যে সময়ে সারাদেশের করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে, ঠিক সেই সময়ে সারাদেশের সুনির্দিষ্ট উপজেলায় চলছে নির্বাচনী প্রচারণা। মিছিল, মিটিং, গনসংযোগ, পোস্টারিং, মাইকিং ও উঠান বৈঠক থেকে শুরু করে কোনো কিছুই বাদ পড়ছে প্রচারণা থেকে।
ইউপি চেয়ারম্যানপ্রার্থীদের পাশাপাশি সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার ও মেম্বারদের মধ্যেও দেখা যাচ্ছে এমন তৎপরতা। ৭ম ধাপের নির্বাচনে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার নানা ইউপিতে এসব তৎপরতা লক্ষ করা যায়।
বুধবার উপজেলার বাকশীমূল ইউনিয়নে বিট পুলিশের উদ্যোগে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। সেজন্য নির্বাচনী এলাকায় বহিরাগতদের প্রবেশ করার সুযোগ বন্ধ করে দিচ্ছি। ডিএসবির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আফজাল হোসেন আরও বলেন, এবার আসন্ন ইউনিয়ন নির্বাচন হবে শতভাগ সুষ্ঠু ও সহিংসতা মুক্ত। নির্বাচনের আগে বহিরাগত ও আত্মীয় স্বজনকে দাওয়াত দিবেন না। প্রার্থীরা এক কেন্দ্রে বারবার ঘুরতে পারিবে না। মোটরসাইকেল নিয়ে শো-ডাউন দিবেন না প্রার্থীরা। আপনারা জনগণের মন জয় করে বিজয়ী হতে হবে। অন্য কোনো চিন্তা করে থাকলে মন থেকে মুছে ফেলুন। ২৬ জানুয়ারি বিকেলে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বাকশীমূল ও রাজাপুর ইউনিয়নের সকল মেম্বার, চেয়ারম্যান প্রার্থী ও সাধারন জনতাকে নিয়ে ফকিরবাজার এবং শংকুচাইল বাজারে বিট পুলিশিং সভা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, এ নির্বাচনকে ঘিরে কোনো হানাহানি ও মারামরি দেখতে চাই না। আপনারা সুষ্ঠু চান, আমারও সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। তবে আপনাদের মধ্যে যারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবেন, তাদের জন্য আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং কারাগারে পাঠানো হবে। পুলিশের পাশাপাশি র্যাব, বিজিবি, নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেট এর সমন্বয়ে নির্বাচন দায়িত্ব পালন করবে। বিট পুলিশিং সভায় বুড়িচং থানার ওসি আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বুড়িচং থানার তদন্ত ওসি মোঃ মাকসুদ আলম।এসআই মোঃ শরীফুল ইসলামের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বাকশীমূল ইউনিয়নের বিট পুলিশিং দায়িত্বরত কর্মকর্তা এস আই বিনোদ দস্তিদার, সহকারি কর্মকর্তা এ এস আই অহিদ উল্লাহ্, রাজাপুর ইউনিয়নের বিট পুলিশিং দায়িত্বরত কর্মকর্তা এসআই মোঃ নয়ন, এ এস আই মোঃ শাহ্ জালাল মজুমদারসহ অন্যান্য কর্মকর্তাগণ।
এদিকে বুড়িচং সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানপ্রার্থী জাকির হোসেন এই প্রতিবেদককে জানান, সরকার বিধিনিষেধ আরোপ করায় আমরা যতটা সম্ভব স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রচারণা চালাচ্ছি এবং মানুষ যদি নিজের ভোট দিতে পারে, আমার (আনারস প্রতীক)ইনশায়াল্লাহ পাস করবে। এই ইউপিতে নৌকা প্র্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন ইঞ্জিনিয়ার জয়নাল আবেদীন এবং চশমা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন মো. রফিকুল ইসলাম ভুইয়া। জয়ের ব্যাপারে তারাও অত্যন্ত আশাবাদী।
ষোলনল ইউনিয়নের চেয়ারম্যানপ্রার্থী যুবলীগ নেতা হাজী বিল্লাল হোসেন জানান, সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মেনেই আমরা প্রচারণা চালাচ্ছি। এই ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন সদ্যবিদায়ী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ও ঘোড়া প্রতীক নিয়ে নিরবাচন করছেন সাবেক চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেন।
ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, একজন নৌকাপ্রতীক পেলেও বিদ্রোহী প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকায় ভোটের মাঠে ‘নৌকা যে পাবে, সে-ই পাস’ এমন সরল সমীকরণ ভেস্তে যেতে শুরু করেছে।বুড়িচংয়ের পাশের উপজেলা ব্রাহ্মণপাড়ার নির্বাচনী ফলাফলে তার প্রমাণও মিলেছে।এখন শক্তিশালীভাবে আরও যোগ হয়েছে গ্রাম ও ওয়ার্ডভিত্তিক একতার প্রসঙ্গটি। কেউ কেউ আবার আর্থিক লেনদেন ও প্রভাব প্রতিপত্তি খাটানোর বিষয়টিও নাম প্রকাশ না করার শর্তে তুলে ধরেছেন এই প্রতিবেদকের কাছে। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ছাড় দেয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। জেলা পুলিশের বক্তব্য থেকেও ওঠে আসে সরল সমীকরণ হিসেবে আর্থিক লেনদেন ও প্রভাব প্রতিপত্তি খাটানোর বিষয়টিও ভেস্তে যাবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন