শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

অবশেষে বার্সাকে হারালেন গার্দিওলা

প্রকাশের সময় : ৩ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস ডেস্ক : অবশেষে ষষ্ঠবারের চেষ্টায় বার্সেলোনা গেরো খুলতে পারল ম্যানচেস্টার সিটি। সেটাও আবার পেপ গার্দিওলার হাত ধরে। গার্দিওলা জানতেন কাজটা সহজ হবে না। তবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ইতিহাদে সিটির ৩-১ গোলের জয়টা সহজই মনে হতে পারে। আদতে ম্যাচের চিত্র তেমন ছিল না। তার হাতে গড়া শিষ্য মেসির গোলে এগিয়ে ছিল বার্সাই। কিন্তু এটা ছিল শুরুর আধঘণ্টার গল্প। বার্সারই ভুলে চিত্রনাট্য পাল্টে হয়ে যায় শুধু সিটিময়। জোড়া গোল করে সিটির জয়ে নেতৃত্ব দেন জার্মান মিডফিল্ডার ইকার গনডোয়ান, বাকিটা কেভিনো ডি ব্রুইনের। বার্সার সাথে আগের পাঁচবারের সাক্ষাতে জেতা তো দূরের কথা ড্রও করতে পারেনি সিটি। এই জয়কে তাই সিটির জন্য মাইলফলক হিসেবে দেখছেন গার্দিওলা, ‘এটা এমন সুন্দর এক অর্জন যা একসময় গল্পে রূপ নেবে যে, আমরা বিশ্বের সেরা দলের বিপক্ষে খেলেছিলাম এবং তাদেরকে হারিয়েছিলাম।’
প্রথম লেগে সিটির বিপক্ষে ৪-০ গোলের জয়ে হ্যাটট্রিক করে দলকে নেতৃত্ব দেয়া লিওনেল মেসি পরশু রাতেও পাল্টা আক্রমণ থেকে আসরে ৯০তম গোলের মাধ্যমে এগিয়ে নেন দলকে। রাউল গঞ্জালেজকে টপকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বে সর্বোচ্চ (৫৪) গোলের রেকর্ডও দখলে নেন আর্জেন্টাইন তারকা। দলে আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা, জেরার্ড পিকে, জর্ডি আলবারা না থাকায় তো তাকেই নেতৃত্ব দিতে হত। কিন্তু প্রথমার্ধের শেষ দিকে সার্জিও রবার্তোর ভুলে ম্যাচের দৃশ্যপট পাল্টে যায়। রবার্তোর ভুল পাস থেকে স্কোর বোর্ডে সমতা এনে দেন গনডোয়ান। এরপর আর খেলায় ফিরতে পারেনি সফরকারীরা। সিটিও দুর্দান্ত সব আক্রমণে পুরোপুরি ম্যাচের লাগাম নিয়ে নেয়। দ্বিতীয়ার্ধে আরো গোছালো ফুটবল থেকে জার্মান মিডফিল্ডার নিজের দ্বিতীয় গোল করার আগে দুর্দান্ত ফ্রিকিক থেকে দলকে ২-১ গোলের লিড এনে দেন কেভিনো ডি ব্রুইন। গনডোয়ানের দ্বিতীয় গোল জালে পৌঁছানের আগে অবশ্য আগুয়েরোর হাত স্পর্শ করেছিল। বার্সা গোলরক্ষক টার স্টেগেন রেফারির কাছে আবেদনও করেছিলেন, কিন্তু রেফারির তা চোখ এড়িয়ে যায়।
বার্সা কোচ লুইস এনরিকেও রবার্তের ওই ভুলকেই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট হিসেবেই দেখছেন, ‘আমরা ৪০ মিনিট কোন ভুলভ্রান্তি ছাড়াই দুর্দান্ত ছিলাম কিন্তু এরপর সমতাই আমাদের দুর্দশায় ফেলে দিল। এরপর থেকে আমরা ভুলই করেছি, বস্তুতপক্ষে সিটি আমাদের ভুলের সুযোগ নিয়েছে ও যা হওয়ার ছিল তাই হয়েছে। এখন গ্রুপটা অনেক খোলামেলা হয়ে গেল এবং এখন আমাদের লক্ষ্য বাকি দুই ম্যাচে জয়লাভ করা।’
ফলে নক-আউট পর্বের অপেক্ষাটা একটু বাড়ল কাতালানদের। হেরেও অবশ্য ৯ পয়েন্ট নিয়ে ‘সি’ গ্রুপে শীর্ষেই আছে বার্সা, দুই পয়েন্ট কম নিয়ে তাদের পরেই সিটি। এদিন হারলে পরের রাউন্ড সিটির জন্য বেশ কঠিন হয়ে যেত। গার্দিওলাও জতা জানতেন। এ কারণেই শিষ্যদের কানে এটাকে ‘ফাইনাল’ ম্যাচের তকমা দিয়েছিলেন সাবেক বার্সা কোচ।
বার্সা না পারলেও প্রথম দল হিসেবে আসরের শেষ ষোল নিশ্চিত করেছে আর্সেনাল, প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি), অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ও বায়ার্ন মিউনিখ। লেভান্দোভস্কির জোড়া গোলে পিএসভি আইন্দোভেনকে ২-১ গোলে হারিয়ে সহজেই পরের রাউন্ড নিশ্চিত করে বায়ার্ন। কিন্তু বাকি দলগুলোর অগ্রযাত্রাটা সহজ ছিল না। একমাত্র দল হিসেবে চার ম্যাচ থেকে পূর্ণ ১২ পয়েন্ট নিয়ে নক-আউট পর্ব নিশ্চিত করলেও এজন্য নিজেদের মাঠে গ্রিজম্যানের করা অতিরিক্ত সময়েরও শেষ সময়ের গোল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় ডিয়েগো সিমিওনের দলকে। রাশিয়ান প্রতিপক্ষ রোস্তভের বিপক্ষে তাদের ২-১ গোলের জয়ে বাকি গোলটিও ছিল ফরাসি স্ট্রাইকারের।
বুলগেরিয়ান ক্লাব লুদোগোরেতস রেজগার্ডের বিপক্ষে আর্সেনালের ৩-২ গোলের জয়টা ছিল আরো চমকপ্রদ। ম্যাচের পঞ্চাদশ মিনিটেই প্রতিপক্ষের মাঠে ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে আর্সেন ওয়েঙ্গারের শিষ্যরা। তবে গ্রানিথ ঝাকা ও অলিভার জিরুদের গোলে প্রথমার্ধেই তারা সমতায় ফেরে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে শতচেষ্টাতেও গোলমুখ আবিষ্কার করতে পারছিল না গানাররা। অবশেষে নির্ধারিত সময়ের ৩ মিনিট আগে সেই কাজটি করেন মেসুত ওজিল। ওদিকে বাসেলে পিএসজির ম্যাচও যাচ্ছিল ড্রয়ের দিকে। কিন্তু বেলজিয়ান ডিফেন্ডার টমাস মিউনিয়ার শেষ মিনিটের গোলে (২-১ জয়ে) শেষ ষোল নিশ্চিত হয় ফরাসি চ্যাম্পিয়নদের।

এক নজরে ফল
বেনফিকা ১-০ ডায়নামো কিয়েভ
ম্যান. সিটি ৩-১ বার্সেলোনা
পিএসভি ১-২ বায়ার্ন
বাসেল ১-২ পিএসজি
ম’গ্লাডবাখ ১-১ সেল্টিক
অ্যাট. মাদ্রিদ ২-১ রোস্তভ
লুদোগোরেতস ২-৩ আর্সেনাল

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন