দীর্ঘকালের ধারাবাহিকতায় আমাদের চিন্তা-চেতনা ও কাজে-কর্মে যে অপংস্কৃতির বিষ ঢুকে পড়েছে তা সহজেই দূর করা যাবে না। এ বিষাক্ত প্রভাব থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করত হবে। আমাদের সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে যে অসততা ও অপসংস্কৃতি ছড়িয়ে পড়েছে তা রোধ করতে হবে। এজন্য শিক্ষা ক্ষেত্রে ধর্মীয় শিক্ষার সমন্বয় ঘটাতে হবে। যার ফলশ্রুতিতে নৈতিকতা অর্জিত হবে। সাথে সাথে শিক্ষিত সমাজকে সচেতন ও সোচ্চার হতে হবে। সমাজের সর্বস্তরে ইসলামী সংস্কৃতির চর্চা করতে হবে। সর্বোপরি তরুণ-তরুণীদেরকে সচেতন করতে হবে।
ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে ইসলামী সংস্কৃতির ব্যাপক প্রচার ও অনুশীলনের চেষ্টা করতে হবে। ফিল্ম বর্তমানে অশ্লীল, নির্লজ্জ ও নৈতিকতা বিবর্জিত দৃশ্যাবলির প্রদর্শনীর কাজে ব্যবহার হচ্ছে। তা দর্শকদের বিশেষত তরুণ-তরুণীদের মন-মগজ ও চরিত্রের ওপর অত্যন্ত খারাপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে থাকে। এ থেকে ধরা ছোঁয়ার বাইরের বিষয়কে ধরতে বা ছুঁয়ে দেখতে ও অব্যক্ত কল্পনাকে বাস্তবে রূপদান করতে তরুণরা পাগল পারা হয়ে যায়।
অনেকে তাস, দাবা, জুয়াকে বিনোদন মনে করে। আর অনেকে এসব খেলায় মেতে গিয়ে আল্লাহর স্মরণ ও পরকালের কর্ম, শরীয়ত অনুসরণ, ঘর-সংসার ও যাবতীয় দায়-দায়িত্ব ভুলে যায়। তাদের সামনে জীবনের বৃহত্তর লক্ষ্য উদ্দেশ্য উপস্থিত থাকে না। আর যে জাতি এ সমস্ত রোগে আক্রান্ত সে জাতির বর্তমান ও ভবিষ্যত ঝঞ্জাবিক্ষুব্ধ ও সমস্যা সংকুল। অপসংস্কৃতি রোধ কল্পে ইসলামী ব্যবস্থার আলোকে জীবনাচারের নানা পর্যায়ে ইসলামের অনুশাসন ও নৈতিকতার বাস্তব দিকগুলো তুলে ধরতে হবে। আল্লাহ মুমিনদের উদ্দেশ করে বলেন, তোমরা সীমালঙ্ঘন করো না।’
এ সীমা দ্বারা মধ্য পন্থাকে উদ্দেশ্য করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মধ্যমপন্থা অবলম্বন করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। এর থেকে সুষম বিষয়ের উৎপত্তি হয়। এ দুনিয়ার সংস্কৃতির লক্ষ্য হবে সুষম বিষয় বা সৌন্দর্যের সৃষ্টি। মহান আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, আল্লাহ তোমাদের জন্য পছন্দনীয় বস্তু হালাল করেছেন এবং অপছন্দনীয় বস্তু হারাম করেছেন। তাই আজ পৃথিবীতে অপসংস্কৃতির স্রোত বয়ে যাচ্ছে। সেই স্রোতে আমরা যেন ভেসে না যাই। তাহলে আমাদের দুনিয়া এবং আখিরাত দুটোই ব্যর্থ হবে।
আমরা তো মুসলমান আমাদের সামনে রয়েছে আখিরাত। এ জীবনের সকল কাজকর্মের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলার নিকট জবাবদিহি করতে হবে। কোরআন মজীদে আছে, যে কণা পরিমাণ নেক আমল করে সে তা দেখতে পাবে এবং যে কণা পরিমাণ বদ আমল করে সেও তা দেখতে পাবে।’ তাই জীবনের সকল ক্ষেত্রে মন্দ কাজ থেকে দূরে থাকা আমাদের কর্তব্য। অপসংস্কৃতির বেড়াজাল ছিন্ন করে আমরা যেন যথার্থ ইসলামী আদর্শে উজ্জীবিত হই এবং জীবনের সকল ক্ষেত্রে তা অনুসরণ করি। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে তাওফীক দান করুন। আমীন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন