জ্বালানি তেলের বিক্রির কমিশন ৭ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধিসহ ৬ দফা দাবিতে আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ধর্মঘটের হুমকি দিয়েছেন পেট্রোল পাম্প মালিকদের একাংশ। গতকাল বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এই হুমকি দেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের মহাসচিব মিজানুর রহমান রতন। তিনি বলেন, আমরা দাবি বাস্তবায়নে ও হরতাল ধর্মঘটে কখনই যেতে চাইনি। আলাপ আলােচনা ও বৈঠকের মাধ্যমে সব সমস্যা সমাধান করতে চেয়েছি। গত ৩ বছর ধরে দাবি-দাওয়া নিয়ে বহু পত্র দিয়েছি ও আলোচনা করেছি, বৈঠক করেছি। অথচ বৈঠক হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু দাবি বাস্তবায়ন করা হয়নি। পরবর্তীতে অ্যাসোসিয়েশনের মতামতকে উপেক্ষা করে একক সিদ্ধান্তে সরকার জ্বালানি তেল ডিজেলের ২০ পয়সা বিক্রয় কমিশন বৃদ্ধি করে। যা জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীদের আশাহত করেছে। তাই আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। আন্দোলন ছাড়া দাবি আদায় সম্ভব নয়। তাই সব জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীদের সিদ্ধান্তক্রমে আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দাবি-দাওয়া বাস্তবায়ন করা না হলে আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে সারাদেশের সব ডিপো থেকে জ্বালানি তেল উত্তোলনে বিরত থাকবে।
তিনি বলেন, বর্তমান কোভিড-১৯ আবির্ভাবের কারণে আমরাও ব্যবসায়িক দিক দিয়ে অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি। এ ছাড়া কোভিড-১৯ এর প্রভাব দিন দিন বেড়েই চলছে এবং দীর্ঘদিন এই সমস্যা থাকবে বলে মনে করছি। তা ছাড়া ইদানিং ফিলিং স্টেশনের ওপর আরোপিত বিভিন্ন সংস্থার অমিমাংসিত লাইসেন্স গ্রহণের ব্যাপারে হয়রানি শুরু হয়েছে। সঙ্গে বিপুল অঙ্কের টাকা (অফিস খরচ হিসেবে) তারা দাবি করছে, যা আমাদের কমিশনের সীমিত আয় দিয়ে প্রদান করা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, ২০১৯ সালের ২ ডিসেম্বর জ্বালানি উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সম্মুখে ঘোষণা করা হয়, দাবিগুলোর একটা সুরাহা হবে। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, আজ পর্যন্ত এই ন্যায়সঙ্গত দাবিগুলোর কোনো বাস্তবায়ন আমরা পাইনি। বিষয়টি প্রায় অমিমাংসিত অবস্থায় থেকে যায়। এর সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে একটি লিখিত চিঠি দেওয়া হয়। সেই চিঠি প্রদানের পর তার কোনো সদুত্তর আমরা আজও পাইনি।
পেট্রোল পাম্প মালিকদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, জ্বালানি তেল বিক্রয়ের প্রচলিত কমিশন কমপক্ষে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ করতে হবে, জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা কমিশন এজেন্ট, যা গেজেট আকারে প্রকাশ করতে হবে, সড়ক ও জনপথ বিভাগ কর্তৃক পেট্রোল পাম্পের প্রবেশ দ্বারের ভূমির জন্য ইজারা গ্রহণের প্রথা বাতিল করতে হবে। কারণ প্রবেশদ্বার ব্যবহারকারীরা অর্থ্যাৎ সকল যানবাহন সরকারের নিয়ম মাফিক কর প্রদান করেন, ট্রেড লাইসেন্স ও বিস্ফোরক লাইসেন্স ব্যতিত অন্য দপ্তর বা প্রতিষ্ঠান থেকে লাইসেন্স গ্রহণের সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে। এছাড়া মালিক কর্তৃক প্রিমিয়াম পরিশোধ স্বাপেক্ষে ট্যাংকলরী শ্রমিকদের ৫ লাখ টাকা দুর্ঘটনা বীমা প্রথা চালু করার জন্য বীমা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ প্রদান করতে হবে। সবশেষ প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি মোতাবেক সব জ্বালানি ডিপো সংলগ্ন ট্যাংকলরী শ্রমিকদের জন্য পর্যাপ্ত শৌচাগার ও বিশ্রামাগার নিশ্চিত করার দাবি জানান তারা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন