শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বেরিয়ে আসছে থলের বিড়াল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০০ এএম

আওয়ামী লীগের ছায়ায় থেকে এমপি এবং মন্ত্রী হয়ে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে এখন মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি ও জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি। তারা এখন একে অপরের বিরুদ্ধে দালালি, দুর্নীতি, জঙ্গিবাদের অভিযোগ তুলছেন।
জাতীয় সংসদে প্রেসিডেন্টের ভাষণের ওপর আলোচনায় অংশগ্রহণ করে কাজী ফিরোজ রশিদের দেয়া বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বাধীন জাসদ। গতকাল জাসদের এক বিবৃতিতে এই প্রতিবাদ করা হয়।

এতে বলা হয়, গত ২৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে প্রেসিডেন্টের ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় কাজী ফিরোজ রশিদ বলেছেন, “আমাদের হেফাজতে ইসলাম তাদের জঙ্গি বানাইছে ইনু সাহেব (হাসানুল হক ইনু)। আরে জঙ্গি কারে বলে? আন্দোলন তো মানুষেই করে, আন্দোলন সাধারণত ভায়োলেন্সে চলে যায়। তারা জঙ্গি না, জঙ্গি হচ্ছে সশস্ত্র বিপ্লব, যারা করে সরকারকে হটানোর জন্য। যেটা ইনু সাহেবরা করেছিলেন, জাসদ তো ’৭৩ সাল থেকেই ’৭৫ সাল পর্যন্ত এই দেশের হাজার হাজার যুবলীগ, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ কর্মীদের হত্যা করেছে। অনেক পুলিশ ফাঁড়ি তারা দখল করেছে। পুলিশ ফাঁড়ি লুট করেছে। থানা লুট করেছে, ট্রেজারি লুট করেছে। ঈদের জামাতে আমাদের আওয়ামী লীগের এমপিদের হত্যা করেছে দিনের বেলা, ঈদের জামাতে বসে। তারা যদি আরেকটা সংগঠনকে জঙ্গি বলে এটা মানায়! বঙ্গবন্ধুকে এইভাবে নির্মমভাবে হত্যা করার দুঃসাহস কেউ পারত। সমস্ত ক্ষেত্র তারা প্রস্তুত করেছিল। আজকে তারা বলে যে, আমরা কিছু জানি না। জাসদ যদি ক্ষেত্র প্রস্তুত না করত, সেদিন আমি যুবলীগের ঢাকা সিটির প্রধান ছিলাম। সেদিন যদি এ জাসদ ক্ষেত্র প্রস্তুত না করত, তাদের একটা পত্রিকা ছিল ‘গণকণ্ঠ’ সেই পত্রিকা পড়ে দেখেন, সেদিন কি-না বানাইছে আমাদের। চোর-ডাকাত ছাড়া সবকিছু বানাইছে গণকণ্ঠে লিখতে গিয়া। যারা স্বাধীনতার শত্রু ওই মানুষগুলো পড়ত, সমস্ত্র মানুষদের ক্ষিপ্ত করে ফেলেছে জাসদ। আজকে তারা গণতন্ত্রের কথা বলে। আজকে তারা বঙ্গবন্ধুর কথা বলে।”
গতকাল জাসদের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কাজী ফিরোজ রশিদের এই বক্তব্যকে মিথ্যাচার ও জাসদবিরোধী বিদ্বেষ পরিপূর্ণ হিসেবে অবিহিত করা হয়।

হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বাধীন জাসদের দফতর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, কাজী ফিরোজ রশীদ প্রায়শই জাসদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেন এবং মিথ্যাচার ছড়ান। অবশ্য তার বক্তব্যে জাসদের বিরুদ্ধে তার এই বিদ্বেষের কারণ তিনি নিজেই প্রকাশ করেছেন। তিনি নিজে তার থলের বিড়াল বের করেছেন। জাসদের জামাত, হেফাজত, সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ, জঙ্গিবাদবিরোধী জাসদের বলিষ্ঠ অবস্থানই কাজী ফিরোজ রশীদের গাত্রদাহ, জাসদের প্রতি বিদ্বেষের মূল কারণ। তিনি বলেন, কাজী ফিরোজ রশীদ তার নিজের ভাষায় ‘আমাদের হেফাজতে ইসলাম’ বলে প্রমাণ করেছেন তিনি বারবার দল বদল করে, ওপরে ওপরে যেই দলই করেন না কেন, তিনি আসলে হেফাজত, জামাত, সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদী, জঙ্গিবাদীদের পক্ষেরই লোক। তিনি তার এই আসল চেহারা প্রকাশ করে ফেলেছেন।

জাসদের দফতর সম্পাদক বলেন, যে কাজী ফিরোজ রশীদ বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর খুনি মুশতাক, সামরিক শাসক জিয়া ও এরশাদের সাথে হাত মিলিয়ে আখের গোছানোয় ঝাঁপিয়ে পরেছিলেন সেই কাজী ফিরোজ রশীদের বঙ্গবন্ধুর জন্য কান্না-মায়াকান্না ও কপটতা ছাড়া আর কিছুই না। কাজী ফিরোজ রশীদের বঙ্গবন্ধুর প্রতি সামান্য শ্রদ্ধা থাকত তাহলে কাজী ফিরোজ রশীদ বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের বিরোধীতা করে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বুড়িগঙ্গায় ভাসিয়ে দেয়ার প্রকাশ্য হুমকিদাতা হেফাজতের পক্ষে নির্লজ্জ দালালি করতেন না।
জাসদের দফতর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত জাসদ প্রকাশ্যেই ঘোষণা দিয়ে আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু সরকারের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য রাজনৈতিক অবস্থানে ছিল। সেই সময়ে পুলিশ ফাঁড়ি, থানা লুট, ব্যাংক ডাকাতি, পাটের গুদামে আগুণ দেয়া, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হত্যার সাথে জাসদের কোনো পর্যায়ের নেতাকর্মী যুক্ত থাকতেন, তাহলে নিশ্চয়ই তৎকালীন সরকার-প্রশাসন-পুলিশ জাসদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট মামলা দিয়ে আদালতে বিচারের সম্মুখীন করে শাস্তি নিশ্চিত করত। কিন্তু সেই সময়কালে উল্লেখিত অভিযোগে বাংলাদেশের কোনো থানায়ই জাসদের কোনো নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে কোনো মামলাও হয়নি।

জাসদের দফতর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন, কাজী ফিরোজ রশীদের মতো লোকদের জাসদ চোর-ডাকাত বানায়নি। খোদ বঙ্গবন্ধুই কাজী ফিরোজ রশীদের মতো লোকদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের ‘চাটার দল’, ‘চোরের খনি’ বলে আখ্যায়িত করেছিলেন।

কাজী ফিরোজ রশীদকে জাসদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করার আগে আয়নায় নিজের মুখ দেখার পরামর্শ দিয়ে সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ‘চোরের খনি’, ‘চাটার দল’ এর সদস্য এবং বঙ্গবন্ধু হত্যার পর খুনি মুশতাক ও সামরিক শাসক জিয়ার সাথে হাত মিলিয়ে কোন কাজীরা পুরাতন ঢাকা, ধানমন্ডি ঢাকার বিভিন্ন এলাকা এবং গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় হিন্দুদের সম্পত্তি দখল করেছে, কোন মন্টু কাজী ও তার ভাইরা এরশাদের সাথে হাত মিলিয়ে ১৯৮৫-৮৬ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে কোটালিপাড়া, টুঙ্গীপাড়ায় যেতে বাধা দেয়ার অপচেষ্টা চালিয়েছে তা দেশবাসী ভুলেনি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (11)
Md Abul Kalam ৩০ জানুয়ারি, ২০২২, ৫:৪০ এএম says : 0
আরও অনেক কিছু আসবে ইনশাআল্লাহ শুধু সময়ের অপেক্ষা
Total Reply(0)
মুহাম্মদ জিয়াউল ৩০ জানুয়ারি, ২০২২, ৫:৪১ এএম says : 0
আমি ফিরোজ রশীদ সম্পর্কে জানিনা তবে জাসদ সম্পর্কে জানি। বাংলাদেশে হত্যার রাজনীতি চালু করে জাসদ। শুধু ৭৫ এর আগে না ৭৫ সালেও পরেও ৭৮ পর্যন্ত জাসদের ভয়ে কেহো কথা বলতে পারতোনা।জাসদ ছাত্রলীগের কর্মীরা প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে মহরা দিতো। বঙ্গবন্ধু অসহায় হয়ে পরেছিলেন। আর একজন পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা জাসদ নেতা ছিলেন যাকে বিশেষ যায়গায় হত্যা করা হয় (নাম বললাম না) উনি ইনু সিরাজ সাহেব দের কথা প্রধানমন্ত্রী ভুলে গেছেন।
Total Reply(0)
মুহাম্মদ শিহাব উদ্দীন ৩০ জানুয়ারি, ২০২২, ৫:৪২ এএম says : 0
হাসানুল হক ইনু একটা জঙ্গি ও শেখ মুজিবের হত্যাকারী
Total Reply(0)
মোঃ কামরুজ্জামান ৩০ জানুয়ারি, ২০২২, ৫:৪৪ এএম says : 1
গৃহপালিত দলগুলো যতদিন সুবিধা ভোগ করে ততদিন সব ঠিক আছে, সুবিধা শেষ হলেই থলের বিড়াল-শিয়াল সব বের হয়ে আসে।
Total Reply(0)
বিধান কবিরাজ ৩০ জানুয়ারি, ২০২২, ৫:৪৫ এএম says : 0
দেশে রাজনৈতিক সংকট না থাকলে এসব দল ইতিহাস হয়ে থাকতো, আলোচনায় তো দূরের কথা।
Total Reply(0)
ওমর ফারুক ৩০ জানুয়ারি, ২০২২, ৬:৩৪ এএম says : 0
জাসদ .........রা তো জঙ্গি কাকে বলে আর সন্ত্রাস কাকে সেটাই জানেনা ।
Total Reply(0)
Dr.Harun Ur Rashid ৩০ জানুয়ারি, ২০২২, ১০:৩৬ এএম says : 0
Africa te baper porichoi Kom paoa jai.mayer porichoi Vashi paoa jai.
Total Reply(0)
MD najmul Hoque ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১১:৩৩ পিএম says : 0
বিড়ালকে ঘণ্টা বাজাতে দিলে-অসময়ে খেয় হারিয়ে তাল-লয়-ছন্দ এক করে ফেলে। এরা নিজের স্বার্থের জন্য নিজের বাপেরও বলাদগার করতে পারে। বাঙালির সময় এসেছে- কোন্ কুকুরের কোন্ মুগুরের দরকার।
Total Reply(0)
Md. Rajib ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০২ পিএম says : 0
পৃথিবীটা যদি হয় রঙ্গমঞ্চ! তবে বাংলাদেশ তার সদর দফতর। মাটির নিচনে সবচেয়ে বেশী তেল সৌদিতে, আর মাটির উপড়ে সবচেয়ে বেশী তেলবাজ বাংলাদেশে।
Total Reply(0)
fujayel ahmad ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:২২ পিএম says : 0
এই ইনুরাই হলো প্রকৃত দেশ বিরোধী,..................
Total Reply(0)
Hatim ali ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ২:৫৭ পিএম says : 0
ক্ষমতার জন্য এই দেশে প্রতিটি রাজনীতিবিদ যা করে হাসানুল হক ইনু তাই করেছে।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন