ইনকিলাব ডেস্ক : আর্টিকেল ফিফটি’র লেখক জন কার বলেছেন যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ই ইউ) ত্যাগের আলোচনা শুরু হওয়ার পরও যুক্তরাজ্য ব্রেক্সিট পরিহার ও ই ইউতে থেকে যাওয়া বেছে নিতে পারে। খবর স্নাপ্পা। তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য এখনো আইনগতভাবে ব্রেক্সিট পরিত্যাগ করা বেছে নিতে পারে।
লিসবন চুক্তির আর্টিকেল ফিফটি’র লেখক স্কটিশ পার্লামেন্টের নিরপেক্ষ সদস্য জন কার গণভোট বিষয়ে পার্লামেন্ট বা জনগণের আর কোনো বক্তব্য থাকলে তা দেয়ার পুনরায় আহ্বান জানান। লর্ড কার বিবিসিকে বলেন, এটা প্রত্যাহার করা অসম্ভব নয়Ñ এ প্রক্রিয়া চলার সময়ও আপনি আপনার মন পরিবর্তন করতে পারেন। এ সময় কোন দেশ যদি সিদ্ধান্ত নেয় যে আসলে আমরা মোটেই পরিত্যাগ করতে চাই না, প্রত্যেকেই এ ব্যাপারে সময় নষ্ট করার জন্য বিরক্ত হবে, তারা একটি রাজনৈতিক মূল্য আদায়ের চেষ্টা করবে, কিন্তু আইনত তারা আপনার পরিত্যাগের জন্য জোরাজুরি করতে পারে না। ব্রেক্সিটের পর যুক্তরাজ্যকে জাতিসংঘে নতুন মিত্র সন্ধান করতে হবে বলে সদস্যরা মন্তব্য করার প্রেক্ষিতে লর্ড কার এ মন্তব্য করেন। সাবেক ফরেন অফিস মন্ত্রী গিল্ডফোর্ডের লর্ড হাওয়েল বলেন, ই ইউ ত্যাগ করার পর যুক্তরাজ্যের পুরনো সম্পর্ক পুনরুজ্জীবন ও শক্তিশালী নতুন জোট তৈরি প্রয়োজন হবে।
দি লর্ডস আন্তর্জাতিক সম্পর্ক কমিটি বলেছে, ব্রেক্সিটের ফলে জাতিসংঘে যুক্তরাজ্যের কার্যক্রম পরিচালনা পদ্ধতি পুনর্বিবেচনা করতে হবে, তবে সাবেক ই ইউ সহযোগীদের সাথে তার ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চাওয়া অব্যাহত রাখা উচিত। আন্তঃদলীয় কমিটি বলেছে, যুক্তরাজ্যের এ কথা মনে রেখে ই ইউ ত্যাগের আলোচনা করা উচিত যে আন্তর্জাতিক সংস্থায় আমাদের অন্যতম শক্তিশালী মিত্র হবে ই ইউ। সুতরাং ব্রেক্সিট আলোচনার অংশ হিসেবে ই ইউ ও জাতিসংঘের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা অব্যাহত রাখতে কার্যকর পন্থা প্রতিষ্ঠা যুক্তরাজ্যের লক্ষ্য হওয়া উচিত।
একই সঙ্গে জোট সম্প্রসারিত করতে জোটকে সুবিধা দিতে ও জাতিসংঘে অন্যান্য আঞ্চলিক জোটগুলোকে প্রভাবিত করতে যুক্তরাজ্যকে সৃষ্টিশীলভাবে নতুন সুযোগ ও পন্থা বিবেচনা করতে হবে। এর মধ্যে কমনওয়েলথ মিত্রদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে যদিও তারা জাতিসংঘে একক কার্যকর জোট হিনেবে কাজ নাও করতে পারে।
ব্রেক্সিট বিষয়ে যুক্তরাজ্য হাইকোর্টের রুল
ব্রেক্সিট নিয়ে হাইকোর্টে আইনী লড়াইয়ে হেরে গেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে। তার বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে কোর্ট। কোর্ট বলেছে, নিজস্ব ক্ষমতাবলে বা নির্বাহী ক্ষমতাবলে ব্রেক্সিট কর্মকা- শুরু করতে পারবেন না তেরেসা মে। পারবেন না অনুচ্ছেদ ৫০ সক্রিয় করতে। এ নিয়ে অগ্রসর হতে হলে তাকে অবশ্যই হাউজ অব কমন্সের অনুমোদন নিতে হবে।
হাউজ অব কমন্সে এ বিষয়ের ওপর ভোট দেবেন এমপিরা। সেখানে অনুমোদন পেলেই তিনি লিসবন চুক্তির অনুচ্ছেদ ৫০ সক্রিয় করতে পারবেন। আর এর মধ্য দিয়েই ব্রিটেনের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। এ রায়কে ঐতিহাসিক বলে বর্ণনা করেছে ব্রিটিশ মিডিয়াগুলো।
সরকারের বিরুদ্ধে এমন রায় দিয়েছেন লর্ড প্রধান বিচারপতি টমাস। বিচারক এ রায় দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে এর বিরুদ্ধে আপীল করেছে সরকার। ফলে এ বিষয়ে ডিসেম্বরের শুরুর দিকে নতুন করে সিদ্ধান্ত দেবেন সুপ্রিম কোর্ট। সে জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে দু’পক্ষই। তেরেসা মে সরকারের কি নিজস্ব ক্ষমতাবলে ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া শুরু করার অধিকার আছে কিনা এ বিষয়ে আদালতে মামলা করেন দু’ব্যবসায়ী নারী গিনা মিলার ও হেয়ারড্রেসার দিয়ের ডোস সান্তোস। তারা দু’জনেই ব্রিটিশ নাগরিক। সূত্র : ওয়েবসাইট।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন