শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

হাবীবুর রহমানের মৃত্যু নিয়ে দ্রুত তদন্ত হওয়া উচিত

স্মরণ সভায় হানিফ আমার ছেলের মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত চাই হাবিবের বাবা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০২ এএম

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও দৈনিক সময়ের আলোর সিনিয়র রিপোর্টার হাবীবুর রহমানের অকাল মৃত্যুর ঘটনাটি অবিলম্বে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত কারণ তুলে ধরার দাবি জানিয়েছেন তার সাংবাদিক সহকর্মী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও পরিবারের সদস্যরা।
গতকাল শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির আয়োজিত এক শোকসভায় তারা বলেন, হাবীবের মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। সে আসলেই সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে, নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছে, সেটা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এটা হত্যাকাণ্ড। সে কীভাবে মারা গেছে, তা আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে খুঁজে বের করতে হবে। ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো ময়না তদন্ত রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি। তদন্তকারি সংস্থা কোনো সাংবাদিক সংগঠন বা তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেনি।
ডিআরইউ সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম হাসিবের সঞ্চালনায় ডিআরইউ নসরুল হামিদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত শোকসভায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ ও দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াও এ দাবি জানান। উল্লেখ্য, হাবীবুর রহমান দীর্ঘদিন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ বিট কাভার করতেন।
শোকসভায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, হাবীবুর রহমান প্রতিভাবান সাংবাদিক ছিলেন। তার মতো সদালাপি ছেলে অকালে মারা যাবে তা মেনে নেয়া যায় না। তাকে নিয়ে শোকসভা করতে হবে কখনো ভাবিনি। ১২-১৩ বছর ধরে তার সাথে যোগাযোগ। প্রায় প্রতিদিন সংবাদ বা কোনো ঘটনার প্রতিক্রিয়ার জন্য ফোন করত।
সাংবাদিক ও হাবীবের পরিবারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা হতাশ হবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময় সাংবাদিকবান্ধব। তিনি সময় পেলেই সাংবাদিকদের সাথে বসেন। প্রধানমন্ত্রী থাকতে হতাশ হওয়ার কারণ নেই। যতদ্রুত সম্ভব আমরা হাবীবের স্ত্রী ও ভাইয়ের চাকরির ব্যবস্থা করার চেষ্টা করব। একই সঙ্গে হাবীবের পরিবার যাতে দ্রুত আর্থিক সহায়তা পায় সেই ব্যাপারেও তিনি সবাইকে আশ্বস্ত করেন। হাবীবুর রহমানের মৃত্যু নিয়ে তদন্তটা দ্রুত হওয়া উচিত। আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলব। তারা যেন ঘটনাটি দ্রুত তদন্ত করে বিষয়টি বের করেন।
ডিআরইউ সভাপতি বলেন, ১০ দিন হয়ে গেল, যারা তদন্ত করছেন এখন পর্যন্ত কেউ আমাদের বা পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেনি। হাবীবের মৃত্যুটা কীভাবে হয়েছে, তদন্তের মাধ্যেমে আমরা তা জানতে চাই। ঘটনার আইনি সমাধান চাই।
শোকসভায় হাবীবুর রহমানের বাবা মো. পেয়ারা বলেন, আমার বলার ভাষা নেই। আপনাদের সাথে চলার পথে আমার ছেলে কোনো বেয়াদবি করে থাকলে মাফ করবেন। বাবা হয়ে ছেলে লাশ কাঁধে নেওয়া যে কি বেদনা এটা বলে বুঝানো যাবে না। আমি মনে করি না সে অ্যাক্সিডেন্ট করেছে, তাকে আঘাত করা হয়ে থাকতে পারে। আমার ছেলের মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত চাই। এই বলে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
হাবীবুর রহমানের স্ত্রী হাসি আক্তার রিমি কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, হাবীবের মৃত্যু নিয়ে যে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে, এটা নিয়ে আমার একার পক্ষে কিছু করা সম্ভব না। আপনারা আমার পাশে থাকবেন। হাবীব যে নেই এটা এখনো বিশ্বাস করতে পারি না, হাবীবকে কেউ ভুলে যাবেন না।
এছাড়াও শোকসভায় বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুভাষ চন্দ (বাদল), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল মনসুর আহমেদ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব কে এম শাখাওয়াত মুন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব দীপ আজাদ ও যুগ্ম মহাসচিব শেখ মামুনুর রশীদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ বিট পরিবারের পক্ষ থেকে সাংবাদিক উত্তম চক্রবর্তী ও অমরেশ রায় এবং সময়ের আলো পরিবারের পক্ষ থেকে সিটি এডিটর সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম। ডিআরইউ’র সাবেক সভাপতি শাহজাহান সরদার, শাহেদ চৌধুরী ও মুরসালিন নোমানী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ ও সৈয়দ শুকুর আলী শুভও বক্তব্য রাখেন। উপস্থিত ছিলেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক মসিউর রহমান খান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন