বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

গড়বে দুই পাড়ের মানুষের সেতুবন্ধন কমবে ভোগান্তি

উদ্বোধনের অপেক্ষায় মরাগাঙ্গী খালের সেতু

প্রকাশের সময় : ৩ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম


মো. গোলাম ফারুক, দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) থেকে

দুপচাঁচিয়া উপজেলার পৌরসভার শহরতলী মরাগাঙ্গী খালের উপর অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দিত ব্রিজটির নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ। যা এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়। প্রকাশ, উপজেলার এলাকার সীমানা নির্ধারণকারী কোল ঘেঁষে বয়ে যাওয়া আঁকাবাঁকা নাগর নদের পাড়েই দুপচাঁচিয়া থানা (পুলিশ স্টেশন), পৌরসভা ভবন, ভূমি অফিস, মা ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্র, মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় অবস্থিত। উপজেলার বুক চিরে বয়ে গেছে ছোট মরাগাঙ্গী খাল। যা পূর্ব দিকে অবস্থিত নাগর নদের সাথে মিলিত হয়েছে। এই খালটি অনেকটা উপজেলাকে দু’ভাগে ভাগ করেছে। খালের পশ্চিম পাড়ে মানুষকে প্রয়োজনে থানা (পুলিশ স্টেশন), পৌর ভবনসহ বিভিন্ন অফিসে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় দেড় থেকে ২ কিলোমিটার পথ ঘুরে যাতায়াত করে থাকে। খালটির কোল ঘেঁষে অবস্থিত মডেল উচ্চ বিদ্যালয় ও মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাড়ের ছাত্রছাত্রীদের এ ক্ষেত্রে ভোগান্তিও কম নয়। ছাত্রছাত্রীদের দুর্ভোগ কিছুটা লাঘবের জন্য মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আজিম মিস্ত্রী ব্যক্তিগত অর্থায়নে খালের শহরতলী এলাকায় বাঁশের সেতু নির্মাণ করেন। মরাগাঙ্গী খাল দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরের যেন অভিন্ন সত্তা। পৌরবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি এ খালের উপর একটি ব্রিজ বা সেতু নির্মাণের। দুপচাঁচিয়া সিও অফিস থেকে বন্দর তে-মাথা হয়ে তালোড়ার অভিমুখে প্রধান এই সড়কটি এলাকার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র পথ। সড়কটি প্রায়ই যানজটে থমকে থাকে। ফলে যানজট নিরসনের লক্ষ্যে মরাগাঙ্গী খালের উপর ব্রিজ নির্মাণ করে মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের পার্শ্ব দিয়ে বিকল্প সড়ক নির্মাণের গুরুত্ব বাড়তে থাকে। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত পৌরসভা নির্বাচনে মো. বেলাল হোসেন মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর পৌরসভা এলাকার সৌন্দর্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেন। সেই সাথে যানজটমুক্ত পৌরসভা গড়তে এই মরাগাঙ্গী খালের উপর ব্রিজ নির্মাণ করে বিকল্প সড়ক নির্মাণের প্রকল্পও হাতে নেন। ব্রিজটির নির্মাণের পূর্বেই ২০১৫-১৬ অর্থবছরে প্রায় ১৯ লাখ ৮৩ হাজার টাকা ব্যয়ে মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের পার্শ্ব দিয়ে বিকল্প সড়ক নির্মাণ করেন। সড়কটির নির্মাণকাজ প্রায় সম্পন্ন হওয়ার পথে। সড়কটির সংযোগ খালের বাঁশের সেতুটি সরিয়ে ওইস্থানে পৌরসভার অর্থায়নে একই অর্থবছরে প্রায় ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ব্রিজ নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করেন। পৌর এলাকার শহরতলীর মেসার্স স্মৃতি কনস্ট্রাকশন-এর স্বত্বাধিকারী মোমিনুর রহমান তালুকদার পলাশ ঠিকাদার নির্বাচিত হন। চলতি বছরের প্রথম দিকে ব্রিজটির নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনও করা হয়। প্রায় ৫৫ মিটার দৈর্ঘ্য, সাড়ে ৭ ফুট প্রস্থ ব্রিজটির সম্পূর্ণ নির্মাণ কাজে পাথর ব্যবহার করা হয়। ১৮টি পাইলিংয়ের উপর নির্মিত ব্রিজটির অ্যাপাটমিল ওয়াল, এসএস গ্রিলের রেইলিং, ১৪টি বৈদ্যুতিক লাইট পিলারসহ বৈদ্যুতিক সংযোগের কাজ ইতোপূর্বে সম্পন্ন হয়েছে। ব্রিজটিতে যানবাহন নিরাপত্তার জন্য ব্রিজের দু’পার্শ্বে গোল চত্বর করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। দৃষ্টিনন্দিত ব্রিজটির প্রায় ৯০ ভাগ কাজ ইতোপূর্বে সম্পন্ন হয়েছে। যা এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়। অনেক সচেতন পৌরবাসী মনে করেন, দৃষ্টিনন্দিত এই ব্রিজটি উদ্বোধন হলে উপজেলা সদরের শুধু যানজট নিরসনই নয়, ব্রিজটি পৌর এলাকায় বিনোদনের একটি মাধ্যম হিসেবে বিকাশ ঘটবে। এ ব্যাপারে পৌর মেয়র মো. বেলাল হোসেন তার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে গ্রহীত বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকা-ের বিস্তারিত বর্ণনা দেন। তিনি বলেন, মরাগাঙ্গী খালের উপর নির্মিত ব্রিজটি এলাকার যানজট শুধু মুক্তই নয় এলাকার বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে গড়ে তুলতে ব্রিজের পূর্ব পার্শ্বে খাল ঘেঁষে বসার ব্যবস্থাসহ খালের পানিতে পা চালিত নৌকা ভ্রমণের ব্যবস্থা নেবেন। এই ব্রিজটি সাবেক পৌর প্রশাসক মরহুম আব্দুল লতিফের স্মরণে তারই নামকরণ করার সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যে গ্রহণ করেছেন। চলতি মাসের যে কোনো সময় ব্রিজটির উদ্বোধন করে জনগণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করার কথাও বলেন। তিনি আরো বলেন, নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দুপচাঁচিয়া পৌরসভাকে বিশ্বমানের পরিবেশবান্ধব শহর হিসেবে গড়ে তুলতে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যেই পৌরবাসী এর সুফল পেতে শুরু করেছে। পৌরসভায় আবর্জনামুক্ত এবং যানজটমুক্ত শহর গড়ার কার্যক্রমও এগিয়ে চলছে। সততা, নিষ্ঠা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সাথে দায়িত্ব পালন করে দুপচাঁচিয়া পৌরসভাকে সমৃদ্ধ, ক্লিন ও গ্রিন শহর হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি পৌরবাসীর সহযোগিতাও কামনা করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন