পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন : তাঁর এক নির্দশন এই যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদেরই মধ্য হতে স্ত্রী সৃষ্টি করেছেন। যাতে তোমরা তাদের কাছে গিয়ে শান্তি লাভ করতে পার এবং তিনি তোমাদের পরস্পরের মধ্যে ভালোবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয়ই এর ভেতর নিদর্শন রয়েছে সেইসব লোকের জন্য, যারা চিন্তা-ভাবনা করে। (সূরা রূম : ২১)। বিবাহের তাৎপর্যের প্রতি ইঙ্গিত করার সাথে সাথে এ আয়াতে রয়েছে চিন্তার আহ্বান। চিন্তাশীলমাত্রই উপলব্ধি করতে পারবে যে, বিবাহের ভেতর যেসব উপকারিতা নিহিত তা কেবল বিবাহ দ্বারাই অর্জিত হতে পারে, অন্য কোনো উপায়ে নয়। কাজেই একবার বিবাহ করার পর যখন দাম্পত্য জীবনের সুফল ভোগ করা হয়েছে এবং সেই সুফলভোগে জীবন অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে তখন অন্য রকম জীবনের চিন্তা করা বৃথা। বরং স্ত্রী বা স্বামী বিয়োগের পর পুনর্বিবাহ হচ্ছে আপতিত সব জটিলতা নিরসনের প্রকৃষ্ট উপায়।
বিষয়টি নিয়ে আমরা গভীরভাবে ভাবছি না কিংবা এ ভাবনাকে আমরা সমাজের ভেতর চারিত করতে পারছি না। যে কারণে মানুষ পুনর্বিবাহের বিষয়টাকে স্বাভাবিকভাবে নিচ্ছে না। এ ব্যাপারে সর্বাপেক্ষা কঠিন বাধা ছেলেমেয়ে। মা কিংবা বাবার পুনর্বিবাহকে অধিকাংশ সন্তানই মেনে নিতে পারছে না। সমাজের সর্বস্তরেই এ অবস্থা বিরাজমান। বিখ্যাত এক ব্যক্তির জীবনীগ্রন্থে পড়েছিলাম, মা পুনর্বিবাহ করায় তিনি তার মুখদর্শন করতে রাজি ছিলেন না এবং মৃত্যু পর্যন্ত তা করেননি! বলিহারি তার মাতৃভক্তি! এমন কত পিতাই না আছেন, প্রিয় সন্তানদের প্রবল বাধার মুখে যারা বিবাহের ইচ্ছা ত্যাগে বাধ্য হন। অথচ বিবাহই ছিল তাদের আসল সমাধান। কিন্তু কী করা যাবে।
সন্তান বলে কথা! তাদের ক্ষমতাই আলাদা। অপত্য স্নেহই তাদের সেই ক্ষমতার উৎস আর সেই দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে যত পার তাদের ওপর ছড়ি ঘোরাতে থাক। তারা একটুও চিন্তা করে না বাবার মানসিক অবস্থা কী? কী যাতনার ভেতর তার দিন কাটছে!
সন্তানদের আপত্তির একটা বড় কারণ হলো পিতার সম্পদে অংশীদার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা। কিন্তু ঈমানদারদের তো এই ভয় করা উচিত নয়। সে জানে সম্পদের বিষয়টি নিয়তি নির্ধারিত। প্রত্যেকের কিসমত স্থিরকৃত। একের কিসমতে অন্যে ভাগ বসাতে পারে না। ইরশাদ হয়েছে : এরা কি আপনার প্রতিপালকের করুণা বণ্টন করে? আমিই তাদের মাঝে তাদের জীবিকা বণ্টন করি। পার্থিব জীবনে এবং একজনকে অপরের ওপর মর্যাদায় উন্নীত করি। যাতে একে অপরের দ্বারা কাজ করিয়ে নিতে পারে। এবং তারা যা জমা করে তা থেকে আপনার পালনকর্তার অনুগ্রহ উৎকৃষ্টতর। (সূরা যুখরুফ : ৩২)।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন