শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইসলামী জীবন

নৈতিক চরিত্র সাফল্যের চাবিকাঠি

এহসান বিন মুজাহির | প্রকাশের সময় : ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০৮ এএম

আল্লাহপাকের অসংখ্য অগণিত মাখলুকের মধ্যে মানুষ হল সর্ব শ্র্রেষ্ট মাখলুক (সৃষ্টির সেরা জীব)। মানুষ অন্যান্য প্রানী হতে শ্রেষ্টত্বের গুণে গুনান্বিত হওয়ার পেছনে যে কয়েকটি বৈশিষ্ঠ রয়েছে তম্নধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে উন্নত চরিত্রের অধিকারী হওয়া। তাই আমাদের জানা দরকার, কিসে নৈতিক চরিত্রের জাগ্রত হয়, তখনই সে মানুষ ফেরেশতার চেয়েও মর্যাদাবান হয়ে যায়। আর যখন কুপ্রবৃত্তি কোন ব্যক্তিকে আচ্ছন্ন করে ফেলে, তখন সে শয়তানের দাস হয়ে পশুতুল্য বা পশুর চেয়েও নিকৃষ্ঠ জীবে পরিণত হবে।

আমাদের ভাবতে হবে কুপ্রবৃত্তিগুলো কিসে জাগ্রত হয়। সমাজে শিক্ষিত অশিক্ষিত প্রায় সবাই জানে বা বুঝে যে, উলঙ্গ ছায়াছবি বা যুবক যুবতীদের অবাধ মেলামেশা সম্পন্ন গল্প উপনাস, নগ্ন পত্র পত্রিকা, সর্বোপরি উদোম শরীরে শিল্পী নামের বাইজীদের নৃত্যকলা মানুষের কুপ্রবৃত্তি গুলোকে উত্তেজিত করছে। পক্ষান্তরে মানুষের সুপ্রবৃত্তি গুলোকে জাগ্রত করতে বা সৎ চরিত্রের উম্মেষ ঘটাতে যে বস্তুটি সবচেয়ে বেশী কাজ করে, সেটা হলো ভয়। যদি কোন নাগরিক জানে যে, অবৈধ যৌন সম্পর্ক বা পরকীয়া প্রেমের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড আর এটা শুধু কিতাবে নয়, বরং কার্যপরিণত করা হচ্ছে, তখন সে তাতে জড়াতে অবশ্যই দু:সাহস করবেনা।
এজন্যই ইসলামের আইনে যিনা, হত্যাকান্ড, মদপান, চুরি, ডাকাতি, সন্ত্রাস প্রভৃতিতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিধান রয়েছে। এতে সমাজে অপরাধ কর্ম উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেতে বাধ্য। এর পিছনে কারণ হচ্ছে ভয়। অবশ্য এ ভয় প্রদর্শনের পাশাপাশি এর অনুকুল পরিবেশ তৈরী করাও সরকারের দায়িত্ব। তাই দন্ড আইন প্রবর্তন ও প্রয়োগের পাশাপাশি অপরাধের ছিদ্রপথ বন্ধ করার স্বার্থে অশ্লীল ও নগ্নচিত্রের সিনেমা পত্র পত্রিকা, বই পুস্তক, ধ্বংস করে ফেলতে হবে এবং তা সম্পূর্নরুপে নিষিদ্ধ করতে হবে, পাশ্চাত্যের ধাচে গড়া শিক্ষা মানব চরিত্র বিধবংসী সহশিক্ষা পদ্ধতি বাতিল করে ইসলামী সুশিক্ষা ভিত্তিক সিলেবাস প্রণয়ন করতে হবে প্রকাশ্য রাস্তায়, মাঠে-ঘাটে পার্কে যুবক-যুবতীদের নির্লজ্জ অবাধ বিচরণের অসামাজিক কার্য বন্ধ করতে হবে। যখন কোন সমাজ বা জাতিতে এই আইনের প্রতি যথাযথ আমল না থাকে, তখনই সেখানে নেমে আসে প্রাকৃতিক গজব, দুভিক্ষ, মহামারী, বন্যা, প্লাবন, টনের্ডো, এইডস্, ইত্যাদি। আর পরকালে এর জন্য রয়েছে চরম শাস্তি, কঠোর আজাব। এ অকাট্য বিশ্বাস অন্তরে পোষণ করে চললে, সকল অন্যায় ও অপরাধ থেকে মানুষ বেচে থাকতে পারে। মুমিনদের জন্য সচ্চরিত্রবান হওয়া একটি বিশেষ বৈশিষ্ট তাই মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন: ‘হে মুমিনগন তোমরা আল্লাহকে যথার্থভাবে ভয় কর এবং তোমরা প্রকৃত মুসলমান না হয়ে মরো না’।
বলাবাহুল্য আমাদের সমাজ ব্যবস্থার আইনের পাশাপাশি যে ভয় মানুষের মধ্যে শুদ্ধতা আনয়ণে সার্বক্ষনিক কাজ করবে, সেটা হলো পরলৌকিক জীবনে বিচারের ভয় বা আল্লাহভীতি।
এই আল্লাহভীতি মানুষের মধ্যে সদা জাগ্রত থাকলে সে কোন প্রকার দুর্নিতি বা পাপ কাজে লিপ্ত হতে পারে না। মানুষের মনে তথা সমাজে এই আল্লহভীতি প্রতিষ্ঠিত করতে পারলেই সমাজকে অপরাধমুক্ত সুন্দর সমাজরূপে গড়ে তোলা সম্ভব।
মহান আল্লাহ ও আখিরাতের ভয় মানুষের মনে জাগ্রত করার জন্য মানুষকে দ্বীন পালনে অভ্যস্থ করে তোলা অপরিহার্য। দ্বীনদার ইসলামী জ্ঞানবান মুসলমান-ই আল্লাহভীরু ও মুত্তাকী হয়ে থাকে। সে জন্য দ্বীনি শিক্ষার ব্যাপক বিস্তার ঘটানো জরুরী। যদি আমরা উন্নত চরিত্রবান আদর্শ সমাজ চাই তাহলে আমাদের এছাড়া বিকল্প কোন পথ নেই। তাই সমাজে উন্নত চরিত্র প্রতিষ্ঠার ইসলামের বিধি-বিধানের প্রতিপালনে ও খোদাভীরুতার শিক্ষার সর্বত্র প্রসার ঘটানো আমাদের কর্তব্য।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন