ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতা : ঝিনাইদহে থানা হাজতে ২২ ঘণ্টা আটকে রেখে জাহাঙ্গীর আলম (২৩) নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে বাঁশকল দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থানার এএসআই তৌহিদুর রহমান ওই ঢাবি ছাত্রকে নির্যাতন করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় কালীগঞ্জে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ ওই ঢাবি ছাত্রের বাড়ি লোক পাঠিয়ে এখন পেন্ডিং মামলায় ঢুকিয়ে দেয়ার হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতিত ঢাবি ছাত্র জাহাঙ্গীর আলম (২৩) জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার কালীগঞ্জ শহরের কলেজপাড়ার মিরাজুল ইসলামের ছলে। জানা গেছে, গত ২৮ অক্টোবর গভীর রাতে উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামের শ্বশুরবাড়ি থেকে জাহাঙ্গীরকে আটক করেন কালীগঞ্জ থানার এএসআই তৌহিদুর রহমান। আটকের পর থানায় এনে চোখ বেঁধে পায়ের তালুতে মারধর করা হয়। এরপর দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে অধ্যয়নরত ওই ছাত্রকে পায়ে বাঁশকল দেয়া হয় বলেও অভিযোগ করেন তার পরিবার। ছাত্রের পিতা মিরাজুল হক অভিযোগ করে বলেন, তিনি পেশায় হকার। অনেক কষ্টে ছেলেকে লেখাপড়া করাচ্ছেন। তার ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজকল্যাণ বিষয়ের শেষ বর্ষের ছাত্র। সে বাড়িতে বেড়াতে এসে শ্বশুরবাড়িতে গেলে ২৮ অক্টোবর রাতে কোনো কারণ ছাড়াই জাহাঙ্গীরকে আটক করেন এএসআই তৌহিদ। তিনি আরো জানান, থানায় নিয়ে গেলে তারা জানতে পারেন একটি মেয়েলি ঘটনায় তার ছেলেকে আটক করা হয়েছে। কিন্তু সে ঘটনার সাথে জাহাঙ্গীর আদৌ জড়িত নয়। পরে সেখানে তাকে চোখ বেঁধে হাঁটু ও পায়ের তলায় নির্যাতন করা হয়। ঘটনার দিন রাতে তাকে বাঁশকলও দেয় তৌহিদ। আটকের ২২ ঘণ্টা পর জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনো অভিযোগ না পেয়ে ছেড়ে দেয়। ঢাবি ছাত্রের বাবা মিরাজ অভিযোগ করেন, ছেলেকে ছাড়িয়ে নিতে তার কাছ থেকে এএসআই তৌহিদ মোটা অংকের ঘুষ নিয়েছেন। বর্তমানে তিনি ছেলেটিকে ডাক্তার দেখিয়ে চিকিৎসা করাচ্ছেন। ডাক্তাররা দ্রুত এমআরআই করার পরামর্শ দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে তিনি পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), এআইজি সিকিউরিটি সেল, ডিআইজি খুলনা রেঞ্জ খুলনাসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করবেন বলে জানান। বিষয়টি নিয়ে এএসআই তৌহিদুর রহমান প্রথমে ঢাবি ছাত্রকে আটকের কথাটি অস্বীকার করেন। পরে তিনি জানান, একটি মেয়েলি ঘটনায় তাকে আটক করা হয়েছিল। ঘটনার সাথে তার বউ জড়িত। এ জন্য তাকে আটক করা হয়। তবে তাকে কোনো নির্যাতন করা হয়নি। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ জানান, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আমি বুধবার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে জেনেছি। তিনি জানান, এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন