার নাম রেচেল উইক। রেচেলের পানিতে অ্যালার্জি।

বাথটবে শরীর ডুবিয়ে আরামের স্নান অনেকের কাছে স্বর্গীয় অনুভূতি হতে পারে। রেচেলের কাছে তা কিন্তু দুঃস্বপ্ন। তার মনে হয় সারা শরীরে তীব্র রাসায়নিক ঘষে দিচ্ছে কেউ। রেচেলের দুনিয়ায় পানি জীবন নয়, বরং মরণ যন্ত্রণার সমান। যে কোনও ধরনের পানির স্পর্শ- তা যদি তার নিজের ঘাম বা অশ্রুও হয় তবে তা রেচেলকে যন্ত্রণায় কাতর করে ফেলে। লালচে হয়ে ফুলে ওঠে ত্বক। তীব্র জ্বালা, চুলকানির মতো অস্বস্তিও হতে থাকে। তার সঙ্গে আসে ভয়ানক ক্লান্তি বোধ। রেচেলের কথায়, ‘আমার মনে হয় যেন আমি ম্যারাথন দৌড়ে এসেছি। এমন হলে আমাকে কোথাও গিয়ে বিশ্রাম নিতে হয়। বেশ খানিক ক্ষণ পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করি।’

রেচেলের এই পানিতে অ্যালার্জির অসুখের একটি নাম আছে- অ্যাকোয়াজেনিক আর্টিসারিয়া। মনে হতেই পারে পানি না খেয়ে, স্নান না করে এই সব উপসর্গ নিয়ে রেচেল বেঁচে আছেন কী করে! যেখানে মানবদেহের ৬০ শতাংশই পানি, এক জন প্রমাণ আকৃতির ৭০ কেজি ওজনের প্রাপ্তবয়স্কের শরীরে অন্তত ৪০ লিটার পানি থাকে, সেখানে রেচেলের পানিতে অ্যালার্জি হয় কী করে? রেচেলের চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, শরীরে সঞ্চিত পানি এখানে সমস্যা নয়। সমস্যা হয় তখন, যখন সেই পানি ত্বকের সংস্পর্শে আসে বা যখন বাইরে থেকে শরীরে পানি প্রবেশ করে। এই পানি যদি নিজের শরীর নিসৃত হয়, তাতেও সমস্যা হয়। রেচেলের চিকিৎসা করতে গিয়ে চিকিৎসকরা দেখেছেন একাধিক বার পরিশোধন করা পানিতেও কোনও লাভ হচ্ছে না। তাতেও একই প্রতিক্রিয়া হচ্ছে তার শরীরে।

রোগ থেকে মুক্তি পাবেন না ভেবে হতাশই হয়ে পড়েছিলেন রেচেল। তাকে মানসিক জোর জুগিয়েছেন তার স্বামী। যিনি দীর্ঘ দিন রেচেলের দেখাশোনা করেছেন। পানিতের বদলে এখন দুধ খান রেচেল। তাতে তার যন্ত্রণা কিছুটা লাঘব হয়েছে। কিন্তু সমাধান হয়নি। কোনও দিন যদি সত্যিই তার রোগের চিকিৎসা সম্ভব হয়, তখন কী করবেন রেচেল? জানতে চাওয়া হয়েছিল তার কাছে। রেচেল বলেছেন, ‘আমি প্রথমে সমুদ্রে যাব। আর বৃষ্টিতে ভিজব প্রাণ ভরে।’ সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন