মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ সম্মেলনে গবেষকরা : দেশে স্ট্রোক রোগীদের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা অপ্রতুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ জানুয়ারি, ২০২২, ৬:১৯ পিএম

মৃত্যুর একটি প্রধান কারণ হলেও দেশে স্ট্রোক রোগীদের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা অপ্রতুল। ঢাকায় মাত্র দুইটি সরকারি ও পাঁচটি বেসরকারি হাসপাতালে স্ট্রোক ব্যবস্থাপনার সুবিধা রয়েছে। স্ট্রোকে মৃত্যু ও পঙ্গুত্ব কমাতে সারা দেশে এই সুবিধা চালু করার তাগিদ বিশেষজ্ঞদের।

শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) প্রথম জাতীয় অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ সম্মেলনের সমাপনী দিনে গবেষকরা এই চিত্র তুলে ধরেন। ঢাকার প্যান প্যাসেফিক সোনারগাও হোটেলে ২৬ জানুয়ারি শুরু হওয়া এ সম্মেলন আজ শেষ হচ্ছে। বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামসহ ৩০ টি দেশি বিদেশি প্রতিষ্ঠানে এ সম্মেলনের আয়োজন করেছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সুভাষ কান্তি বাংলাদেশে স্ট্রোক রোগীর চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার বাধাগুলো নিয়ে গবেষণা করেছেন। সম্মেলনের সমাপনী দিনে তিনি গবেষণা তথ্য তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশে মৃত্যুর একটি প্রধান কারণ স্ট্রোক। বেশিরভাগ স্ট্রোক (প্রায় ৮৫ শতাংশ) ইস্কেমিক এবং এটি একটি জরুরি চিকিৎসার আওতাভুক্ত রোগ।

আধুনিক চিকিৎসার মাধ্যমে ইস্কেমিক স্ট্রোক ব্যবস্থাপনার দ্রুত উন্নতি হচ্ছে কিন্তু ঢাকায় মাত্র ২টি সরকারি ও ৫টি বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে যেখানে স্ট্রোক ব্যবস্থাপনার সুবিধা পাওয়া যায়। তাই স্ট্রোক থেকে মৃত্যু ও পঙ্গুত্ব কমাতে সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্ট্রোক ব্যবস্থাপনা সুবিধা চালু করা উচিত।

এই পর্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফারিয়া হাসিন জানান, বিএসএমএমইউ’র প্যালিয়াটিভ কেয়ার টিমের ১০৪ জন রোগী ও ২৪ জন সদস্যের উপর চালানো একটি গবেষনা চলানো হয়। এখানে বেশিরভাগই ছিল বিবাহিত মহিলা, যাদের মধ্যে অধিকাংশই ছিল ক্যান্সার রোগী এবং তাদের প্রধান লক্ষণ ছিল ব্যথা। যদিও সেবাদানকারীরা ছিল প্রশিক্ষিত ও অনুপ্রাণিত, তবুও তারা বিভিন্ন মনোসামাজিক ও আধ্যাত্মিক সেবাদানের ব্যাপারে বাধাগ্রস্থ হয়।

‘হোম-বেসড প্যালিয়াটিভ কেয়ার’ রোগীরা খুব ভালোভাবে গ্রহণ করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, তারা এই সেবায় অনেক বেশি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। এই সেবাকে ত্বরান্বিত ও প্রসার ঘটাতে আরও বেশি লিঙ্গভিত্তিক সেবা দিতে হবে এবং জনবল ও উপকরণ বাড়াতে হবে। সচেতনতা বাড়াতে হবে এবং সেবাদানকারীদের মনো-সামাজিক ও আত্মীক সেবাদানের দক্ষতা বাড়াতে হবে।

সীমিত সম্পদ অবস্থায় ডায়াবেটিস রোগীর ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিএসএমএমইউ’র এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শাহজাদা সেলিম গবেষণায় দেখেন, উন্নয়নশীল দেশের জন্য টাইপ-১ ও টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগের ব্যবস্থাপনা একটি বড় বাঁধা। এর কারণ হিসেবে দেখা যায় অনেক উন্নয়নশীল দেশেই অল্প কিছু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ব্যক্তি রয়েছে যারা ডায়াবেটিস ও এন্ড্রোক্রাইনোলজি বিষয়ে অভিজ্ঞ। একই সঙ্গে বাস্তবতা এটাও, মুখে খাওয়ার ওষুধের স্বল্পতা, ইনসুলিন, ইঞ্জেকশন ডিভাইস নিজে নিজে ব্লাড সুগার পর্যবেক্ষণেরও ঘাটতি রয়েছে। রোগীর যদি ইনসুলিন বা ইনজেকশন কেনার সামর্থ্য না থাকে তবে টাইপ-১ ডায়াবেটিস মৃত্যুরও কারণ হতে পারে। মধ্য এবং নি¤œ আয়ের দেশগুলোতে জনসংখ্যা, জীবনযাপন প্রণালী ও খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ডায়াবেটিস রোগীর বোঝা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা কিনা ২০০০ সালে বৈশ্বিক রোগীর ৬৭ শতাংশ ছিল এবং ধারণা করা হচ্ছে ২০৩০ সালের মধ্যে তা ৭৮ শতাংশে উন্নীত হবে। উন্নয়নশীল দেশগুলোর এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য দক্ষ চিকিৎসক, প্রশিক্ষিত নার্সের সংখ্যা বৃদ্ধি ও একটি আদর্শ ব্যবস্থাপনার দিক নির্দেশনা অনুসরণ করা যেতে পারে। এ সেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএসএমএমইউ’র ভিসি প্রফেসর ডা. মো শারফুদ্দিন আহমেদ। সভাপতিত্ব করেন বিএসএমএমইউ’র নিউরোলজি বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. আবু নাসের রিজভী।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন